• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

শরীয়তপুর-১

আ.লীগ-বিএনপিতে চরম দ্বন্দ্ব

আবুল হোসেন সরদার, শরীয়তপুর

  ০৮ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:৫০

ঢাকার অদূরে শরীয়তপুর-১ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণা শুরু হয়েছে। শরীয়তপুর সদর ও জাজিরা দুটি উপজেলার দুটি পৌরসভা এবং ২৩টি ইউনিয়ন নিয়ে শরীয়তপুর-১ আসন গঠিত।

এ আসন থেকে বরাবরই আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হলেও ১৯৯১ সালের পর থেকে শরীয়তপুর জেলা সদর থেকে কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি। জাজিরা উপজেলা থেকে আবার কখনো বা ডামুড্যা উপজেলা থেকে বহিরাগত প্রার্থী এসে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে জেলা সদর এখনো অবহেলিত রয়েছে গেছে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন কমপক্ষে পাঁচজন প্রার্থী।

এদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শিল্পপতি মোবারক আলী সিকদার, সাবেক সংসদ সদস্য মাস্টার মজিবুর রহমান, ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক সভানেত্রী নুরজাহান আক্তারের নাম শোনা যাচ্ছে।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন তিনজন প্রার্থী। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসির উদ্দিন কালু, প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য একেএম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেবের স্ত্রী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট তাহমিনা আওরঙ্গজেব, জেলা বিএনপির নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম মিন্টু সওদাগর, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন সিকদার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ব্যক্তিগত সহকারী আমিনুল ইসলাম বাদল।

এছাড়া জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান মাসুদ। জাসদ (ইনু) কেন্দ্রীয় কমিটির স্থানীয় বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা কমিটির সভাপতি স ম আবদুল মালেক। এছাড়া ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য কোনো দলের নেতাকর্মীরা সক্রিয় নন।

শরীয়তপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের নেতারা মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় করছেন। এর পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণা করছেন। তবে সংসদের বাইরে দেশের বড় আরেকটি রাজনৈতিক দল বিএনপি প্রার্থীরা এখনো মাঠে নামেনি।

শরীয়তপুর-১ আসনে বর্তমান ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৯৪ হাজার ৪৪২ জন। এ আসনে ব্যক্তি ইমেজে কোনো ব্যাপার নয়। এখানে মূল ব্যাপার হলো মার্কা। যিনি নৌকা মার্কা পাবেন তিনিই বিজয়ী হবেন এমনটাই বলছেন ভোটাররা।

তবে এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি বড় দলেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। বর্তমানে এ আসনে মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন্দল প্রকট আকার দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বর্তমান সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর মধ্যে মনোনয়ন লড়াই হবে। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যার প্রতি সুনজর দেবেন তিনিই মনোনয়ন পাবেন। জেলা সদরের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা জেলা সদর থেকে প্রার্থী চান। তবে মোজাম্মেল হক ও ইকবাল হোসেন অপু দুজনেই মনোনয়ন লাভে ১০০ ভাগ আশাবাদী।

এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর ভোট রয়েছে প্রায় ২০-২৫ হাজার। এ ভোটের বেশিরভাগই যাবে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে। জাতীয় পার্টির ভোট রয়েছে ৩ হাজারের মতো। তবে এই ভোট ফলাফল পরিবর্তনে কোনো প্রভাব পড়বে না।

এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক চোখে পড়ার মতো তেমন কোনো উন্নয়ন করতে পারেননি। বিশেষ করে জেলা সদরে কোনো উন্নয়ন হয়নি। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত বেশিরভাগ চেয়ারম্যান প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। মনোনয়ন প্রশ্নে এমপির একক সিদ্ধান্তের কারণে দলের বেশিরভাগ প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন বলে দলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।

সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা, হাসপাতাল ও রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

মোবারক আলী সিকদার আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করি। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে আমি শরীয়তপুরে রাজনীতি ধরে রেখেছি। আমার এ কর্মকাণ্ড বিবেচনা করলে এবং তৃণমূলের মতামত নিলে আমিই মনোনয়ন পাব। এরপরেও দলের সভানেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটা আমি মেনে নিব।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক সভানেত্রী নুরজাহান আক্তার আরটিভি অনলাইনকে বলেন, দলের দুঃসময়ে পাশে ছিলাম। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছি। আমি এবার দল থেকে মনোনয়ন চাইব।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসির উদ্দিন কালু আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আমি মনোনয়ন চাইবো। আশা করি আমিই মনোনয়ন পাবো।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আমিনুল ইসলাম মিন্টু সওদাগর আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত দলের কর্মী হিসেবে কাজ করছি। এ আসনে আমার পরিবার থেকে আমজাদ হোসেন সওদাগর মনোনয়ন পেয়েছিলেন। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি জয় লাভ করতে পারব।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আলতাফ হোসেন সিকদার আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি ২০০১ সালে মনোনয়ন পেয়েছিলাম। কিন্তু দলের কতিপয় নেতাকর্মী বিরোধিতা করায় বিজয়ী হতে পারিনি। এবার আমি মনোনয়ন চাই।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আমিনুল ইসলাম বাদল আরটিভি অনলাইনকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ আসনে ভাড়াটিয়াদের বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে। আমি বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।

জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান মাসুদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে এজন্য আমাদের কাজ করতে বলেছেন পার্টির চেয়ারম্যান। যদি জোটের সঙ্গে নির্বাচন হয় তাহলে ভিন্ন কথা।

জাসদ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল মালেক আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি জাসদ (ইনু) থেকে মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করব।

জেবি/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ মের পরীক্ষা স্থগিত
প্রথম ধাপের ভোটে ১৪১ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
ভোটের ওপর আস্থা ফিরেছে মানুষের: ইসি আলমগীর
ভোটার ছাড়া ভোট চুন ছাড়া পান খাওয়ার মতো: ইসি রাশেদা 
X
Fresh