• ঢাকা শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মতপ্রকাশের কারণে গ্রেপ্তারদের নিঃশর্ত মুক্তি দিন: আর্টিকেল ১৯

আরটিভি নিউজ

  ০৩ জুলাই ২০২০, ২১:৩১
Release those arrested for expressing their views unconditionally: Article 19
ছবি সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে মতপ্রকাশের জের ধরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আর্টিকেল ১৯। আলোচিত এই আইনে স্কুলছাত্র থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, লেখক, সাংবাদিক ও কার্টুনিস্টের গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানায় এবং একইসঙ্গে গ্রেপ্তারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার (৩ জুলাই) সংস্থাটির বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সলের গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আর্টিকেল ১৯ এই আহ্বান জানায়।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল শুরু থেকেই। নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে তৃণমূলে ত্রাণ বিতরণ পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা, অস্বচ্ছতা ও অব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো দিনে দিনে স্পষ্ট হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, সরকার এ সব দুর্বলতা কাটানোর প্রতি মনোযোগী হবে। অথচ এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভিন্নমত ও সমালোচনা দমনের নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় নবম শ্রেণির কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য লজ্জাজনক দৃষ্টান্ত।’

ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘অন্যান্য আইনে দায়েরকৃত মামলার তুলনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। সম্প্রতি রংপুর ও রাজশাহীতে দুইজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে, যাদের একজন নারী, মামলা দায়েরের পরপরই কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই মধ্যরাতে গ্রেপ্তার করা হয়। অথচ হত্যাচেষ্টা ও দুর্নীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামিরা চার্টাড ফ্লাইটে দেশত্যাগ করেছেন; আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বিষয়ে কোনো তৎপরতা দেখায়নি। আইন প্রয়োগের এই বৈষম্যমূলক প্রবণতা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি বিরাট হুমকি হয়ে উঠেছে।’

আর্টিকেল ১৯ মতপ্রকাশজনিত অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ড করে। মতপ্রকাশজনিত ঘটনায় ২০১৮ সালে ৭১টি ও ২০১৯ সালে ৬৩টি মামলা রেকর্ড করে আর্টিকেল নাইনটিন। অথচ চলতি বছরের প্রথম ছয়মাসেই সংস্থাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া ১১৩টি মামলার ঘটনা রেকর্ড করেছে। কেবল মতপ্রকাশের কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২০৮ জন ব্যক্তি এ সব মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৫৩ জনই সাংবাদিক। অভিযুক্তদের মধ্যে ১১৪ জনকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই এখনও জামিনের প্রতীক্ষায় আছেন।

এ প্রসঙ্গে ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কারাবন্দিদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। ভার্চুয়াল আদালতে ৩০ দিনে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ৪৫ হাজার ব্যক্তির জামিন হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযুক্তরা খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো ভয়ঙ্কর কোনো মামলার আসামি নন। তবুও তাদের জামিন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পক্ষকাল ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের জামিন আবেদন এ পর্যন্ত আটবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে; যা তার পরিবারের জন্য অত্যন্ত হতাশার। আমরা কাজল ও ওই স্কুলছাত্রসহ মতপ্রকাশের কারণে এই আইনে গ্রেপ্তার অন্য অভিযুক্তদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানাই।’
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh