শিশু গৃহকর্মীকে আয়রনের ছ্যাঁকা, সিআইডি কর্মকর্তার স্ত্রী আটক

নাটোরে এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে সিআইডি কর্মকর্তা খন্দকার আতিকুর রহমানের স্ত্রী সুমি বেগমকে আটক করা হয়েছে।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনায় নাটোর থানায় সুমি বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী শ্যামলীর মা নার্গিস বেগম।

নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী শ্যামলী (১২) সদর উপজেলার পাইকোরদল গ্রামের মঞ্জিল হোসেনের মেয়ে।

জানা গেছে, বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পরিবারের সঙ্গে শিশু শ্যামলীকে দেখা করাতে নিয়ে যান সুমি। এ সময় শ্যামলীর শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখে আত্বীয়-স্বজন জিজ্ঞাসা করলে সে টানা ৩ বছর ধরে চলা নির্যাতনের কথা তুলে ধরে। এরপরই বিক্ষুব্ধ হয়ে পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী সুমি বেগম এবং শাশুড়ি দিলারা বেগমকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় ৩ বছর আগে ঢাকায় সিআইডি পুলিশে কর্মরত উপপরিদর্শক খন্দকার আতিকুর রহমানের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয় শ্যামলী। পরে থেকে আর তাকে বাবা-মায়ের সঙ্গে আর দেখা করতে দেয়া হয়নি। প্রথম ৮ মাস নিয়মিত বাড়িতে বেতন পাঠানো হলেও পরে আর ঠিকমতো বেতনও দেয়া হয়নি। কাজে যোগ দেয়ার ১ মাস পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গৃহকর্ত্রী সুমি শিশু গৃহকর্মী শ্যামলীকে বকাঝকা ও নির্যাতন শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার শরীরে গরম আয়রন দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়া হয়। এছাড়া প্লাস দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়াও তুলে ফেলা হয়। ভুক্তভোগী শ্যামলীর মাথা ও হাত-পায়ের আঙ্গুলসহ পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী শ্যামলী জানায়, যে কোনও কাজে একটু ভুল করলেই তাকে প্রচুর মারধর করা হতো। জোরে কান্না করলে আরও বেশি মারা হতো। তবে গৃহকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক তাকে মা বলে ডাকতেন এবং নিজের মেয়ের মতো আদর করতেন। এমনকি মারধর করার জন্য স্ত্রীকে বকাঝকাও করতেন।

নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. তারেক জুবায়ের জানান, পুলিশের একটি দল ভুক্তভোগী শিশুকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত সুমি বেগম আটক করেছে। ঘটনার তদন্ত করে যা সামনে আসবে সেভাবেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন সবার জন্য সমান। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।

জিএম