• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নওগাঁর আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি, বাঁধ ভাঙ্গার শঙ্কা

নওগাঁ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০১ অক্টোবর ২০২০, ২২:৪৩
Flood situation among locals
স্থানীয়দের মধ্যে বন্যার প্রস্ততি

নওগাঁর ধামইরহাটের আত্রাই নদীর পানি দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত মানুষের সাথে অসহায়ভাবে দিন কাটছে গবাদি পশুর। টানা বৃষ্টিতে বাঁধ ভাঙ্গার শঙ্কায় গ্রামের অসহায় মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে অনেকটা খোলা আকাশের নিচে। আবহাওয়ার এমন বেখেয়ালিপনায় নদীর পানি বাড়তে রয়েছে আপন গতিতে।

সরে জমিনে দেখা গেছে, সম্প্রতি উজানের ঢলে আত্রাই নদীর পানি উপজেলার শিমুলতলী পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার ৮ নং- খেলনা ইউনিয়নের (রসপুর-সরাইল গুচ্ছগ্রাম) সহ ভগবানপুর, উদয়শ্রীর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এক কোমর থেকে কোথাও কোথাও বাড়ি ঘরের দেয়ালের মাঝ পর্যন্ত বন্যার পানিতে সাধারণ মানুষের সাথে হাবুডুবু খাচ্ছে গৃহপালিত পশু- গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি। ঘরের ভেতরে হাঁটু অবধি পানি থাকায় রান্না করতে না পারায় ছোট শিশুদের নিয়ে পরিবারের লোকজন পড়েছেন নানান রকম বিপাকে ।

রসপুর বাজারের পাশে বন্যা কবলিত গুচ্ছগ্রামবাসি বাড়িঘর ছেড়ে গরু, ছাগল ও শিশুদের নিয়ে বাঁধের উপর খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। অন্যদিকে ঘরের ভেতরে থাকা নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল,তরি-তরকারি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনাহারে কাটছে দিন। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত মানুষদের পাশে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর দাবি জানান ওই এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেগুলেটর থাকায় খুব সহজেই বন্যার পানি ঢুকে পলির আবাদি জমিতে ফলানো ফসল যেমন আমন ধান, কলা, বেগুন, পটল, মুলা, শাকসবজি, শসা, ঝাল, পেঁপে, পেয়ারা, আখসহ প্রায় দুইশত বিঘা জমিতে বন্যার পানিতে ডুবে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি আশেপাশের সকল পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে।

রসপুর গ্রামের মো. আব্দুল হামিদ, নাসির উদ্দিন ও স্থানীয় দুর্গা মন্দিরের সভাপতি অলিভ চন্দ্রদাস বলেন, টানা বর্ষণে ক'দিন ধরে বন্যার পানিতে ভাসছি। আমাদের দুঃখ দুর্দশায় সমবেদনা জানানোর জন্য ও কেউ পাশে আসেনি।
সরাইল গুচ্ছগ্রামের গণেশ মাহিস্বর ও নব মুসলিম শেফালী বেগম এর সঙ্গে দেখা হলে বলেন, বাড়ি ঘরের ভিতরে এক কোমর পানি। ঘরে রাখা খাবার চাল, ডাল, জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। কোন সাহায্য সহযোগিতা না পালে খামোকি।

এ বিষয়ে খেলনা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম বলেন, মেম্বারদের নিয়ে আমি সবসময় খোঁজ খবর রাখছি। কিছু কিছু জায়গায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে বালির বস্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। পিআইও, পৌর মেয়রসহ উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে বন্যার ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছি। বাঁধে যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদের তালিকা করা হবে। টিআর চাল এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই, চাল পেলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইস্রাফিল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা ২৭ তাং উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানসহ অনেককে নিয়ে খেলনা ইউনিয়নের ভগবানপুরসহ দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছি কিন্তু গুচ্ছগ্রামে যাওয়া হয়নি। বাঁধের পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরনো রেগুলেটর লিক করে গুচ্ছগ্রামসহ আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা হয়েছে। রেগুলেটর মেরামত করা আমাদের কাজ নয় এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। আশাকরি খুব শীঘ্রই আমরা ৫ টন চাল বরাদ্দ পাবো। ত্রাণের চাল পেলেই তাদের মাঝে বণ্টন করা হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আজাহার আলী মণ্ডল বলেন, আমরা বন্যা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। বন্যার ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। খুব দ্রুত সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জিএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নওগাঁয় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.২ ডিগ্রি 
সাপাহারে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ আদায়
প্রার্থীর মৃত্যুতে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভোটগ্রহণ স্থগিত
নওগাঁয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
X
Fresh