ভাতিজিকে আটকে রেখে দেহব্যবসা
চাকরি দেয়ার কথা বলে আপন ভাইয়ের (ফুফু-ফুফা) মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে যৌনপল্লিতে দুই লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করে নির্যাতনের শিকার ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণী।
অভিযুক্তরা হলো— বাদীর ফুফু নূপুর বেগম, ফুফা নজরুল ইসলাম এবং বন্দর থানাধীন নরকাঠী এলাকার সোহেল খান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান।
-
আরও পড়ুন... বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ১৪ মাস আগে তার বিয়ে হয়। পারিবারিক কারণে স্বামীর সঙ্গে বিরোধের জেরে বিয়ের দুই মাস পর বাদী স্বামীর বাড়ি থেকে বরিশাল বন্দর থানাধীন নরকাঠী এলাকায় বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ফুফু নূপুর বেগম ওই তরুণীকে ঢাকায় চাকরি দেওয়ার কথা বলেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই তরুণী তার ফুফু, ফুফা ও চাচার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা তা আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছি। মামলা তদন্ত সাপেক্ষে এর সঙ্গে আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই তরুণী অভিযোগ করে বলেন, চাকরির কথা বলে ঢাকায় নিলেও সেখানে গিয়ে দেখি, অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অনেক ছেলে-মেয়ে বাসায় আসা যাওয়া করে। কয়েকদিন পর ফুফু ও ফুফা মিলে আমাকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করেন। আমি তাতে বাধা দিলে তারা মারধর করেন। গলা চেপে, মাথা দেয়ালের সঙ্গে আঘাত করে নির্যাতন চালায়।
এভাবে দীর্ঘ পাঁচ মাস সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায়। তখন মা-বাবার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে দিত না। যদিও বলতে দিত তাহলে তাদের শেখানো কথা বলতে হতো। সারাক্ষণ ফুফু পাশে থাকতেন।
চার মাস আগে তাকে অন্য আরেকজনের কাছে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। সেখানে কিছু দিন থাকার পর এক নারীর সহায়তায় পালিয়ে বরিশাল বন্দর থানার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
ওই তরুণীর বাবা বলেন, মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসার পর আমার বোন, জামাই ও ভাই আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। তবে স্থানীয়দের সহায়তায় আমি মুক্তি পাই। আমার ভাই বলে, সাক্ষীকে মেরে ফেলতে হবে। মেয়েকে জীবিত রাখলে আমরা বিচার চাইব। এ জন্য তাকে মেরে ফেলা উচিত। আমার মেয়ের সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে তার কঠিন বিচার চাই।
এমআই/পি
মন্তব্য করুন