• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতিতে সারাদেশে দুর্ভোগ চরমে

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২৯ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:৩৮

নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে সারাদেশে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

দিনাজপুর: দ্বিতীয় দিনের মতো পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি দিনাজপুরেও অব্যাহত রয়েছে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। গাড়ি না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের ডাকা এই কর্মবিরতিতে দিনাজপুরের আভ্যন্তরীণ রুটসহ সকল রুটে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, কারসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহনে ধর্মঘট ডাকলেও শ্রমিকরা সড়কে লাঠিসোটাসহ অবস্থান নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে বাধা দিচ্ছে। তিন চাকার অটো-টেম্পু চালকদের মারধরসহ মুখে কালি লাগিয়ে দিচ্ছে। শ্রমিকদের এসব কর্মকাণ্ডের ছবি নেয়ার চেষ্টা করলে তারা গণমাধ্যম কর্মীদেরও বাধা দেয়।

বরিশাল: কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে বরিশালে আজ সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছে বাস চালক ও শ্রমিকরা। সকাল থেকে বরিশালের বাস টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লা রুটের কোনও বাস ছেড়ে যায়নি। এদিকে কর্মবিরতির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে যাত্রী সাধারণ। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তির অন্ত নেই। এছাড়া বরিশাল নগরীতে থ্রি হুইলার যানবাহন চলাচল শ্রমিকরা বন্ধ করে দেয়ায় এই ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রমিকদের পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ও মৃত্যুদণ্ড রেখে যে আইন করা হয়েছে তা সংশোধন করার আহ্বান জানিয়েছে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: চলমান পরিবহন কর্মবিরতির প্রভাব পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনজীবনে। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সেইসঙ্গে বিশেষ করে কাঁচা বাজারে সবজির দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। তারপরও বজারে সবজি মিলছে না। অন্যদিকে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। অবরোধের মুখে পড়েছে ছোট যানবাহনগুলো। এতে সড়কের যানবাহন চলাচল নেই বললেই চলে। রোববার থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি। এরপর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল। পণ্য পরিবহনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা সবজি আনা নেয়া করতে পারছে না। যার প্রভাব পড়ে জেলার বৃহত্তম পাইকারি সবজি বাজার আনন্দ বাজারে।

কুমিল্লা: কুমিল্লায় দ্বিতীয় দিনের মতো পালিত হচ্ছে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে সারাদেশের সঙ্গে কুমিল্লায়ও একযোগে পালিত হচ্ছে এ কর্মবিরতি। সোমবার সকালে এই কর্মবিরতি উপলক্ষে কুমিল্লা শহরের শাসনগাছা, চকবাজার, টমসম ব্রিজ ও জাঙ্গারিয়া বাস টর্মিনালসহ জেলার কোনও টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি কোনও যাত্রীবাহী বাস। এমনকি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটো থ্রি-হুইলার থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ফাঁকা রয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আলেখারচর, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় সড়কে যান চলাচলে বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। এসময় মহাসড়কের ওপর তারা বিক্ষোভ করে। আট দফা দাবি মানা না হলে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলে জানান বিক্ষোভকারীরা। যানবাহন না চলায় যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। যাত্রীরা বলছে এভাবে চলতে থাকলে দেশের পণ্যসামগ্রীরও মূল্য বৃদ্ধি পাবে। দ্রুত সমাধানের দাবি জানান সবাই।

ঝিনাইদহ: শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত ঝিনাইদহ জেলা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব জেলার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ঢাকা-কলকাতার রুট ঝিনাইদহ দিয়ে যাচ্ছে না দুই বাংলার কোনও পরিবহনও। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে চাকরিজীবীসহ অফিসগামী নানা পেশার মানুষ। মহাসড়কগুলিতে চলছে না বাসসহ কোনও ধরনের পরিবহন, এমনকি যন্ত্রচালিত ছোট-খাটো কোনও বাহনও চলছে না। স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যও। জেলা থেকে কোথাও যেতে পারছে না সবজিসহ কাচামালবাহী কোনও পরিবহন। জেলার বাস টার্মিনাল, আরাপপুর, চুয়াডাঙ্গা স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পিকেটিং করছে শ্রমিকরা।

