শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: রাষ্ট্রপতি
![শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: রাষ্ট্রপতি](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/05/16/image-273827-1715862055.jpg)
নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে অনন্য মাইলফলক। তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।
তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে দেশে প্রত্যাবর্তন করে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আর তারই সুযোগ্য উত্তরসূরি গণতন্ত্রের মানসকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে শাহাদতবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। এসময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় তারা প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু তারা দেশে ফিরতে পারেন নাই। পরিবারের সঙ্গে শেষ দেখাটাও তাদের ভাগ্যে জোটেনি। বাবা-মা ও ভাইসহ আপনজনদের হারানোর বেদনাকে বুকে ধারণ করে পরবর্তী ৬ বছর তাকে লন্ডন ও দিল্লীতে চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ত্রয়োদশ জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এটি ছিল আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতৃবৃন্দের এক দূরদর্শী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও বলেন, নানা উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। বৈরি পরিবেশ সত্ত্বেও ১৯৮১ সালের ১৭ মে ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামে। সেদিন বাংলার জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসায় তিনি সিক্ত হন। আবেগাপ্লুত কণ্ঠে সেদিন শেখ হাসিনা বলেন, সব হারিয়ে আজ আপনারাই আমার আপনজন। বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য আমি এসেছি। আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি অনন্য মাইলফলক। তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৯০’র গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হয়, বিজয় হয় গণতন্ত্রের। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। এসময় পাহাড়ি-বাঙালি দীর্ঘমেয়াদী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে পার্বত্য শান্তিচুক্তি এবং প্রতিবেশি ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন বাতিলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডে বিচারের পথ সুগম হয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে তার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে এবং জনগণের কল্যাণে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর হয়। গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারীর ক্ষমতায়ন, বিদ্যুৎ তথ্যপ্রযুক্তি, গ্রামীণ অবকাঠামো, বৈদেশিক কর্মসংস্থানসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোট সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু ও রায়ের বাস্তবায়নসহ সমুদ্রে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত স্থল সীমানা নির্ধারণ তথা ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে গণমানুষের কল্যাণে নিরলস প্রয়াস চালান। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোট সরকার টানা তিনবার ক্ষমতায় এসে ইতিহাস সৃষ্টি করে। সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির মূর্তপ্রতীক। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শেখ হাসিনার বিভিন্ন উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনে অনন্য গৌরব ও স্বীকৃতি। এরই ধারাবাহিকতায় জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থনে টানা চতুর্থবারের মতো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত।
নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কমছে দারিদ্র্যের হার। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু, ঢাকার স্বপ্ন ‘মেট্রোরেল’ ও কর্ণফুলী টানেল জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এছাড়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজও নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প ২০২১’ এর সফল বাস্তবায়নের পথ ধরে ‘রূপকল্প ২০৪১’ ও ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ এর মতো দূরদর্শী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে শেখ হাসিনার এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বিশ্বে আজ রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষ্যে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যা গোটা বিশ্বে ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দারিদ্র্যবিমোচনের ধারণার ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে। শেখ হাসিনা সূচিত কমিউনিটি ক্লিনিক এখন বিশ্বব্যাপী ‘শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ নামে পরিচিত। মহামারি করোনা ও বিশ্বে চলমান যুদ্ধবিগ্রহের প্রভাবে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত ও সাহসী পদক্ষেপে সরকার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে সরকারের নানামুখী আর্থসামাজিক ও বিনিয়োগধর্মী প্রকল্প, কর্মসূচি এবং কার্যক্রম গ্রহণের ফলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। টেকসই উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, ইনশা আল্লাহ।
বাণীতে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে সরকারের অব্যাহত সাফল্যসহ তার নিজের ও পরিবারের সকল সদস্যের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন সাহাবুদ্দিন। সূত্র : বাসস
মন্তব্য করুন
‘শরীফার গল্প’ বাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
![‘শরীফার গল্প’ বাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/28/image-280306-1719583836.jpg)
দেশে ব্রাহমা প্রজাতির গরু যে কারণে নিষিদ্ধ
![দেশে ব্রাহমা প্রজাতির গরু যে কারণে নিষিদ্ধ](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/01/image-280773-1719854167.jpg)
মডেল মসজিদ নির্মাণে প্রকৌশলীর কুকীর্তি প্রকাশ্যে আনলেন স্ত্রী
![মডেল মসজিদ নির্মাণে প্রকৌশলীর কুকীর্তি প্রকাশ্যে আনলেন স্ত্রী](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/03/image-281000-1720004425.jpg)
কোটা নিয়ে এত কীসের আন্দোলন: প্রধান বিচারপতি
![কোটা নিয়ে এত কীসের আন্দোলন: প্রধান বিচারপতি](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/04/image-281103-1720080523.jpg)
এবার কোকা-কোলাকে লিগ্যাল নোটিশ, ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি
![এবার কোকা-কোলাকে লিগ্যাল নোটিশ, ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/07/image-281643-1720371734.jpg)
পিএসসির প্রশ্নফাঁস: গাড়িচালক আবেদ আলীকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
![পিএসসির প্রশ্নফাঁস: গাড়িচালক আবেদ আলীকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/08/image-281781-1720449202.jpg)
‘আমার অফিসের ড্রাইভার যদি কামায় কোটি কোটি, আমি তো বিলিয়ন বিলিয়ন’
![‘আমার অফিসের ড্রাইভার যদি কামায় কোটি কোটি, আমি তো বিলিয়ন বিলিয়ন’](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/09/image-281803-1720463352.jpg)