৪৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করলেন যারা
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সামরিক থেকে গণতান্ত্রিক বিভিন্ন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এসময়ের মধ্যে ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে কয়েকবার। এসব সরকারের আমলে ১৪ জন অর্থমন্ত্রী ও অর্থ উপদেষ্টা জাতির জন্য বাজেট পেশ করেছেন। বৃহস্পতিবার ৪৬তম বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১০-১১ অর্থবছরে এক লাখ ৩২ হাজার ১শ’৭০ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। আসছে অর্থবছর এর পরিমাণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
দেশ স্বাধীনের পর জাতীয় সংসদে প্রথম বাজেট দেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৭শ’ ৮৬ কোটি টাকা।
স্বাধীনতার পর জাতীয় সংসদে পাশ হওয়া বাজেটের আকার ও অর্থমন্ত্রীদের নাম নিচে দেয়া হলো-
- ১৯৭২-১৯৭৩ তাজউদ্দীন আহমদ ৭৮৬ কোটি টাকা
- ১৯৭৩-১৯৭৪ তাজউদ্দীন আহমদ ৯৯৫ কোটি টাকা
- ১৯৭৪-১৯৭৫ তাজউদ্দীন আহমদ ১০৮৪.৩৭ কোটি টাকা
- ১৯৭৫-১৯৭৬ ড. আজিজুর রহমান ১৫৪৯.১৯ কোটি টাকা
- ১৯৭৬-১৯৭৭ জিয়াউর রহমান ১৯৮৯.৮৭ কোটি টাকা
- ১৯৭৭-১৯৭৮ জিয়াউর রহমান ২১৮৪ কোটি টাকা
- ১৯৭৮-১৯৭৯ জিয়াউর রহমান ২৪৯৯ কোটি টাকা
- ১৯৭৯-১৯৮০ ড. এম এন হুদা ৩৩১৭ কোটি টাকা
- ১৯৮০-১৯৮১ এম সাইফুর রহমান ৪১০৮ কোটি টাকা
- ১৯৮১-১৯৮২ এম সাইফুর রহমান ৪৬৭৭ কোটি টাকা
- ১৯৮২-১৯৮৩ আবুল মাল আবদুল মুহিত ৪৭৩৮ কোটি টাকা
- ১৯৮৩-১৯৮৪ আবুল মাল আবদুল মুহিত ৫৮৯৬ কোটি টাকা
- ১৯৮৪-১৯৮৫ এম সায়েদুজ্জামান ৬৬৯৯ কোটি টাকা
- ১৯৮৫-১৯৮৬ এম সায়েদুজ্জামান ৭১৩৮ কোটি টাকা
- ১৯৮৬-১৯৮৭ এম সায়েদুজ্জামান ৮৫০৪ কোটি টাকা
- ১৯৮৭-১৯৮৮ এম সায়েদুজ্জামান ৮৫২৭ কোটি টাকা
- ১৯৮৮-১৯৮৯ মেজর জেনারেল (অব.) মুনিম ১০৫৬৫ কোটি টাকা
- ১৯৮৯-১৯৯০ ড. ওয়াহিদুল হক ১২৭০৩ কোটি টাকা
- ১৯৯০-১৯৯১ মেজর জেনারেল (অব.) মুনিম ১২৯৬০ কোটি টাকা
- ১৯৯১-১৯৯২ এম সাইফুর রহমান ১৫৫৮৪ কোটি টাকা
- ১৯৯২-১৯৯৩ এম সাইফুর রহমান ১৭৬০৭ কোটি টাকা
- ১৯৯৩-১৯৯৪ এম সাইফুর রহমান ১৯০৫০ কোটি টাকা
- ১৯৯৪-১৯৯৫ এম সাইফুর রহমান ২০৯৪৮ কোটি টাকা
- ১৯৯৫-১৯৯৬ এম সাইফুর রহমান ২৩১৭০ কোটি টাকা
- ১৯৯৬-১৯৯৭ এসএএমএস কিবরিয়া ২৪৬০৩ কোটি টাকা
- ১৯৯৭-১৯৯৮ এসএএমএস কিবরিয়া ২৭৭৮৬ কোটি টাকা
- ১৯৯৮-১৯৯৯ এসএএমএস কিবরিয়া ২৯৫৩৭ কোটি টাকা
- ১৯৯৯-২০০০ এসএএমএস কিবরিয়া ৩৪২৫২ কোটি টাকা
- ২০০০-২০০১ এসএএমএস কিবরিয়া ৩৮৫২৪ কোটি টাকা
- ২০০১-২০০২ এসএএমএস কিবরিয়া ৪২৩০৬ কোটি টাকা
- ২০০২-২০০৩ এম সাইফুর রহমান ৪৪৮৫৪ কোটি টাকা
- ২০০৩-২০০৪ এম সাইফুর রহমান ৫১৯৮০ কোটি টাকা
- ২০০৪-২০০৫ এম সাইফুর রহমান ৫৭২৪৮ কোটি টাকা
- ২০০৫-২০০৬ এম সাইফুর রহমান ৬১০৫৮ কোটি টাকা
- ২০০৬-২০০৭ এম সাইফুর রহমান ৬৯৭৪০ কোটি টাকা
- ২০০৭-২০০৮ মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ৯৯৯৬২ কোটি টাকা
- ২০০৮-২০০৯ মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ৯৯৯৬২ কোটি টাকা
- ২০০৯-২০১০ আবুল মাল আবদুল মুহিত ১১৩,৮১৫ কোটি টাকা
- ২০১০-২০১১ আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৩২,১৭০ কোটি টাকা
- ২০১১-২০১২ আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৬৫,০০০ কোটি টাকা
- ২০১২-২০১৩ আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯১,৭৩৮ কোটি টাকা
- ২০১৩-২০১৪ আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা
- ২০১৪-২০১৫ আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।
- ২০১৫-২০১৬ আবুল মাল আবদুল মুহিত ২লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা
- ২০১৬-২০১৭ আবুল মাল আবদুল মুহিত ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।
এইচটি/জেএইচ
মন্তব্য করুন
ফেসবুকে লাইভের জেরে চাকরি গেল এসপির
খুলনার রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের পুলিশ সুপার শাহেদ ফেরদৌস রানাকে চাকরিচ্যুত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বহিরাগতদের অস্ত্রাগার দেখানো ও সেখান থেকে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ দেওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) এটি প্রকাশ করা হয়েছে। গেল ৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়, ২০২০ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকায় স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিন বহিরাগতকে অস্ত্রাগার পরিদর্শন করানো, অস্ত্রের বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ দিয়েছিলেন খুলনার রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের পুলিশ সুপার শাহেদ ফেরদৌস রানা। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন পুলিশ পরিদর্শক (সশস্ত্র) গোলাম মোস্তফা, পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সৈয়দ আনিসুর রহমান, এসআই (নিরস্ত্র) নুর-এ-সরোয়ার রিপন, এসআই (সশস্ত্র)-১২১২৬ আবু সাঈদ মো. ওবাইদুর রহমান এবং এসআই (সশস্ত্র) মানিক খান।
এতে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে ফেরদৌস রানার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২২ সালের ২৭ জুলাই পুলিশ অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ১০ অক্টোবর কারণ দর্শানোর জবাব দিয়ে ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করেন তিনি। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ১১ নভেম্বর তার ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিকালে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ, লিখিত জবাব, উভয়পক্ষের বক্তব্য ও উপস্থাপিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণাদি পর্যালোচনায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ড আরোপের পর্যাপ্ত ভিত্তি রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা বিধিমতে সাক্ষ্য, সাক্ষীদের জেরা, উপস্থাপিত ভিডিওসহ সব দলিলপত্রাদি পর্যালোচনা ও সরেজমিনে তদন্ত অন্তে গত ২৩ মে তার বিরুদ্ধে আনিত ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
অভিযোগ, লিখিত জবাব, শুনানিকালে উভয়পক্ষের বক্তব্য, তদন্ত প্রতিবেদন ও প্রাসঙ্গিক দলিলপত্রাদি পর্যালোচনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ প্রমাণিত হওয়ায় কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অন্য কোনো গুরুদণ্ড প্রদান করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ১৩ জুন দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়। ২০ জুলাই দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দাখিল করেন ওই পলিশ সুপার। অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ, অভিযুক্ত কর্মকর্তার দেয়া কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব, তদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রাদি পুনরায় পর্যালোচনায় তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ খণ্ডনের মতো কোনো যুক্তি তিনি উপস্থাপন করতে সক্ষম হননি।
পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলায় উপস্থাপিত ভিডিওটি সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বলা হয়। পরে ২৪ আগস্ট সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের পাঠানো প্রতিবেদনে উপস্থাপিত ভিডিওটি সম্পাদনা করা হয়নি অর্থাৎ প্রকৃত মর্মে মতামত দেওয়া হয়।
অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গুরুদণ্ড হিসেবে তাকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান’র প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। গেল ১ জানুয়ারি সরকারি কর্ম কমিশন বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের দণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্তকরণে পরামর্শ প্রদান করে।
নৌবাহিনীতে ফিরে গেলেন র্যাবের মুখপাত্র আল মঈন
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মুখপাত্র থেকে নিজ বাহিনীতে বদলি করা হয়েছে কমান্ডার খন্দকার আল মঈনকে। এর ফলে তিনি নৌবাহিনীতে যোগ দেবেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে এই তথ্য গণমাধ্যমকে জানান র্যাব ফোর্সেসের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি আ ন ম ইমরান খান।
তিনি জানান, র্যাব ফোর্সেসের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনকে নিজ বাহিনীতে বদলি করা হয়েছে। ১৮ এপ্রিল বদলিসূত্রে নিজ বাহিনীতে যোগ দিতে চট্টগ্রামে গমন করেছেন তিনি।
আ ন ম ইমরান খান আরও জানান, র্যাব ফোর্সেসের আইন ও গণমাধ্যম শাখায় দায়িত্বপালনের সময় গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা পাওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
খন্দকার আল মঈন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন কমান্ডার। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৪৫তম ব্যাচে কমিশন লাভ করেন। তাকে ২০২১ সালের মার্চে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখায় প্রায় তিন বছর কাজ করেছেন তিনি।
সব রেকর্ড ভাঙল স্বর্ণের দাম
মাত্র নয় দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বাজুস এক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা দেশের বাজারে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ৮০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বর্ণের দাম পরিবর্তন হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস। আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৭টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
এর আগে, গত ৮ এপ্রিল ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
হজ প্যাকেজের খরচ কমলো
এ বছর সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ সরকারিভাবে ১ লাখ ৪ হাজার ১৭৮ টাকা এবং বেসরকারিভাবে ৮২ হাজার ৮১৮ টাকা কমানো হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে হজ যাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
মন্ত্রী বলেন, হজ যাত্রীরা যাতে একেবারেই যৌক্তিক খরচে হজ্জ পালন করতে পারেন সে বিষয় সরকার তৎপর রয়েছে সরকার। যাত্রীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে দাপ্তরিক যে প্রক্রিয়াগুলো আরও কিভাবে সহজ করা যায় সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির পরেও হজের খরচ কমানো সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায়। প্রশিক্ষণে হজ্জের নিয়ম, হজ্জক্যাম্পে, বিমান বন্দরে, সৌদি আরবে হজ্জের সময় করণীয় ও সার্বিক ব্যবস্থা নিয়ে হজ যাত্রীদের হাতে-কলমে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হজ যাত্রীদের সব ধরনের দায়িত্ব ও সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।
বাবুলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় খুন হন মিতু
মেয়ে মাহমুদা খানম মিতুকে খুনের জন্য জামাতা সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে দায়ী করেছেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বাবুলের মা নিজে তার কাছে স্বীকার করেছেন বাবুল মিতুকে হত্যা করেছে, তাকে যেন আমরা মাফ করে দিই।
সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য দেন শাহেদা মোশাররফ। আসামি বাবুলের সামনেই সাক্ষ্যে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি। শাশুড়ি বিস্ফোরক বিভিন্ন তথ্যের বিপরীতে একেবারে নীরব ছিলেন বাবুল।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ বলেন, ২০০২ সালের ২৬ এপ্রিল বাবুল আক্তারের সঙ্গে আমার বড় মেয়ে মাহমুদ খানম মিতুর বিয়ে হয়। তখন বাবুল আক্তার বেকার ছিলেন। বিয়ের পর শুরু থেকেই তাদের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না, মোটামুটি ছিল। পরে বাবুল পুলিশে যোগদান করে। এরপর কক্সবাজারে এসপি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) হিসেবে বদলি হয়। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে।
ভিন্ন নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় বাবুলকে দেখে ফেলেন মিতু:
শাহেদা মোশাররফ বলেন, একদিন বাবুল আক্তার মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠে। পাশের রুমে ওই নারীও ওঠেন। ওই নারীর রুমে বাবুল আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় মিতু দেখে ফেলে। তখন মিতু জানতে চায় সে এখানে কী করছে? বাবুল মিতুকে বলে, বিদেশে যাওয়ার জন্য ল্যাপটপে কাজ করছে। তাদের দুজনকে এ অবস্থায় দেখে মিতুর খারাপ লাগে। সে কিছুক্ষণ ওখানে ছিল। বাচ্চারা একা থাকায় মিতু তাদের রুমে চলে আসে। বাচ্চারা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর সেও ঘুমিয়ে পড়ে।
‘রাত ৩টার দিকে মিতুর ঘুম ভেঙে যায়। তখনও বাবুল আক্তার মিতুর রুমে ছিল না। মিতু আবার ওই নারীর রুমে গেলে তাদের দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। মিতু রুমে এসে কেঁদে কেঁদে আমাকে ফোন দেয়। তখন আমি তাকে বলি, তুই চলে আয়। মিতু তখন বলে, আমার ছেলে-মেয়েরা আমাকে খারাপ মনে করবে। তাই আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি।’
এক বাসায় আলাদা রুমে থাকতেন বাবুল-মিতু :
শাহেদা মোশাররফ বলেন, চট্টগ্রামে বদলি হওয়ার পর আমার মেয়ের সঙ্গে এক বাসায় থাকলেও বাবুল আলাদা রুমে থাকত। বাবুল আক্তার গভীর রাত পর্যন্ত অনেক মেয়ের সঙ্গে কথা বলত। মিতু সেগুলো আড়ি পেতে শুনত। বাবুল ২০১৪ সালে মিশনে যায়। মিশনে যাওয়ার সময় তার একটি মোবাইল বাসায় রেখে যায়। ওই মোবাইলে বাবুল আক্তারকে দেওয়া ওই ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারীর মেসেজ খুঁজে পায় মিতু। একইসঙ্গে বাবুল আক্তারকে ওই নারীর উপহার দেওয়া দুটি ইংরেজি বই পায়। মিতু মেসেজগুলো দুটি বড় পৃষ্ঠা ও দুটি ছোট পৃষ্ঠায় লিখে রাখে।’
তিন-চারবার ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ মিতুর :
শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে আমার ছোট মেয়ের বাসায় মিতু ও তার ছেলেমেয়েরা বেড়াতে যায়। মিতু তখন আমাকে পৃষ্ঠায় লেখা মেসেজগুলো দেয়। এসব আমাদের বলায় বাবুল মিতুর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এরপর মিতু তিন-চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মিতু চট্টগ্রামের বাসা থেকে ঢাকায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। ২০১৬ সালের জুনের ৪ তারিখ রাতে মিতু আমাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে, আম্মা মাহিরের স্কুল থেকে ম্যাসেজ এসেছে। আমাকে খুব ভোরে মাহিরকে নিয়ে স্কুলে চলে যেতে হবে। ৫ জুন সকালে মিতুর বাসার পাশ থেকে একজন নারী আমাকে ফোন দেন।’
ওই নারী আমাকে বলেন, মিতু গাড়ির সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়ে অ্যাকসিডেন্ট করেছে। আমি বলি, মা তুমি মিতুকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করাও। আমি টাকা নিয়ে আসছি। এরপর মাহির (মিতুর ছেলে) একজনের মোবাইল থেকে কল দিয়ে বলে, নানু, আম্মুকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়েছে, গুলি করেছে। তখন আমি মাহিরকে বলি, তোমার আম্মু কি কথা বলছে? মাহির বলে, না, আম্মু তাকিয়ে আছে শুধু।’
‘আমি মাহিরকে বলি, তুমি তোমার বাবাকে কল দিয়েছ? মাহির বলে, হ্যাঁ নানু, ফোন দিয়েছি, তবে বাবা কথা বলে না। আমি মাহিরকে বলি তোমার আম্মুকে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখো। এরপর আমি, আমার ছোট দুই দেবর, জা ও ছোট মেয়েকে নিয়ে বিমানযোগে চট্টগ্রাম চলে আসি। মিতুকে যেখানে খুন করা হয়েছে, আমি সেখানে যাই। এরপর আমি মিতুর বাসায় আসি। ওখানে শুনি মিতু (লাশ) হাসপাতালে আছে।’
