বিশেষ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় মিল্টন ছিলেন বেপরোয়া: ডিবি
চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের কর্ণধার মিল্টন সমাদ্দার কাউকে পরোয়া করত না। কারণ, অনেক বিশেষ ব্যক্তিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। তাই সে মনে করত, তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুর ২টায় রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, মানবপাচার, জাল মৃত্যু সনদ ও মারধরের অভিযোগে মিল্টন সামাদ্দারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় তাকে সাতদিন রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মিল্টনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত যে অভিযোগগুলো উঠেছে তার বেশিরভাগই স্বীকার করেছে।
ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা তার কাছে আশ্রমে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ডেথ সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। মিল্টন নিজেই বলেছেন যে, ভুয়া ডেথ সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ) তৈরি করে ডাক্তারের সই জাল করে নিজেই সবকিছু লিখে দিতেন। তাছাড়া তার আশ্রমে অপারেশন থিয়েটারে কোনো ডাক্তার ছিল না। উল্টো সে নিজেই বিভিন্ন অপারেশন করত। তখন মানুষজন আর্তনাদ করলে সে পৈশাচিক আনন্দ ভোগ করতো। সবকিছুই আমরা বের করেছি। তবে আরও কিছু তথ্য জানায় বাকি আছে। প্রয়োজনে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও মিল্টনকে রিমান্ডে আনা হতে পারে।
হারুন অর রশীদ বলেন, কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা মিল্টন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন ভিডিওতে ৯০০ মানুষ দাফনের তথ্য দিয়েছে। অথচ বাস্তবে সে দাফন করেছে মাত্র ১৩৫ জন। ভিডিওর মাধ্যমে এমন তথ্য ছড়িয়ে সমাজের মানবিক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অর্থ সংগ্রহ করত।
তিনি বলেন, মিল্টনের এসব কর্মকাণ্ডের মূল শক্তি ছিল বিশেষ ব্যক্তিদের সঙ্গে ওঠা-বসা। তিনি মনে করতেন তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। যারা মিল্টনের আশ্রমে শিশু ও অসুস্থ মানুষ দিয়ে আসত, পরে তারা মিল্টনের আশ্রমে অসহায় মানুষদের খোঁজখবর নিতে গেলে তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও মারধর করতো।
হারুন আরও বলেন, সমাজে এ ধরনের কাজ আরও যারা করছেন তাদের ব্যাপারেও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমরা দেখেছি মানুষের কাছ থেকেই কোটি কোটি টাকা এনে নিজের অ্যাকাউন্টে রেখে দিয়েছে। কারা তাকে সহযোগিতা করেছে সেসব বিষয়েও আমরা বের করব।
মিল্টনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাকে একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে, আজ দুপুরে মানবপাচার আইনের মামলায় চারদিনের রিমান্ড শেষে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করা হয়। সেসময় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছেন ডিবি পুলিশ।
মন্তব্য করুন