স্ত্রীকে হাসপাতালে রেখে ব্রহ্মপুত্রে ঝাঁপ দিয়ে স্বামীর মৃত্যু
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্ত্রীকে দেখতে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের বাড়ি থেকে বের হন নূরুল আমীন ওরফে শুক্কুর আলী (৫৫)। হাসপাতালে না গিয়ে ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ থেকে ব্রহ্মপুত্র নদে ঝাঁপ দিয়ে মারা যান তিনি। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। স্ত্রীর অস্ত্রোপচার হয়েছে ময়মনসিংহ নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে।
ময়মনসিংহ ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার আবু জর গিফারী জানান, নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার বাতি শুয়াইব গ্রামের কৃষক শুক্কুর আলী স্ত্রী রহিমা খাতুনকে নিয়ে ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া এলাকার ‘মৌ-শফি’নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করান অস্ত্রোপচারের জন্য। গত বুধবার রহিমা খাতুনের পেটে পাথরের জন্য অস্ত্রোপচার হয়। বৃহস্পতিবার বাড়িতে যান শুক্কুর। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে থাকা স্ত্রীর কাছে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু বেলা ১১টা বেজে গেলেও হাসপাতালে স্ত্রীর কাছে না যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা চিন্তায় পড়েন। পরে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় পরিবারের লোকজনের শঙ্কা শুরু হয়। বেলা ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিস থেকে ফোন করে শুক্কুর আলীর মৃত্যুর খবর জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে নিচে ব্রহ্মপুত্র নদে এক ব্যক্তি ঝাঁপ দেন। এ দৃশ্য দূর থেকে কয়েকজন শিশু দেখে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন খবর দেয় ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের। খবর পেয়ে ময়মনসিংহ ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার আবু জর গিফারীর নেতৃত্বে ডুবুরি দল শুক্কুর আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তাস্তর করে। ওই সময় শুক্কুর আলীর ব্যাগের ভেতর থেকে মুঠোফোন বের করে সিমকার্ড পরিবর্তন করে পরিবারের লোকজনকে খবর জানানো হয়।
নিহতের ভাতিজা আবু কাউসার বলেন, তার চাচার পরিবারে কোনো ধরনের ঝামেলা ছিল না। আর্থিক টানাপোড়েনও ছিল না। তার চাচা ঝাঁপ দিয়েছে না কেউ ফেলে দিয়েছে বুঝতে পারছেন না।
কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই সোহেল রানা জানান, পারিবারিক টানাপোড়েনের কারণে সেতু থেকে ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পি
মন্তব্য করুন