• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘কাজ নাই, খাবার নাই, ঢাকায় থেকে কি আঙুল চুষবো’

টাঙ্গাইল (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০৭ মে ২০২১, ২১:৩১
‘কাজ নাই, খাবার নাই, ঢাকায় থেকে কি আঙুল চুষবো’
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে নানা পন্থায় বাড়ি ফিরছেন মানুষ

আব্দুর রহিম। বয়স পঞ্চাশের ওপরে। বাড়ি বগুড়ায়। গাজীপুরের কোনাবাড়িতে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। সপ্তাহখানেক ধরে কাজ বন্ধ। উপার্জনের টাকায় এ কয়দিন বসে খেতে হয়েছে তাকে। পাননি কোন সহায়তা। ফুরিয়ে আসছিলো কষ্টার্জিত টাকা। কোনাবাড়ি থেকে কয়েক দফা গাড়ি পাল্টিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় পর্যন্ত আসতে তার খরচ হয়েছে ৬শ টাকা। সরকারি নির্দেশনা কথার শোনার সঙ্গে সঙ্গে রাগে বলে উঠলেন, ‘কাজ নাই, খাবার নাই, ঢাকা বসে বসে কি আঙুল চুষবো’।

শুধু রহিম নয়, কাজের উদ্দেশে বের হওয়া তার মতো হাজারো লোকজন বাড়ি ফিরছেন অনেকটাই খালি হাতে। একদিকে কাজ করতে পারছেন না। অন্যদিকে পাননি কোন সহায়তা। তাই পরিবারের লোকজনের কাছেই ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে নানা পন্থায় বাড়ি ফিরছেন মানুষ।

দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় খোলা ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ ছোট ছোট যানবাহনে গাদাগাদি করে বঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হচ্ছেন তারা। কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এতে করে বেড়ে যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।
করোনাভাইরাসের কারণে ঈদে কর্মস্থলে থাকার কথা থাকলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘরমুখো হচ্ছেন মানুষজন।

আন্তঃজেলা পরিবহন বন্ধ থাকায় কয়েক দফা গাড়ি পাল্টিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা। ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলযোগে কয়েকগুন বেশি ভাড়া গাদাগাদি করে বঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হচ্ছেন উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। গেলো ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২১ হাজারেরও অধিক যানবাহন পারাপার হয়েছে। যা থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যার অধিকাংশই ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহন। তবে রাতের আঁধারে চলাচল করছে গণপরিবহন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হানিফ পরিবহনের এক চালক জানান, গাড়ি নিয়ে বের হলে সারাদিন গাড়ি আটকে রাখা হয়। পরে দুই হাজার টাকা দিয়ে রাতে চলাচল করি। আজ চট্টগ্রাম যাব। এখন পর্যন্ত (বেলা তিনটা) ১৫ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছি। আরো কতো লাগবে আল্লাহই জানেন। তিনি আরও বলেন, সেতুর পশ্চিম পাড় গিয়ে দেখেন অনেক গাড়ি আটকে আছে। সন্ধ্যার পর ছাড়বে তাদের।

অভিযোগ রয়েছে, বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজায় এলাকায় কর্তব্যরতরা যেসব ট্রাকগুলোতে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে সেসব ট্রাকের চালকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের সেতু পারাপার হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। আর টাকা না দিলে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, মহাসড়কের ৫৪টি জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে। তারা মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। ট্রাক, পিকআপ ও মোটরসাইকেলে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। যদি এমনটি হয় তাহলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh