• ঢাকা বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সোলার প্লান্ট নির্মাণে নষ্ট হবে দুই সহস্রাধিক ফসলী জমি 

নীলফামারী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:১০
Construction, of solar, plants will destroy, rtv news
সবুজ ধান ক্ষেত

দৃষ্টি জুড়ে নয়নকাড়া রোপা আমন ক্ষেত। পূবাল বাতাসে দোল খাচ্ছে সবল সতেজ সবুজ রোপা। আমন ধান ছাড়াও এসব উর্বর জমিতে উৎপাদিত হয় ইরি বোরো, ভুট্টা, আলু, সরিষাসহ রকমারী অর্থকরী ফসল। যা দিয়ে চলে দেড় শতাধিক পরিবারের ভাত, কাপড়, শিক্ষা ও চিকিৎসা। এ জমির ওপরে তারা গড়ে তুলেছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই শান্তির নীড়। তিন ফসলি জমিতে একটি বিদেশি কোম্পানির সোলার প্যানেল প্লান্ট নির্মাণের জমি কেনার হিড়িক পড়ায় দেড়শ’ পরিবারের মাথায় পড়েছে বাজ। এ চিত্র নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর এলাকার।

বাইশপুকুর মৌজার এক হাজার ১৯ হেক্টর জমির মধ্যে ১৮৩ দশমিক ৮২ একর জমিতে একটি সোলার প্যানেল প্লান্ট স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে নরওয়ে ভিত্তিক সোলার প্যানেল কোম্পানি স্কেটেক সোলার। এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় ওই এলাকার কিছু সংখ্যক জমি দালাল এসব তিন ফসলি উর্বর জমি বিক্রি করতে কোমর বেঁধে মাঠে নামে। তারা জমি মালিকদের নানা প্রলোভনে ফেলে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করে। এ অভিনব প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে প্রায় দেড়শ একর জমি তারা ক্রয় করেন। এসব জমির উপর ৬৫ পরিবার যুগ যুগ ধরে বসতভিটা নির্মাণ করে বসবাস করছেন। ওই এলাকায় প্রতিটি বাড়িতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইন বিদ্যমান রয়েছে।

ডিমলা উপজেলা তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম গেলো ১৭ সালের ২৩ মার্চ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নবায়নযোগ্য জ্বালানি অধি শাখার আহ্বায়কের কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। দাখিলকৃত প্রতিবেদনে তিনি বলেন, প্রকল্পভুক্ত ১৮৩ দশমিক ৮২ একর জমি সম্পূর্ণ কাঁশবন ও বালুচর হিসেবে পতিত রয়েছে। যা মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অথচ এসব জমি তিন ফসলি জমি। নেই মাঠের কোনও অস্তিত্ব।

মনোহারা বিল রক্ষা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি কাজী নুরুল আমীন গেলো ছয় ফেব্রুয়ারি নীলফামারী জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিলকৃত অভিযোগে বলেন, বাইশপুকুর মৌজায় এক হাজার ১৯ হেক্টর জমি উর্বর।

ডিমলার বাইশপুকুর এলাকার নুরুল হকের ছেলে রবিউল ইসলাম, আফতার হোসেনের ছেলে জাহিনুর রহমান, ছকমল হোসেনের ছেলে ওসমান আলী, আকবর আলীর ছেলে সফিয়ার রহমানসহ অনেকেই বলেন, ডিমলা উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তার দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে জমির বাস্তব চিত্রের কোনও মিল নেই। তিনি প্রভাবিত হয়ে একটি মিথ্যা ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করে এসব তিন ফসলী জমিকে কাঁশবন ও বালুচরে রুপান্তর করেছেন।

তারা আরও বলেন, এসব জমির ওপর রয়েছে আমাদের বসতভিটা। জমি চাষাবাদ করে চলে আমাদের জীবন-জীবিকা। এসব জমির ওপর সোলার প্যানেল করা হলে আমরা হয়ে পড়বো আশ্রয়হীন। থাকবে না বেঁচে থাকার মতো কোনও অবলম্বন। দিন কাটবে অনাহারে-অর্ধাহারে। বেঁচে থাকার জন্য হয়তো বেছে নিতে হবে ভিক্ষাবৃত্তির মতো ঘৃণ্য পেশা।

এ ব্যাপারে নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী আরটিভি নিউজকে বলেন, আমি সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ডিমলা উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের প্রতিবেদনের সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া যায়নি। এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তীব্র গরমে এসি ছাড়াই ঘর হবে শীতল
নীলফামারীতে মাটি খুঁড়তেই মিলল রাইফেল-মাইন-মর্টারশেল
অটোভ্যানের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে নারীর মৃত্যু
নীলফামারীতে রেললাইনের ক্লিপ খোলার সময় আটক ২
X
Fresh