• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের পদচারণায় মুখর গণভবন

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬, ২৩:২৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য দেখা করলেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় ও রাশিয়ান বীর যোদ্ধারা। দেখা করতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনের যান তারা। এসময় মুক্তিযুদ্ধ সময়কার ঘটনার স্মৃতিচারণ ছাড়াও পারস্পরিক বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেন তারা।

ভারতের ২৯ এবং রাশিয়ার ৫ জন যোদ্ধা সস্ত্রীক বাংলাদেশের ৪৬তম বিজয় উৎসবে যোগ দিতে ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় এসেছেন। বিজয় দিবস উৎসব উপলক্ষে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে তাদের।

তারা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তনের প্রশংসা করেন। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি মহান ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলেও দৃঢ় আশাবাদ প্রকাশ করেন তারা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বলেন, ‘৪৫ বছর আগে আপনাদের অবদানের কথা আমরা সবসময় স্মরণ করি। যে ত্যাগ স্বীকার আপনারা করেছেন আমাদের জনগণ তা সবসময় মনে রাখবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কথা বলতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পুরোপুরি বিকৃত করা হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান ও ত্যাগ স্বীকারকারী বিদেশি বন্ধুদের স্মরণের প্রক্রিয়া শুরু করে।’

পাকিস্তানী বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর স্বাধীনতা যুদ্ধকালে নিজের বন্দীদশার স্মৃতি স্মরণ করে শেখ হাসিনা জানান, অবরুদ্ধ অবস্থায় তারা বাড়ির কক্ষ থেকে বের হওয়ার সুযোগ পেতেন না, সেখানে তিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বন্দীদশায় ছিলেন। তাই যখন বিমান হামলা হতো তখন শব্দ শুনতে পেতেন এবং ধানমণ্ডির ওই বাড়ির কক্ষ থেকে সামান্যই দেখতে পেতেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয়, কিন্তু তারা পরের দিন বন্দীদশা থেকে মুক্ত হন। এ সময় পাকিস্তানী বাহিনী বাড়ি পাহারায় ছিল। তারা বলাবলি করছিল- ‘নিয়াজি সারেন্ডার করতে পারে, তবে আমরা করবো না।’ তবে ১৭ ডিসেম্বর সকালে মেজর অশোক তারার নেতৃত্বে ভারতীয় আর্মির একটি টিম এ বাড়িতে আসে এবং পাকিস্তানি ফোর্সকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। এরপর তারা মুক্ত হন।

অনুষ্ঠানে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা লে. জেনারেল (অব.) জি এস সিহোতা, রুশ প্রতিনিধিদলের নেতা কজুরিন ভিক্টর, ভারতের বীর যোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ভানোত মদন মোহন, এয়ার কমোডর (অব.) চন্দ্র মোহন সিংলা এবং ভাইস এডমিরাল (অব.) রমন প্রেম সুথানও বক্তব্য রাখেন।

কজুরিন ভিক্টর তার বক্তব্যে স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম বন্দরে একজন মেরিন অফিসার হিসেবে মাইন অপসারণে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। মাইন অপসারণের অভিজ্ঞতা নিয়ে রুশ ভাষায় লেখা একটি বই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন। তিনি বইটি বাংলায় অনুবাদ এবং এর অর্থ বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে ব্যয়ের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশে যুদ্ধের দিনগুলো স্মরণ করে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান লে. জেনারেল (অব.) জি এস সিহোতা জানান, আজ যখন তারা বাংলাদেশে পৌঁছেন তখন তারা পরিবর্তিত দেশ দেখতে পেয়েছেন।

শেখ হাসিনা স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে ভারত ও রাশিয়ার অবদানের কথা স্মরণ করেন।

সংবর্ধনায় বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ভারতের ৪ সামরিক কর্মকর্তা, ভারত ও রুশ দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh