• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ছাত্রাবাসে ধর্ষণ: আসামি গ্রেপ্তারে মুন্সিয়ানা দেখালো র‌্যাব-পুলিশ

কাজী ফয়সাল, আরটিভি নিউজ

  ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২২:৫২
ছাত্রাবাসে ধর্ষণ, আসামি গ্রেপ্তারে মুন্সিয়ানা দেখালো র‌্যাব-পুলিশ
ফাইল ছবি

এমসি কলেজ হোস্টেলে নববধূকে ধর্ষণ মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারে এক অন্যরকম নজির স্থাপন করলো পুলিশ এবং এলিট ফোর্স র‌্যাব। চুল ফেলে, দাড়ি ফেলে, লুঙ্গি পরে হরেক রকমের কৌশল নিলেও র‌্যাব-পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ধর্ষণ মামলায় এজহারভুক্ত আসামিরা। ঘটনা ঘটার ৩ দিনের মাথাতেই মামলার ৯ আসামির মধ্য ৮ জনকেই গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে এজহারনামীয় সকলেই ধরা পড়েছে। অজ্ঞাতনামা ৩ আসামির মধ্যে ২ জনই ধরা পড়েছে। এখন কেবল ১ আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য হন্যে হয়ে মাঠে দৌড়চ্ছে র‌্যাব-পুলিশের সদস্যরা। তীক্ষ্ণ নজরদারী ও ব্যাপক অভিযানের ফলে এজহারভুক্ত আসামিদের ৩ জন ছদ্মবেশ নিয়েও গ্রেপ্তার এড়াতে পারেনি। এনিয়ে অনেকেই সাধুবাদ জানাচ্ছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দু’টিকে।

এই মামলার এজহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমেদকে গ্রেপ্তারের সময় হঠাৎ করে দেখে চেনার উপায় ছিল না। কয়েকদিন আগেও যার বড় বড় দাঁড়ি আর মাথা ভর্তি চুল ছিল, সেই একই যুবককে গ্রেপ্তারের সময় দাঁড়ি চুল পাওয়া যায়নি। র‌্যাব বলছে, ধর্ষণের মামলার আসামি হওয়ার পরপরই গ্রেপ্তার এড়াতে সেই তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমদ এমন ছদ্মবেশ নেয়। আজ মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের দিরাই থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। র‌্যাব-৯ এর গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা এএসপি ওবাইন রাখাইন জানান, গ্রেপ্তার এড়াতে মাথার চুল ফেলে ন্যাড়া হয়েছিলে তারেক। ক্লিন শেভ করে বড় বড় দাঁড়িও ফেলে দেন তিনি। গ্রেপ্তারের সময় তারেক খালি গায়ে লুঙ্গি পরা অবস্থায় ছিল।

একই মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে মুখের দাঁড়ি কেটে ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল। তবুও তার শেষ রক্ষা হয়নি। গত রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার সীমান্তবর্তী এলাকা একটি খেয়াঘাট থেকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সিলেটের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ ও জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের নির্দেশনায় ছাতক থানার পুলিশ অফিসার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্ব ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষক সাইফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ছদ্মবেশ নিয়ে ধরা পড়া আরেক আসামি হলো মাহফুজুর রহমান মাসুম। তিনি এই ধর্ষণ মামলার ৫ নম্বর আসামি। কানাইঘাট থানার ওসি শামসুদ্দোহা জানান, গত সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে লুঙ্গি পরে পালাতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে ধরা পড়ে। গ্রেপ্তার এড়াতে মাসুম লুঙ্গি পরে খালি পায়ে জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুরে ঘোরাফেরা করছিল।

উল্লেখ্য, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে প্রাইভেট গাড়িতে করে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক নববধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দু’জন।

এ ঘটনায় সিএমপি’র শাহপরান থানায় ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় গত রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ। এ সময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালত গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেন।

কেএফ/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কনসার্টে নিয়ে তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণ, মূলহোতা গ্রেপ্তার
X
Fresh