জামিন পেলো ৯ বছরের খোরশেদ
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের মামলায় ৯ বছরের শিশু খোরশেদ আলম জামিন পেয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে গাইবান্ধার শিশু আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছে। পুলিশি তদন্ত পর্যন্ত ওই জামিন বহাল থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে শিশুটি যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রয়েছে।
অ্যাডভোকেট মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু গাইবান্ধার শিশু আদালতের বিচারক মুরাদ-এ-মওলা সোহেলের আদালতে শিশু খোরশেদ আলমের জামিনের আবেদন করেন। তিনি আদালতকে বলেন, ধর্ষণ মামলার আসামি ৯ বছরের শিশু খোরশেদ আলম পাঁচ বছরের শিশুকে জোর করে ধর্ষণ করার উপযুক্ত বয়সে এখনও পৌঁছায়নি। তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য এ ধরনের মামলার উদ্ভব ঘটেছে। তাছাড়া শিশু আইনে আসামি জামিন পাওয়ার অধিকার রাখে। আদালতের বিচারক জামিন আবেদন শুনানি শেষে শিশু খোরশেদ আলমকে জামিন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, জামিন আবেদনকারি অ্যাডভোকেট মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু।
তিনি বলেন, জামিনের মাধ্যমে আসামিপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। সঠিক তদন্তে আসামিপক্ষ ন্যায় বিচার পাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
কথিত পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এলাকাবসী ও গাইবান্ধার সচেতন মহলের ব্যানারে গেলো শনিবার দুপুরে গাইবান্ধা শহরের এক নম্বর ট্রাফিক মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অভিযুক্ত শিশুর বাবা খাদেমুল ইসলাম বলেন, পারিবারিকভাবে আমাদের হেনস্তা করতে পরিকল্পিতভাবে মামলাটি করা হয়েছিল।
গেলো বৃহস্পতিবার বিকেলে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর কাচারীবাজার এলাকার নুরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া সাঘাটা থানায় একই গ্রামের খাদেমুল ইসলামের ছেলে ৯ বছর তিন মাস বয়সের খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে তার পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গেলো ১২ সেপ্টেম্বর নুরুল ইসলামের পাঁচ বছর বয়সের শিশু কন্যাকে খোরশেদ আলম খেলার কথা বলে ডেকে নিয়ে যাওয়ার সময় একই গ্রামের শুভ (৭) ও নিহাতের (৭) সঙ্গে দেখা হয়। তারা সবাই মিলে কাচারি ঘরের দিকে যায়। এ সময় বৃষ্টি আসলে শুভ ও নিহাত কাচারি ঘরে ঢুকে পড়ে।
অপরদিকে খোরশেদ আলম পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে কাচারি ঘরের পাশে গাটু শেকের নির্মাণাধীন বাড়ির সিঁড়ির নিচে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে তার চিৎকারের পাঁচ বছরের শিশু কন্যার মা ও একই গ্রামের শুভ (৭) ও নিহাত (৭) ঘটনাস্থলে পৌঁছলে খোরশেদ আলম পালিয়ে যায়। ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের কন্যা শিশুটিকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি বা ডাক্তারি পরীক্ষা না করিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার কথা উল্লেখ করা হয়।
নুরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়ার লিখিত অভিযোগ পাওয়া মাত্র কোনও প্রকার তদন্ত ছাড়াই শিশু খোরশেদ আলমকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সাঘাটা থানা পুলিশ। অভিযুক্ত শিশুটি স্থানীয় আলোক বর্তিকা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। গ্রেপ্তারের পরে ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শিশুটিকে গাইবান্ধা আমলি আদালতে পাঠানো হলে আদালতের বিচারক কাজী ফখরুল ইসলাম শিশুটিকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের মাধ্যমে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জেবি
মন্তব্য করুন