• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo

কিরগিজস্তানে নিরাপদে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক

আরটিভি নিউজ

  ১৯ মে ২০২৪, ১৮:৩৭
কিরগিজস্তান, বিদেশি শিক্ষার্থী, হামলা
কিরগিজস্তানে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনরত ডা. জেরিত ইসলাম। ইনসেটে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর কিরগিজস্তানের স্থানীয়দের হামলার একটি ভিডিও ফুটেজ থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। ছবি: সংগৃহীত

কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নিরাপদে আছেন। ওই এলাকা পুলিশি নিরাপত্তায় আছে এবং প্রায় ২-৩ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আতঙ্কের কিছু নেই।

রোববার (১৯ মে) দুপুর ২টার দিকে বিশকেকের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে গণমাধ্যমকে এমন তথ্য জানান দেশটিতে এমবিবিএস শেষ করে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনরত ডা. জেরিত ইসলাম।

ডা. জেরিত ওই গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শিক্ষকরাও স্থানীয়দের বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তাদের শান্ত রাখার চেষ্টা করছেন।

দেশটিতে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ডা. জেরিত বলেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত। শিক্ষার্থীদের হোস্টেল থেকে বের হতে দিচ্ছি না। তবে আনুষঙ্গিক কেনাকাটার জন্য বাইরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

ডা. জেরিত জানান, কিরগিজস্তানের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন, যারা মেডিকেল শিক্ষার্থী।

তিনি জানান, কিরগিজস্তানে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে হোস্টেলে থাকতে হয়। তৃতীয় বর্ষে ওঠার পর কেউ চাইলে বাইরে থাকতে পারেন। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বর্তমানে হোস্টেলে অবস্থান করছেন। অন্যরা বাইরে বিভিন্ন অ্যাপার্টমেন্টে থাকছেন।

হামলার ঘটনা সম্পর্কে ডা. জেরিত বাংলাদেশি ওই গণমাধ্যমকে বলেন, হোস্টেলে মিশরীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সমস্যা হয়। পরে স্থানীয়দের মারধর করে মিশরীয় শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটেছে ৩-৪ দিন আগে। এরপর সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সেই ঘটনার একটি ভিডিও তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে স্থানীয়রা।

তিনি আরও বলেন, আমরা আগেই বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দিয়েছিলাম, রাত ৮টার পর কেউ যেন বাইরে না যায়। সেসময় হোস্টেলে গেট বন্ধ ছিল, পুলিশি নিরাপত্তা ছিল। তবে রাতে স্থানীয় তরুণরা পুরো শহরজুড়ে আন্দোলন এবং ভাঙচুর শুরু করে।

তিনি বলেন, তারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টিকে টার্গেট করেই প্রথম আক্রমণ করে। সেসময় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের রুমেই ছিল। তাদের রুম ভাঙচুর করা হয়েছে, তবে তারা কেউ আহত হননি। একটি ভিডিওতে দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে দুজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা হয়েছে।

জেরিত আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই দেশে ফিরতে চাচ্ছেন। এমনিতেই পরীক্ষার পর দেশে ফিরতে তাদের জন্য ১২, ১৬ ও ২৬ জুন চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা রেখেছিলাম। এখন পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠায় এখনই চার্টার্ড ফ্লাইট ম্যানেজের চেষ্টা করছি। তবে আমরা সবাইকে দেশে ফিরে যেতে বলছি না। যারা যেতে চান তাদের তালিকা তৈরি করছি এবং সেভাবেই চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছি। তবে ফ্লাইটের কোনো তারিখ এখনো ঠিক করিনি।

তিনি বলেন, যেহেতু শনিবার ও রোববার এখানে অফিসিয়ালি সবকিছু বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের পাসপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে, ফলে সেগুলো আমাদের এখন সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তাছাড়া একেকজন একেক জায়গায়, যে কারণে একটু সময় লাগছে।

কিরগিজস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাস না থাকায় কোনো প্রভাব পড়ছে না বলেও জানান তিনি।

ডা. জেরিতের ভাষ্য, আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রাখা ও খাবারসহ আনুষঙ্গিক সবকিছু সরবরাহ করছি। বাইরে যারা আছেন তাদেরকেও হোস্টেলে নিয়ে আসছি। এখন পর্যন্ত কারো কোনো সমস্যা হয়নি।

কিরগিজস্তানে কেন পড়তে যান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিরগিজস্তানে ভিসা জটিলতা নেই। শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি প্রতি সেমিস্টারে দিতে পারেন। শিক্ষার্থীরা সরাসরি এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে পারেন। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এখানকার শিক্ষার মান খুবই ভালো। তাছাড়া টিউশন ফি বাংলাদেশের তুলনায় কম।

জেরিত আরও জানান, কিরগিজস্তানে পাকিস্তানি শিক্ষার্থী প্রায় ১৫ হাজার। তাদের জন্য আগে থেকেই প্রতি সপ্তাহে চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা ছিল। যে কারণে তারা সেই চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফিরে গেছেন।

কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে ১৭ মে রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার।

উজবেকিস্তানে অবস্থিত দূতাবাসের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।বাংলাদেশিদের দেখভালে উজবেকিস্তান থেকে রাষ্ট্রদূত যাচ্ছেন বিশকেকে। রোববার (১৯ মে) রাজধানীর প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেনপররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমরা নিবিড়ভাবে এবং অনবরত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা তাসখন্দে অবস্থানরত আমাদের রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে দ্রুত বিশকেকে যেতে বলেছি।

মন্তব্য করুন

  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না হলে চুপ করে থাকব না: কমলা হ্যারিস
মেট্রো স্টেশনে হামলা: ছয়জন রিমান্ডে
পুলিশকে টার্গেট করেই হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে: ডিবিপ্রধান
তারেক রহমানের নির্দেশেই রাষ্ট্রের ওপর হামলা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী