• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ইউএনওর হস্তক্ষেপে দুই সন্তান পেলো বাবার স্বীকৃতি

হাতিয়া প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:৪১
স্বীকৃতি×বছর×উপজেলা×বাবা×বাংলাদেশ×
আরটিভি নিউজ

২১বছর বয়সের এক নারী দাঁড়িয়ে আছেন উপজেলা নির্বাহী কমকর্তার কার্যালয়ে। তার কোলে নবজাতক সন্তান। সঙ্গে আছে তিন বছরের এক মেয়ে শিশু। পাশে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে বছর ত্রিশের এক যুবক। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে বসে কাজি সাহেব এই সন্তান দুটির পিতা-মাতার বিয়ে রেজিস্ট্রির জন্য বয়স যাচাই-বাচাই করছেন। সব শেষে স্বামী-স্ত্রী দুইজনের বয়স নিয়মের মধ্যে পড়ায় তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করানো হয়। মুহূর্তে নারীর মুখে দেখা প্রশান্তির হাসি।

এতে করে দীর্ঘদিন পর বাবার স্বীকৃতি পেলো দুই সন্তান। আর স্ত্রীর মর্যাদা পলে রাহেনা আক্তার (২১) নামে এক নারী। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেনের কার্যালয়ে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিয়ে হয় পাঁচ বছর আগে। ইতোমধ্যে দম্পতির দুটি সন্তানও জন্ম দেয় সুন্দরভাবে। চলছিল তাদের সংসার। হঠাৎ পারিবারিক কলহের জের ধরে মা-বাবা দুইজন পৃথক থাকতে শুরু করে। কিন্তু বিয়ের সময় তোলা কোনও ছবি ও বিয়ের রেজিস্ট্রি না থাকায় বাবা তার সন্তান ও স্ত্রীকে অস্বীকার করতে শুরু করে। দীর্ঘ এক বছর ধরে সন্তানদের বাবার পরিচয় ও স্ত্রীর স্বীকৃতি ফিরে পেতে অনেকের কাছে গিয়েছে রাহোনা আক্তার নামে ২১ বছর বয়সের এই নারী। এমনকি দুটি মামলাও করেছে কিন্তু বিয়ের রেজিস্ট্রি না থাকায় মামলায় বেশিদূর এগুতে পারেনি।

এ বিষয়ে রাহেনা বাদী হয়ে সন্তানদের স্বীকৃতি ও স্ত্রীর মর্যাদা পেতে তিন জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন করেন। আবেদন পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাতিয়া থানার সহযোগিতায় স্বামী আরিফকে তার কার্যালয়ে হাজির হতে নির্দেশ দেয়।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আদেশ মোতাবেক উভয়পক্ষ চার জানুয়ারি বিকেলে তার কার্যালয়ে হাজির হয়। এ বিষয়ে দীর্ঘ শুনানির পর রাহেনার স্বামী আরিফের সম্মতিতে তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন, তাদের দুই সন্তান, রাহেনার মা জরিনা বেগম (৫৫), কাজি আব্দুর রহিম, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অনিল চন্দ্র দাস, বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইয়াসিন আরাফাত, হাতিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ উদ্দিন ও রাহেনার স্বামী মো. আরিফ। পরে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টিমুখ করান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

রাহেনা আক্তার হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালিরচর গ্রামের মৃত আবদুর রাজ্জাকের মেয়ে। তার স্বামী মো. আরিফ (৩০) একই এলাকার মৃত নোয়াব আলী সরদারের ছেলে।

এ ব্যাপারে রাহেনা জানান, মামলা করেও স্ত্রীর মর্যাদা পাইনি। আমার সন্তানেরা পাইনি বাবার পরিচয়। আজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন স্যারের হস্তক্ষেপে আমার সন্তানেরা তাদের পিতৃপরিচয় ফিরে পেলো। আমি পেলাম স্ত্রীর মর্যাদা। এরচেয়ে বড় আনন্দের আমার কাছে কিছুই হতে পারে না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন আরটিভি নিউজকে বলেন, আমাদেরকে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করতে হয়। মেয়েটা তার মাকে নিয়ে আমার কাছে আসে তিন জানুয়ারি। আমি সবকিছু শুনে তার স্বামীকে আসতে বলেছি। সে আসার পর তার সঙ্গে আলাপ করে দেখেছি সমস্যা অত জটিল কিছুই না। পরে আমার উপস্থিতিতে তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করে দিয়েছি।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিদ্যুৎ ও গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় টিআইবির উদ্বেগ 
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বহিষ্কার
চলমান তাপপ্রবাহ রেকর্ড ভেঙেছে ৭৬ বছরের
X
Fresh