কুষ্টিয়া: সংসদে পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে সারাদেশের ন্যায় কুষ্টিয়াতেও দ্বিতীয় দিনের মতো ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি চলছে। আজ সোমবারও কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসসহ সকল ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে দ্বিতীয় দিনে কুষ্টিয়ার বাসস্ট্যান্ড মজমপুর গেটে দূরপাল্লার তেমন কোনও যাত্রী দেখা যায়নি। এদিকে, ভোগান্তিতে পড়েছেন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ যাত্রীরা। অনেকেই সিএনজি ও অটোরিকশায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করছে। দ্বিতীয় দিনেও কর্মবিরতি সফল করতে মজমপুর গেটে শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা বাস মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, সরকারের কালো আইন বাতিল, মামলায় শ্রমিকদের জামিনযোগ্য করাসহ আট দফা দাবি পূরণ না হলে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

ময়মনসিংহ: সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা পরির্বতনসহ আট দফা দাবিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে ময়মনসিংহে শ্রমিকদের কর্মবিরতি আজ দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। এতে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যান চলাচল। পরিবহন না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকেই বিকল্প পথে অতিরিক্ত ভাড়ায় গন্তব্যে যাচ্ছেন। গতকাল রোববার সকাল থেকে শহরের মাসকান্দা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, পাটগুদাম ব্রিজের মোড় এবং কাচিঝুলি টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটে কোনও যানবাহন ছেড়ে যায়নি। জেলার কোথাও বাস, ট্রাক, পিকআপসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হলেও আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলছেন দাবি না মানলে কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

নড়াইল: সংসদে পাশ হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবি বাস্তবায়নে সারাদেশের ন্যায় নড়াইলেও ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন কর্মবিরতি দ্বিতীয় দিনের মত চলছে। নড়াইল-কালনা-ভাটিয়াপাড়া-ঢাকা মহাসড়ক, নড়াইল যশোর, নড়াইল-খুলনা সড়কসহ জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ: সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধন ও আট দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি দ্বিতীয় দিন পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। ধর্মঘটের প্রথম দিনে নারায়ণগঞ্জের মহাসড়কে পরিবহন শ্রমিকদের বেশ তৎপরতা ও অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলেও আজ সকাল থেকে শ্রমিকদের তৎপরতা কম দেখা যায়। এছাড়া গতকালের তুলনায় আজ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নিয়েছে। শ্রমিকদেরকে বুঝিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জের সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের বাস-ট্রাক বন্ধ রয়েছে। এইদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল মোড়, কাঁচপুর, মদনপুর ও মোঘরাপাড়া চৌরাস্তা ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাবো, রূপসি, গাউছিয়া পর্যন্ত প্রতিটি পয়েন্টে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য মানুষের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এখানেও মানুষ তাদের গন্তব্যে পৌঁছার একমাত্র ভরসা নিষিদ্ধ যানবাহনের উপর।

রাজশাহী: রাজশাহীতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনেও চলছে মানুষের ভোগান্তি। সংসদে পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে রোববার সকাল ছয়টা থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মবিরতি শুরু হয়। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ অঞ্চলের সাধারণ যাত্রীরা। ট্রেনই একমাত্র ভরসা এখন সাধারণ মানুষের। কর্মবিরতির কারণে রাজশাহী কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনও বাস ছেড়ে যায়নি। শ্রমিকরা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে।

সাভার: সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে সাভার, ধামরাই, আশুলিয়ায় সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এতে সকাল থেকেই বিপাকে পড়েছে অফিসমুখো যাত্রীরা। সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে রিকশা ছাড়া কোনও গণপরিবহন চলতে দেখা যায়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন তৈরি পোশাক শ্রমিক থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে রোগীদের পড়তে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগে। শ্রমিকদের হাতে লাঞ্ছিত হবার ভয়ে এদিন ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলও কমে গেছে। সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেছেন, সড়কে যাতে কেউ অরাজকতা করতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশকে সতর্ক রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন :

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সুনামগঞ্জে চলছে মাংস ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতি 
সুনামগঞ্জে অনির্দিষ্টকাল মাংস ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতি 
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার 
পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
X
Fresh