• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হঠাৎ ধর্মঘটে বিপাকে পার্বত্য জেলার পর্যটকরা

ইয়াছিন রানা সোহেল

  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৯:৪৫

সারাবছরই কমবেশি পর্যটকের আনাগোনা থাকে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায়। তবে বছরের শেষ সময় থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটকদের আনাগোনা থাকে বেশি। প্রতিদিনই দেশ-বিদেশের হাজারো পর্যটকের পদ চারণায় মুখর থাকে এ ৩ পার্বত্য জেলা। আগে ঘোষণা না দিয়ে সারাদেশে পরিবহণ ধর্মঘট ডাকায় মঙ্গলবার এখানে আটকা পড়েছেন হাজারো পর্যটক। একদিকে যেমন পর্যটকরা নির্দিষ্ট সময়ে এখান থেকে বের হতে পারেনি, তেমনি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের শিক্ষা সফর কিংবা পিকনিকের গাড়িও এখানে ঢুকতে পারেনি।

রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজে বসে আছেন কয়েকজন পর্যটক। ঢাকা থেকে আসা সামিয়া বলেন, ৩ দিনের শিক্ষা সফরে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান দেখতে এসেছিলাম। বান্দরবান থেকে রাঙামাটি আসি। প্ল্যান ছিল রাঙামাটি হয়ে খাগড়াছড়ি যাব। এরপর ঢাকায় ফিরব। কিন্তু সকালে উঠেই জানতে পারি খাগড়াছড়ি যাওয়া হবে না। শুনেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। এখন আমাদের আর খাগড়াছড়ি যাওয়া হবে না। এখান থেকেই ঢাকা ফিরে যেতে হবে।

শুধু দেশি পর্যটক নয়, বিদেশি পর্যটকরাও বিপাকে পড়েছেন। রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা ড্যানিশ ৩ পর্যটককে পুলিশ পাহারায় হাটহাজারি পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা।

সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেছার আহম্মেদ বলেন, আমার হোটেলে ‍২ বাস পর্যটক অবস্থান করছেন। তাদের মঙ্গলবার চলে যাবার কথা। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে যেতে পারেননি।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ২ বাস পর্যটক আসার কথা ছিল। তারা মঙ্গলবার ও বুধবার ২ দিনের জন্য হোটেল বুকিং করেছিল। ধর্মঘটের কারণে তারা আসতে পারেননি। ফলে তারা বুকিংও বাতিল করেছেন।

ব্যবসায়ী সমিতির এ নেতা আরো বলেন, শহরের প্রায় প্রত্যেকটি হোটেলে পর্যটক আটকা পড়েছেন ও বাইরে থেকে পর্যটক আসতে পারেননি।

রাঙামাটি টেম্পু টুরিস্ট বোট মালিক সমিতির অর্থ সম্পাদক মোঃ দিদার আলম বলেন, ঢাকা থেকে ৪৫ জনের একটি টিম আসার কথা। তারা কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণের জন্য বোট ভাড়া নিয়েছিল। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে তারা আসতে পারেননি।

স্থানীয় খাবার প্রস্তুত ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘গরবা’র মালিক বাদশা ফয়সাল বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১শ’ জনের মত একটি টিম আমার হোটেলে খাবারের অগ্রিম বুকিং দিয়েছিল। রাতে খাবার কথা ছিল তারা। সকালে জানালো তারা আসতে পারছেন না।

হঠাৎ করে দূর পাল্লার কোনো বাস ছেড়ে না যাওয়ায় কিংবা জেলায় ঢুকতে না পারায় এই দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। জেলার বাস মালিক সমিতির নেতারাও জানতেন না ধর্মঘটের কথা। পার্বত্যাঞ্চলের বাস মালিক নেতা সেলিম উদ্দিন বলেন, ধর্মঘটের বিষয়টি আগে জানতাম না। সকালে টিভিতে দেখলাম পরিবহন ধর্মঘট। এটি শ্রমিকদের বিষয়, মালিকদের নয়।

রাঙামাটি পরিবহন শ্রমিক নেতা আবছার আলী জানান, ধর্মঘটের কথা আগে কেউ জানায়নি। সকালে চট্টগ্রামের একটি নেতা ফোন করে জানালেন।

রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ছুটির দিনে পর্যটকের আনাগোনা বেশি থাকলেও অন্যান্য দিনে পর্যটক কম থাকে না। কিন্তু হঠাৎ করে ধর্মঘটের কারণে বেশ কিছু পর্যটক আটকা পড়েছেন। এছাড়া অগ্রিম বুকিং দিয়েও অনেকে আসতে পারেননি। এরকম হলে সরকারের রাজস্ব আয়ে ভাটা পড়বে।

কে/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh