• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে : সিপিডি

আরটিভি নিউজ

  ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:৪০
সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে : সিপিডি
ছবি : সংগৃহীত

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটির দাবি, কোভিড বা ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, ভিন্ন কারণে সরকারের এই ঋণ নেওয়ার প্রবণতা ত্বরান্বিত হয়েছে। বিশেষ করে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বৃদ্ধির বিপরীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রাজস্ব আদায় না হওয়াকে এ প্রবণতার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছে সিপিডি।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। ঢাকার লেকশোর হোটেলে যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য নতুন করে ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। এসময় তিনি সতর্ক করে বলেন, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতার দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর।

এ অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে। অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

২০২৪ সাল আমাদের জন্য কঠিন হবে উল্লেখ করে সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নীতি নির্ধারকেরা প্রায়ই বলেন- অর্থনীতিবিদেরা ঠিকমত বিশ্লেষণ করতে পারেন না, ভবিষ্যতও বলতে পারেন না। উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকরা পেশাদার অর্থনীতিবিদদের নিয়ে প্রায়শই শ্লেষাত্মক ও ব্যাঙ্গাত্মক কথা বলেন। আজ থেকে দুই বছর আগে সিপিডিতে বসেই আমি বলেছিলাম, ২০২৪ সাল আমাদের জন্য কঠিন হবে। সেখানে দায়-দেনা পরিশোধে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। ২০২৫ সাল থেকে ঋণ পরিশোধে অস্বস্তি শুরু হবে। ২০২৬ সালে এটা আরও বাড়বে। ঋণের হিসাবে গাফলতি আছে। এ হিসাবে এখনো অনেক কিছু বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রসঙ্গে ড. দেবপ্রিয় বলেন, যদি ১০০ শতাংশ ঋণ নেওয়া হয়ে থাকে, তবে তার ৮০ শতাংশ সরকারের আর ২০ শতাংশ ব্যক্তিখাতের।

বিদেশের তুলনায় সরকার দেশের ভেতর থেকে দ্বিগুণ ঋণ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার তো দেশের ভেতরেও ঋণ নিচ্ছে। সেই ঋণের পরিমাণ কত? যে ঋণ আমরা বিদেশ থেকে নিই, তার দ্বিগুণ আমরা দেশ থেকে নিই। সরকারের এখন যে ঋণের পরিমাণ তার দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ ঋণ, সেটিই বড় বিষয়। সরকারের দায়-দেনা পরিস্থিতি বুঝতে হলে বৈদেশিক ঋণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণও দেখতে হবে। বৈদেশিক ঋণের কারণে মাথাপিছু দায়-দেনা যদি ৩১০ ডলার হয়, অভ্যন্তরীণ ঋণ যোগ করলে সেটা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৮৫০ ডলার।

আমাদের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে জানিয়ে তিনি এরপর বলেন, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, রেভিনিউ বাজেট থেকে উন্নয়ন প্রকল্পকে অর্থায়ন করতে একটা পয়সাও দিতে পারে না। আমরা প্রতারণামূলক বাস্তবতা বা ইউলিসিভ রিয়েলিটিতে আছি।

শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশও স্বল্প মেয়াদি ঋণের ফাঁদে পড়ছে দাবি করে সিপিডির চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ প্রফেসর রেহমান সোবহান বলেন, দেশের মেগা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বিদেশি ঋণে করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে প্রয়োজনের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি ব্যয় হচ্ছে। শ্রীলংকা স্বল্পকালীন ঋণের ফাঁদে পড়েছিল। রপ্তানি কমে আসায় এসব ঋণ যথাযথভাবে পরিশোধ করতে পারেনি দেশটি। আফ্রিকার কিছু দেশেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ তেমন অবস্থানে নেই। কিন্তু দেশে স্বল্প মেয়াদি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিদ্যুৎ ও গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না
খেলাপি ঋণ ও ভর্তুকি কমানোর পদক্ষেপ জানতে চায় আইএমএফ
ঋণখেলাপি ধরতে প্রার্থীদের তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
৯ মাসে সুদ পরিশোধ ১০০ কোটি ডলারের বেশি
X
Fresh