• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

৫ মানব পাচারকারীকে ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ

আরটিভি নিউজ

  ২৭ নভেম্বর ২০২০, ১৩:৫৮
5 Interpol red notice to catch human traffickers
ফাইল ছবি

৫ বাংলাদেশি মানব পাচারকারীকে ধরতে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। এর মধ্যে ৩ জন আগে থেকে লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। আর বাকি ২ জনের অবস্থান সম্পর্কে এখনো কিছু জানতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত বুধবার (২৫ নভেম্বর) এদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করা হয়।

এর আগে গত ৬ নভেম্বর মিন্টু মিয়া নামে আরও ১ মানব পাচারকারীর নামে রেড নোটিস জারি করা হয়। এ নিয়ে মোট ৬ বাংলাদেশি মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করলো ইন্টারপোল। গত ২ জুন তাদের নামে রাজধানীর পল্টন ও বনানী থানায় মানব পাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) এসব জানিয়েছেন ইন্টারপোল বাংলাদেশ শাখার ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম।

তিনি বলেন, এবারই প্রথম বাংলাদেশি কোনো মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারির ঘটনা ঘটল। যে ৫ জনের নামে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছেন তানজিলুর ওরফে তানজিলুম ওরফে তানজিদ। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে। তিনি আগে থেকেই লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। একই উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের জাফর ওরফে জাফর ইকবালের নামেও রেড নোটিশ জারি হয়েছে। তিনিও আগে থেকেই লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। লিবিয়ায় আগে থেকে অবস্থান করা স্বপনের নামেও রেড নোটিশ জারি হয়েছে। তার বাড়িও একই উপজেলার শম্ভুপুরে।

এ ছাড়া মাদারীপুর সদরের মধ্যাহাউসদি গ্রামের নজরুল মোল্লা এবং ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের শাহাদাত হোসেন। এ ২ জনের অবস্থান এখনো অজানা। পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি সূত্র জানিয়েছে, এই রেড নোটিশের পর ওই ব্যক্তিরা যে কোনো দেশের স্থলপথ, নৌপথ ও আকাশপথের বন্দরের গেলেই গ্রেপ্তার হবেন। এরপর সেই দেশের আইনকানুন পর্যালোচনা করে দেশে তাদের ফেরত আনা সম্ভব। এ পর্যন্ত ১৫ বাংলাদেশিকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফেরত আনা গেছে।

সূত্র জানায়, আকাশ মিয়া নামে এক ভুক্তভোগীর ভাই জানিয়েছেন, আগেই নোটিশ প্রাপ্ত মিন্টু মিয়া লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ ও ঢাকার পল্টনে ২ টি মামলা হয়েছে। মিন্টু মিয়া কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার বোছামারা গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দিনের ছেলে। তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর- ১৯৭৯৪৮১১১৮৩৬২৯৩২০ এবং পাসপোর্ট নম্বর- বিপি০৩৭৭৭০৪। তিনি ২০১৮ সালে দুবাই হয়ে লিবিয়ায় গেছেন। এখন তার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে লিবিয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮১ জন মানব পাচারকারীকে চিহ্নিত করেছে সিআইডি। এর মধ্যে ৩১ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। আর বিদেশে অবস্থান করছে ২৭ জন। বিদেশে অবস্থানকারীদের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। লিবিয়ার গোলাগুলির ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোর মধ্যে ৪ টির চার্জশিট প্রস্তুত করা হয়েছে।

এ ছাড়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে লিবিয়ার বাইরের তদন্তাধীন ৩৮৭ মানব পাচারকারীর। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, ২৮ মে অবৈধ পথে ইতালি পাঠানোর সময় লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানব পাচারকারীরা গুলি করে হত্যা করে ৩০ জনকে, যেখানে ছিলেন ২৬ বাংলাদেশি। এ ঘটনায় স্থানীয় দালালদের ধরতে তৎপর হয় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ৪ জুন রাতে ১৬ জনের নামে পল্টন থানায় মামলা করেন লিবিয়ায় ভুক্তভোগী যুবক রাকিবের বাবা মান্নান মুন্সী। তার বাড়ি শরীয়তপুরে। ৭ মাস আগে ২ দফায় মোট ৭ লাখ টাকায় দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় গিয়ে আটকা পড়েন রাকিব। একই সময় পল্টন থানায় ৩৬ জনের বিরুদ্ধে এবং বনানী থানায় ৩৩ জনের বিরুদ্ধে পৃথক ২ টি মামলা হয়। এর আগে ২ জুন পল্টন থানায় ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। এদের মধ্যে রেড নোটিস জারি হওয়া ৬ জনের নামও রয়েছে। ঢাকা থেকে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা প্রথমে ভিজিট ভিসায় বাংলাদেশিদের শ্রীলঙ্কায় পাঠায়। সেখান থেকে দুবাই নেয়। আবার কখনো কখনো মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে দুবাই হয়ে লিবিয়ার বেনগাজিতে নিয়ে আসে। এরপর সুযোগ বুঝে তারা তাদের ইউরোপে পাঠায়। এর আগে ভুক্তভোগীদের ১টি ঘরে জিম্মি করে রাখা হয়।

কেএফ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh