• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নিঝুমদ্বীপে অস্বাভাবিক জোয়ারে লোকালয়ে হরিণ

হাতিয়া প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৫ আগস্ট ২০২০, ১২:৫৩
Deer in the locality at an unusual tide in Nijhumdwip
নিঝুমদ্বীপে অস্বাভাবিক জোয়ারে লোকালয়ে হরিণ, ছবি: প্রতিনিধি

বনের মধ্যে ৫ ফুট পানি, কোথাও দাঁড়ানোর জায়গা নেই। জীবন বাঁচাতে কখনো লোকালয়ে, কখনো সাঁতার কেটে অন্য চরে আশ্রয় নিচ্ছে। আবার লোকালয়ে আশ্রয় নিতে গিয়ে কুকুর ও শিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়ে অনেকটা শুন্য হতে চলেছে হাতিয়ার পর্যটন সম্ভাবনাময় নিঝুমদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ হরিণ। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও অমাবশ্যার অস্বাভাবিক জোয়ারে বেড়িবাঁধবিহীন হাতিয়ার বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন নিঝুমদ্বীপ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে বনের মধ্যে উঁচু জায়গা না থাকায় ভেসে গেছে অনেক হরিণ। হরিণসহ নিঝুম দ্বীপের পর্যটন সম্ভাবনাকে বাঁচিয়ে রাখতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।

জানা যায়, নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ৮১ বর্গকিলোমিটারের আয়তনের বিচ্ছিন্ন নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন আইলা, সিডর, আম্পানে ক্ষত-বিক্ষত। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অমাবশ্যা ও পূর্ণিমায় প্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কয়েকদিনে ভরা বর্ষায় ও অমাবশ্যায় হঠাৎ জোয়ারের পানি বেড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে মানুষের মতো বনে বসবাস করা হরিণও বিপাকে পরে।

নিঝুমদ্বীপের বনপ্রহরী বাছির উদ্দিন (৫৫) বলেন, গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ভাসতে ভাসতে হরিণের পাল ছোয়াখালী এলাকা দিয়ে লোকালয়ে বন্দরটিলা-নামার বাজার প্রধান সড়কের উপরে চলে আসে। এসময় অনেক হরিণকে কুকুর ও শিয়ালের আক্রমণের শিকার হতে দেখা যায়। রাতে জোয়ার হলে ও একইভাবে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেওয়া হরিণের পালকে কুকুর ও শিয়ালের আক্রমণের শিকার হতে হয়।

নিঝুমদ্বীপ জাতীয় উদ্যান রক্ষায় গঠিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ডাক্তার বেলাল উদ্দিন জানান, নিঝুমদ্বীপে হরিণের জন্য বনের মধ্যে চৌধুরী ক্যাম্প এলাকায় ১৯৮২ সালে একটি মাটির কিল্লা তৈরি করা হয়। বিভিন্ন সময় প্লাবনে এখন তা অনেকটা সমতলে মিশে গেছে। এটি এখন আর হরিণের আশ্রয়ে কাজে আসে না। বর্তমানে বনের মধ্যে বনবিভাগ থেকে তৈরি কয়েকটি পুকুর ও পুকুরের পাড় ছাড়া অস্বাভাবিক জোয়ারে আশ্রয় নেওয়ার মতো কিছুই নেয়।

নিঝুমদ্বীপ পর্যটন নিয়ে কাজ করা দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রফিকুল আলম বলেন, ২০১২ সালে বেসরকারি কয়েকটি এনজিওকে সাথে নিয়ে নিঝুমদ্বীপে হরিণের একটি সার্ভে করা হয়। এতে আমরা এ দ্বীপের হরিণকে বাঁচাতে হলে চারটি বিষয়ে কাজ করার জন্য সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে জমা দেই। এতে আমরা যে বিষয়গুলো উল্লেখ করি তা হলো- উঁচু জায়গা নির্মাণ, কুকুর নিধন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও বনের নিরাপত্তা বেস্টনি তৈরি করা।

নিঝুমদ্বীপের বনবিভাগের বিট কর্তকর্তা জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের অমাবশ্যার অস্বাভাবিক জোয়ারে বেড়িবাঁধ না থাকায় লোকালয়ে চলে এসেছে হরিণের দল। এভাবে অস্বাভাবিক জোয়ার অব্যাহত থাকলে নিঝুমদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ হরিণের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

নিঝুমদ্বীপের ইউপি চেয়ারম্যান জানান, বেড়িবাঁধ নিয়ে বারবার উপজেলা সমন্বয় সভায় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না। পর্যটন এলাকা নিঝুমদ্বীপের হরিণ বাঁচাতে হলে বেড়িবাঁধ এবং উঁচু মাটির কিল্লা দরকার। হরিণ হারিয়ে গেলে পর্যটকশুন্য হবে নিঝুমদ্বীপ।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh