যেদিকে যাচ্ছে জিম্মি জাহাজ, গন্তব্যে পৌঁছাতে লাগবে যতদিন
জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে প্রায় পাঁচ নটিক্যাল মাইল গতিতে সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই গতিতে চললে জাহাজটি উপকূলে পৌঁছাতে আরও তিন থেকে চার দিন সময় লাগবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে এস আর শিপিংয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এমভি আব্দুল্লাহর ক্যাপ্টেনের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। জলদস্যুরা জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি ফিশিং ট্রলারে এমভি আব্দুল্লাহ থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করেছে । এখন জাহাজটি সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে জলদস্যুরা। জাহাজে নাবিকদের জন্য দুই মাসের খাদ্য মজুদ আছে। জাহাজের পরবর্তী গন্তব্য থেকে খাবার পানি নেওয়ার কথা ছিল ক্যাপ্টেনের।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, জিম্মি নাবিকরা জানিয়েছেন জাহাজে এখন প্রায় ৫০ জন জলদস্যু অবস্থান করছে। জিম্মি অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে জাহাজে খাদ্য সংকট হতে পারে। এখন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজে প্রায় ২০০ টন খাবার পানি মজুদ আছে।
তিনি বলেন, জলদস্যুরা জাহাজের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দিয়েছে। যাতে করে সহজে জাহাজটিকে ট্র্যাকিং (চিহ্নিত) করা না যায়। তারপরও আমরা মাঝে মধ্যে ট্র্যাক করতে পারছি। বর্তমানে জাহাজটি পাঁচ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলছে এবং সোমালিয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক জাহাজটি কোথায় গিয়ে থামে।
এর আগে, ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহ নামের বাংলাদেশি জাহাজটি মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে।
জানা গেছে, নাবিকদের ছাড়তে ‘৫০ লাখ’ মার্কিন ডলার চেয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণ না পেলে বাংলাদেশি নাবিকদের মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জাহাজটি প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীকে পাঠানো সর্বশেষ এক অডিও বার্তায় বলেন, আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। টাকা না দিলে তারা একে একে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিও।
দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্ত ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল ‘গোল্ডেন হক’। পরে বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’। এটি একটি বাল্ক কেরিয়ার।
মন্তব্য করুন