রাজধানীকে সুন্দর করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি : আইইবি
ঢাকার সৌন্দর্য ফেরাতে গবেষণা জরুরি। মেগা প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়ার আগে, সেগুলো কতটা জনবান্ধব হবে তা নিয়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সব পক্ষের সহযোগিতা ও সমন্বয় দরকার। ঢাকাকে পুনরায় কাঠামোবদ্ধ করার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সমন্বয়টা জরুরি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকার আশপাশের সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সেবা দাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় দরকার। একটি মন্ত্রণালয় প্রয়োজন এই কাজে সমন্বয় সাধন করার জন্য।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পুরকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ‘রাজধানী ঢাকার পুনঃউন্নয়ন: ভূমি ও সেবার সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
পুরকৌশল বিভাগের সম্পাদক প্রকৌশলী সৈয়দ শিহাবুর রহমানের সঞ্চালনায় ও আইইবির সম্মানি সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জুর স্বাগত বক্তব্যে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও আইইবির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা।
প্রধান অতিথি রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও আইইবির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা বলেন, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় দরকার। ঢাকাকে পুনরায় কাঠামোবদ্ধ করার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সমন্বয় জরুরি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকার আশপাশের সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সেবা দাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় দরকার। একটি মন্ত্রণালয় প্রয়োজন এই কাজে সমন্বয় সাধন করার জন্য।
আইইবির মুখপাত্র ও সম্মানি সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এস এম মনজুরুল হক মঞ্জু বলেন, ঢাকা শহরের অবকাঠামো উন্নয়নে আইইবির অবদান অনস্বীকার্য। আমরা এ সিটিকে পুনরায় কাঠামোবদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করছি। সকল দপ্তরের সমন্বয় ও সহযোগিতা একান্তভাবেই দরকার। রাজধানীর উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ সমূহ মনে করিয়ে দিয়ে ড. প্রকৌশলী এ এফ এম সাইফুল আমিন বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা রয়েছে ঢাকাকে সত্যিকারের সুন্দর নগর করার জন্য।
অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, ঢাকাকে পুনরায় সাজিয়ে নিতে ভিন্ন কৌশল হাতে নিতে হবে। সেই কৌশল গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে দ্রুত সময়ের মধ্যে।
প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আগুন লাগার ঘটনাগুলো স্মরণ করে দেয়, আমাদের রিডেভেলপ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সেজন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নীতিমালা প্রণয়ন করার ক্ষেত্রে আরও উদ্যোগী হবেন বলে আমার বিশ্বাস। আমরা একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। আমরা জনগণের সহযোগিতা কামনা করছি। উচ্ছেদ নিয়ে ভয় নয়, পুনঃস্থাপনের সুযোগ রয়েছে।
অধ্যাপক ড. মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, রিডেভেলপমেন্ট এবং রিসেটেলমেন্ট এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় দরকার। এবং একটি অধিগ্রহণ আইন এর জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।
তিনি আরও বলেন, কোন শহর ভেঙে পড়ে যদি পরিবহন খাত সঠিকভাবে পরিচালিত না হয়। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার জনগণের জন্য মেট্রোরেল সুবিধা দিতে হবে।
মেজর (অবঃ) প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী বলেন, জলমগ্নতার বিষয়টি উপেক্ষিত থাকছে শহরের অবকাঠামো উন্নয়নে। এটা একটা বড় সমস্যা। এছাড়া উচ্ছেদ কোন সমস্যার সমাধান করতে পারে না। প্লট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে তাদেরকে যাদের দরকার নেই।
মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে ঢাকায়। শহরমুখী চাপ কমাতে বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই। বিষয়টি জটিল কিন্তু এটি আমাদের চাইতে হবে। প্লট বরাদ্দে অনিয়ম দূর করতে হবে।
খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, উত্তর সিটি বর্ধিত অংশ নিয়ে লোকাল এরিয়া প্ল্যান করছে। ঢাকার সুয়ারেজ সিস্টেম বলে কিছু নেই। ঢাকার খাল পুনরুদ্ধার না করলে এই সিটি টিকবে না। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো এই কাজে কে নেতৃত্ব দেবে।
মাসুদ করিম বলেন, গণমাধ্যমকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। বিরাট অব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে ঢাকার মানুষ। এ থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় আছি আমরা। উন্নয়নের জন্য নাগরিক আন্দোলন প্রয়োজন।
গোলটেবিলে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার, বোর্ড অব এক্রিডিটেশন ফর ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনিক্যাল এডুকেশনের চেয়ারম্যান ড. প্রকৌশলী এ. এফ. এম. সাইফুল আমিন, পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সৌমিত্র কুমার মুৎসুদ্দি, অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান, রিহ্যাবের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আব্দুল আউয়াল, মেজর (অবঃ) প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, স্থাপত্য অধিদপ্তর; মো. আশরাফুল ইসলাম, ড. মো. মিজানুর রহমান, ড. প্রকৌশলী মো. আবদুল আল মামুন, প্রকৌশলী আব্দুল মালেক সিকদার, খন্দকার মাহবুব আলম, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, মাসুদ করিম, মো. শামসুল আলমসহ নগর উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
মন্তব্য করুন