• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo

সবচেয়ে বয়স্ক বাজেট পেশকারী হিসেবে মাহমুদ আলীর রেকর্ড

আরটিভি নিউজ

  ০৬ জুন ২০২৪, ১৩:৫২

আর কিছুক্ষণ পরই জাতীয় সংসদে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সবচেয়ে বড় প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। দেশের ইতিহাসে ৮২ বছর বয়সে সবচেয়ে বয়স্ক অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার বাজেট পেশ করে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন তিনি। তার আগে এত বেশি বয়সে কেউ বাজেট পেশ করেননি।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) তিনি যখন বাজেট পেশ করতে যাচ্ছেন তখন দেশের অর্থনীতি নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে নিজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কতটুকু সম্ভাবনা জাগাতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়।

আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১৯৪৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের খানসামার ডাক্তারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে অর্থনীতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। পরে সেখানেই শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। পরের ৫ দশক কাটে পেশাদার কূটনীতিক হিসেবে।

নিউইয়র্কে পাকিস্তানের ভাইস-কনসাল হিসেবে নিযুক্ত হন ১৯৬৮ সালে। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন এবং ১৯৭১ সালের মে মাসে মুজিবনগরে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং জাতিসংঘসহ বিশ্বব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।

১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসে তিনি ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত হন। পরে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে (১৯৭৭-৭৯) যথাক্রমে প্রথম সচিব, কাউন্সিলর এবং ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন।

তিনি চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে ডেপুটি চিফ অব মিশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনার রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি ভুটানে রাষ্ট্রদূত হিসেবে থাকা অবস্থায় নতুন ট্রানজিট রুট চালুতে ভূমিকা রাখেন এবং বাংলাদেশ-ভুটান বাণিজ্য শুরুর ক্ষেত্রে অবদান রাখেন। এই ট্রানজিটের ফলে বুড়িমারী-চেংরাবান্দা স্থলবন্দর চালু হয় যা উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করে। মাহমুদ আলী, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির (১৯৯২) অধীনে তিন বিঘা করিডর চালু করার জন্য ভারত সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি (১৯৯২) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন।

১৯৯২-৯৫ সালে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে নেপালে রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-নেপাল ট্রানজিট রুটের একটি সফল বাস্তয়ান করেন। ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার নিযুক্ত হন এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।

২০০১ সালে অবসর গ্রহণের পর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হন। পরের বছর হন কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। এরপর আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচন হন। তিনি ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। পরের বছর নভেম্বরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।

দশম জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৪ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে পুনরায় নিযুক্ত হন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর দেশের ১৮তম অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

মন্তব্য করুন

  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়