• ঢাকা রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

প্রাথমিকে ফেল ওসির ফাঁদে ৭ শতাধিক নারী

আরটিভি নিউজ

  ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:২৩
গ্রেপ্তার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (সংগৃহীত ছবি)

পঞ্চম শ্রেণি ফেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (৩০) ‘প্রিন্টিং প্রেস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। সামান্য কর্মচারী হলেও এলাকার বিভিন্ন মানুষের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডি ঠিক করে ‘ফেসবুক মাস্টার’ উপাধি পেয়েছেন তিনি। আর এ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে শত শত নারীর সঙ্গে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করেছেন আনোয়ার।

ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে পুলিশ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রীসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নামে আইডি খুলে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়েছেন আনোয়ার। অবশেষে ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে বিষয়টি পুলিশ জানতে পারায় ধরা পড়েছেন তিনি।

জানা গেছে, রাজধানীর তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীনের নামে ফেসবুক আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপ খুলে ৭৭১ নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন আনোয়ার। আপত্তিকর ছবি আদান-প্রদানের ঘটনায় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী নারী থানায় এসে হাজির হলে ওসি মহসীন নিজেই বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) গাইবান্ধার স্টেশন রোডের দাশ বেকারি মোড়ের ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ।

লিটন কুমার সাহা বলেন, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা আনোয়ার ইন্টারনেট ঘেঁটে ফেসবুকসহ প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেন। তার এ দক্ষতা ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, মন্ত্রী, পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে তাদের নামে ফেসবুক আইডি খুলতো। এসব আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাদের আপত্তিকর ছবিসহ অর্থ হাতিয়ে নিত আনোয়ার।

তিনি বলেন, আনোয়ারকে গ্রেপ্তারের পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ও কম্পিউটার থেকে রাষ্ট্রপতি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন, চিত্রনায়ক শান্ত খান, অভিনেতা ও মডেল আব্দুন নুর সজলের নামের ফেসবুক আইডি পাওয়া গেছে। কিছু আইডি ডিজেবল অবস্থায় পেলেও বেশিরভাগই সচল ছিল।

তিনি আরও বলেন, আনোয়ার কখনো জনপ্রতিনিধি, কখনো অভিনেতা সেজে এ পর্যন্ত তিনি সাত শতাধিক বেশি নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তার এ তালিকায় শিক্ষার্থী, গৃহিণী, প্রবাসী, মডেল সবাই আছেন। ম্যাসেঞ্জারের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপেও তাদের সঙ্গে কথা বলতেন তিনি। তবে কখনো ভিডিও কলে আসেনি তিনি। কেউ তাকে দেখতে চাইলে কিংবা সন্দেহ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্লক দিতেন আনোয়ার। মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর কথাবার্তা ও আপত্তিকর ছবিও আদান-প্রদান করতেন তিনি। এসব আপত্তিকর ছবির কথা বলে কারো কারো কাছে টাকাও দাবি করেন আনোয়ার।

তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আমার পরিচয় ব্যবহার করে আনোয়ার ৭৭১ নারীর সঙ্গে চ্যাটিং করেছেন। এটি আমি এবং পুলিশের জন্য খুবই মানহানিকর। ভুক্তভোগী নারীরা আমাকে ভেবে সহযোগিতার জন্য তাকে নক করেছিলেন। প্রথমে ভালোভাবে কথা বললেও ধীরে ধীরে অশ্লীলভাবে চ্যাটিং করেন আনোয়ার। অনেক নারী সন্দেহ হলে লিখেছেন, ‘আপনি ওসি মহসীন তো’। অনেকে তার কথার প্রতিবাদও করেছেন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল মোটরসাইকেল চালকের
রাজধানীতে বাসচাপায় নারী নিহত
রাজধানীর বনানীতে চলন্ত বাসে আগুন
‘রাজধানীর ১০ থানায় কিশোর গ্যাং বেশি’
X
Fresh