দুদকের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন: দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ কমিশনের কর্মকর্তাদের দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তের গুণগত মান নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণ থেকে প্রসিকিউশন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে মার্কিং সিস্টেম স্বচ্ছতার সাথে প্রয়োগ করতে হবে যাতে অভিযোগের প্রাথমিক বস্তুনিষ্ঠতা, ব্যাপকতা, আর্থিক সংশ্লেষের পরিমাণ সর্বোপরি দুদক আইনের তফসিল ও বিদ্যমান বিধি-বিধানের সঠিক প্রতিফলন ঘটে। অনুসন্ধানের পর যদি দেখা যায় অভিযোগটি ভিত্তিহীন বা দুদক আইনের তফসিলভুক্ত নয়, তাহলে অভিযোগসংশ্লিষ্ট ওই ব্যক্তি নিজেকে তাত্ত্বিকভাবে হয়রানির শিকার বলেও মনে করতে পারেন। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে অভিযোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার বিষয়গুলোও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। অনাহুতভাবে দুদকের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন, এ বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।
আজ বুধবার (১৮ নভেম্বর) দুদক পরিচালক ও মহাপরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এক ভার্চুয়াল সভায় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ আহ্বান জানান।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রতিটি অভিযোগ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অনুসন্ধান বা তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। বেশ কয়েকবার এ বিষয়ে প্রশাসনিক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। যদিও পেন্ডিং অনুসন্ধান বা তদন্তের সংখ্যা কমেছে তবে এ সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থা জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে সহায়ক নয়।
পরিচালকদের কাছ থেকে পাওয়া পেন্ডিং অনুসন্ধান ও তদন্তের পরিসংখ্যান দেখে দুদক চেয়ারম্যান আবারও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি পরিচালকদের উদ্দেশ্যে বলেন, উপযুক্ত কারণ ছাড়া, ক্রাস প্রোগ্রামের মাধ্যমে রাত-দিন কাজ করে এসব পেন্ডিং ইস্যু আগামী সাতদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। কোয়ারি বা অন্য কোনো ছুতোয় অভিযোগের অনুসন্ধানের দীর্ঘসূত্রতা হয়রানির নামান্তর।
তিনি বলেন, কমিশনের ভাবমূর্তি উন্নয়নে আপনাদের কাজের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। তথ্যপাচারের মতো প্রশাসনিক অপরাধ যাতে না ঘটে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। দুদকের টেকসই প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার জন্য কমিশন বহুমুখী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে। দেশে-বিদেশে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, রেশন সুবিধা, ঝুঁকি ভাতা, যাতায়তের জন্য যানবাহনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। কমিশনের কর্মকর্তাদের প্রণোদনামূলক এসব কার্যক্রম প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বিকাশে ভূমিকা রাখলেও টেকসই সক্ষমতার জন্য ইনহাউস যোগাযোগ তথা নলেজ শেয়ারিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। তাই এখন থেকে পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণ তাদের অধীন কর্মকর্তাদের নিয়ে নিয়মিত নলেজ শেয়ারিং বৈঠক করবেন। পাশাপাশি পরিচালকগণ সবচেয়ে সিনিয়র পরিচালকের নেতৃতে মাসে অন্তত একবার পারস্পরিক নলেজ শেয়ারিং বৈঠক করবেন। এছাড়া রেকর্ডরুম বিধি অনুযায়ী তা সংরক্ষণ করতে হবে। সকল রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আজকের সভায় কমিশনের সকল মহাপরিচালক ও পরিচালক উপস্থিত থেকে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
কেএফ
মন্তব্য করুন