শাহেদা বলেন, ‘বাসায় যাওয়ার পর মাহির আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলে, নানু আমার মা চলে গেছে। মিতুকে (লাশ) এরপর হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় পুলিশ লাইনে। সেখানেই তার জানাজা হয়। পুলিশ লাইনে জানাজা হওয়ার পর আমার দুই দেবর মিতুর লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা নিয়ে যায়। আমরা ফ্লাইটে করে ঢাকা যাই। এরপর আমাদের বাড়ি মেরাদিয়াতে মিতুর জানাজা হয়। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।’
এসময় তিনি জানান, মিতু মারা যাওয়ার পর ছেলে মাহির বাবুল আক্তারকে তিনবার কল দিয়েছিল। কিন্তু বাবুল কল রিসিভ করলেও কোনো কথা বলেননি। শাহেদাও একবার কল দিয়েছিলেন, কিন্তু বাবুল সেটি রিসিভ করেননি।
মিতুর ব্যবসার টাকায় মিতুকে খুন:
শাহেদা মোশাররফ আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে বলেন, বাবুল আক্তার বিদেশে থাকার সময় তিন-চারবার দেশে আসে। কিন্তু তখন একবারও বাসায় আসেনি। তখন থেকে মিতুকে মারার পরিকল্পনা করে এবং টাকা লেনদেন করে। মিশন থেকে এসে সে চায়না যায় টিম নিয়ে। চায়নাতে বসেও মিতুকে মারার চেষ্টা করেছে। পরিকল্পনা করে।
শাহেদা বলেন, মিতুর একটি ব্যবসা ছিল। ব্যবসার তিন লাখ টাকা দিয়েই মিতুকে খুন করায় বাবুল। মিতু মারা যাওয়ার পর বাবুল আক্তার আমাদের বাসায় ওঠে। ছয়মাস আমাদের বাসায় ছিল সে। সেখানে বসে সে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ২৪ জুন (২০১৬) বাবুল আক্তারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর বাবুল সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে আসে। আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করি, চাকরি ছাড়লে কেন? তখন সে বলে, মিতু খুন হওয়ার কারণে আমাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। আমি তাকে বলি, তোমার চাকরি ছাড়ার বিষয় কি মিতুর খুনের বিচারের জন্য?
‘বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করার জন্য মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্র কিনে দেয়। একথা বলেছে মুসার স্ত্রী। মুসার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তুমি মিতুকে খুন করেছ ? তখন মুসা তার স্ত্রীকে বলে, আমি খুন না করলে বাবুল আক্তার আমাকে ক্রসফায়ার দেবে। বাবুল আক্তার আমাদের বলেছিল, মিতুর খুনের আসামিরা গ্রেপ্তার হয়েছে। আমি ক্রসফায়ার দিতে বলেছি।’
শাহেদা আরও বলেন, আসামি ওয়াসিম, আনোয়ার গ্রেপ্তার হয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই ভোলা ধরা পড়ে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর সে আদালতে জবানবন্দি দেয়, বাবুল আক্তারের নির্দেশেই মুসা মিতুকে খুন করেছে। মিতু মারা যাওয়ার দেড় মাস পর সে যে বাসায় ছিল ওখানে মিলাদ পড়ানোর জন্য আমরা চট্টগ্রাম আসি। এর কিছুদিন পর আসামি কালু ও শাহজাহান গ্রেপ্তার হয়। আমরা চট্টগ্রাম আসার পরে অবস্থা দেখে মনে হয়েছে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও নিজেই মিতু হত্যার মামলা করেছে।’
‘বাবুলের মা বলছেন তার ছেলেকে যেন মাফ করে দিই’
শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘১৫ দিন আগে বাবুল আক্তারের মা আমাকে কল দিয়ে বলেছেন, বেয়াইন, মিতুকে আমার ছেলেই খুন করেছে। তাকে আপনি মাফ করে দিন। আমি তাকে বলি, বাবুল মরলে কি এ কথা বলতেন?’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল।
এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটিতেও অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
গত বছরের ১৩ মার্চ বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বর্তমানে মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
ইতিহাস গড়লেন বাঁধন
নতুন এক ইতিহাস গড়লেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। এখন থেকে দেশে তিনিই একমাত্র মা, যিনি পেয়েছেন সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব। এর আগে কোনো নারী এককভাবে সন্তানের অভিভাবকত্ব পাননি।
সোমবার (২২ এপ্রিল) হাইকোর্টের এক আদেশে সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পান আজমেরী হক বাঁধন। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
