• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘তাদের শাস্তি দেয়া হলেই আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে’

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১২:০৫
ছবি-সংগৃহীত

দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে মারাত্মক দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বাবা একেএম মুসা বলেছে, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় এনে তাদের শাস্তি দেয়া হলেই আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের বাইরে এই কথা বলেন তিনি।

এ কে এম মুসা বলেন, আপনারা আমার মেয়ের জন্য অনেক করেছেন। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। চিকিৎসকরা আমার মেয়েকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেননি। আমার আর কিছুই চাওয়ার নাই এখন। আমি আমার মেয়ের হত্যার দ্রুত বিচার চাই। যারা অপরাধী তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।

তিনি বলেন, আমার মেয়ে নিষ্পাপ। তাকে প্রথমে যেভাবে হেনস্তা করা হয়েছে তার প্রতিকার চেয়েছিল আামার মেয়ে। থানায় গিয়েছিল মামলা দিতে, কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। পরবর্তীতে নৃশংসভাবে তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। আমি ভাষা হারিয়ে ফেলছি।

এদিকে নুসরাতের মৃত্যুর ঘটনায় শাহবাগ থানায় জিডি করা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গতকাল (বুধবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে না ফেরার দেশে চলে যান সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।

এছাড়া নুসরাতের চাচা নুরুল হুদা জানান, পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বাদ আসর সোনাগাজী সাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে দাদির কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, মরদেহ পোস্টমর্টেম শেষে দুপুরের আগেই পরিবারের কাছে নুসরাতের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

বর্তমানে নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুতে তার বাড়িতে স্বজনদের শোকের মাতম চলছে। তার দাদা মাওলানা মোশারফ হোসেন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার নাতনি রাফি খুব শান্ত এবং ভদ্র স্বভাবের ছিল। তাকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা আমরা সহ্য করতে পারছি না। এসময় তার খালা ছকিনা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবী করে।

অপরদিকে মামলার এজহারভুক্ত আসামি সোনাগাজী পৌরসভার কমিশনার মকছুদ আলমকে বুধবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে আলিম (এইচএসসি) পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান ওই ছাত্রী। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেয়া হয়। ওই সময় বোরকা পরিহিত ৪-৫ জন ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার পর প্রথমে সোনাগাজী ও ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার পর ওইদিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।

স্বজনদের অভিযোগ, মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে না নেয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh