হাসপাতালে এএসপি আনিসুল হত্যা: আরও ২ জনের স্বীকারোক্তি
রাজধানীর আদাবরে মানসিক ‘মাইন্ড এইড’ হাসপাতাল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আরও ২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন, মাইন্ড এইডের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয় ও ওয়ার্ডবয় সজীব চৌধুরী। আজ সোমবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ-উর-রহমান তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ মামলায় গতকাল রোববার (১৫ নভেম্বর) একই আদালতে স্বীকারোক্তি দেন শেফ মাসুদ ও ওয়ার্ডবয় অসীম চন্দ্র পাল।
সেদিনই আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ মামলার আসামি মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা তুজ-যোহরা ময়নাকে ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠান। এর আগে গত ১০ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম মামলার ১০ আসামিকে ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামীরা হলেন, মাইন্ড এইডের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কোঅর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মাসুদ, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ ও ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান। এর মধ্যে রিমান্ড চলাকালে ৪ জন স্বীকারোক্তি দিলেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজে উপস্থিত ১০ জনের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুল মাইন্ড এইড হাসপাতা যান। ওই হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধস্তাধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবার।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুল করিমকে ৬ থেকে ৭ জন টেনে-হিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা ২জন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমের হাত পেছনে বাঁধা হয়। ৪ মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় সোমবার রাতে প্রথমে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আরও ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
কেএফ
মন্তব্য করুন