এদিন নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯(খ) ধারা অনুসারে কোনো নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অন্য কারও পক্ষে সেই নাবালকের অভিভাবক হওয়ার সুযোগ নেই।
আইনের এই ধারাটি সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা এক রুলে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তার সন্তানের অভিভাবকত্ব পেয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো উদাহরণ নেই যে নারীরা সন্তানের অভিভাবকত্ব পাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এটা অনেক বড় একটা অর্জন। এই একটি ঘটনা ছাড়া আর কাউকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
উচ্চ আদালতের এই রুল জারির খবরে দারুণ খুশি বাঁধন। তিনি বলেন, এই অর্জনটা শুধু আমারই থাকুক তা চাই না। চাই বাংলাদেশের সব মেয়ের অধিকার থাকুক তার সন্তানের ওপর।
২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান একমাত্র কন্যাসন্তান মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব দিয়েছিলেন বাঁধনকে।
সে সময় বাঁধন এই রায়ের মাহাত্ম্য পুরোপুরি বুঝতে পারেননি। সময়ের সঙ্গে বদলেছে তার অনুধাবন শক্তি। বুঝতে পেরেছেন এ রায়ের গুরুত্ব।
বাঁধন বলেন, আদালত যখন রায়টি দিয়েছিলেন, সে সময় এর গুরুত্ব ততটা বুঝতে পারিনি। বাচ্চার সব দেখভাল আমিই করতাম, তাহলে আমি কেন তার অভিভাবক হতে পারব না। সন্তানের দায়িত্ব তার বাবা কখনো পালন করেনি। এমনকি আদালতে সেটা প্রমাণও করতে পারেনি। আর তাই আদালত অভিভাবকত্বের ভার আমার ওপরেই দিয়েছিলেন।
অভিভাবকত্ব আইন নিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, সন্তানের অভিভাবকত্বের ক্ষেত্রে বাবা বেঁচে থাকতে কখনো মাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয় না। যদি বাবা না পান সে ক্ষেত্রে দাদা-চাচা, এমনকি নানা-মামারা অভিভাবকত্ব পান। অনেক পরে আসে মায়ের নাম। যে কারণে আমারটা ব্যতিক্রমী একটা রায় ছিল।
বাঁধন বলেন, আমাদের প্রচলিত আইনে একটা লুপ হোল কিন্তু আছে, মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া যাবে, তবে যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে সেটা খুবই কঠিন। কাস্টডি আর অভিভাবকত্ব এক নয়। অভিভাবকত্ব সম্পূর্ণ আলাদা একটা বিষয়। আমাদের আইনে বাবা ন্যাচারাল গার্ডিয়ান, অভিভাবকত্বের প্রশ্নে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত মায়ের অস্তিত্ব নেই আসলে। এসব জায়গায় অনেক সংশোধনী আনা প্রয়োজন বলে আমার মনে হয়।
পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া সায়রা এখন বুঝতে শিখেছে। সারাক্ষণ থাকে মায়ের আশেপাশেই। সময় পেলে মা-মেয়ে একসঙ্গে ঘুরে বেড়ায় দেশ-বিদেশও। মায়ের এই অর্জন নিয়ে মেয়ের কোনো ধারণা আছে?
বাঁধন বলেন, সায়রার অত ধারণা নেই। সে শুধু জানে তার মা তাকে কাছে রাখার জন্য লড়াই করেছে এবং জিতেছে। সঙ্গে এটাও জানে, তার মা একজন ফাইটার।
তাপমাত্রা নিয়ে দুঃসংবাদ
গত কিছুদিন ধরেই দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলজুড়ে বইছে তাপপ্রবাহ। কোথাও কোথাও তাপপ্রবাহ তীব্র থেকে অতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় সারা দেশের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে বাড়তে পারে ভ্যাপসা গরমও। একই সঙ্গে দেশের দুই বিভাগে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকার আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকতে পারে। আজ সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। পরবর্তী পাঁচ দিনে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।
এর আগে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায়। এটিই চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। একই সঙ্গে রাজশাহী এবং পাবনার ঈশ্বরদীতেও দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে। শুক্রবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।