‘পেঁয়াজের ঝাঁজেই বেশি কাঁদছে মানুষ’ (ভিডিও)
সেই একবছর পরেই ধাক্কা দিলো পেঁয়াজ। সেবারও পূর্ব ঘোষণা ছাড়া ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার দেশে হাহাকার লেগেছিল। গত সোমবার যখন বাংলাদেশ বন্ধু রাষ্ট্র ভারতকে পূজার উপহার হিসেবে ১২ টন ইলিশ পাঠালো, ঠিক সেদিনই ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এনিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে জনমনে।
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার পরই দেশে একদিনেই পেঁয়াজের দাম এক তৃতীয়াংশ বেড়ে গেছে। গেল সোমবার ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও তার পরদিন মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে।
মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ কিনতে রাশেদুল হক নামে এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের ঝাঁজেই চোখের চল পড়ছে বেশি। পেঁয়াজ এখন এক আতংকের নাম। কখন যে সবাইকে কাঁদায় তা এখন বলা মুশকিল।
মেহেদি হাসান রবিন নামে এক ক্রেতা বলেন, একদিন আগে পেঁয়াজ কিনেছি ৬০ টাকায়, সেটা কিভাবে একরাতে ১০০ টাকা হয়? রপ্তানি বন্ধ হলেই বা কি, পেঁয়াজ তো আগেই কেনা। তাহলে দাম বাড়ে কিভাবে? আর যদি বিক্রেতারা দামই বাড়ান তাহলে প্রশাসনের কাজ কি? তারা কেন আটকাছেন না?
রিয়াজুল ইসলাম লিটন নামে একজন আক্ষেপ করে বলেন, রাতেই ফেসবুকে দেখেছিলাম পেঁয়াজ আসছে না ভারত থেকে। যখন দেখেছি তখন পেঁয়াজ কেনার মতো অবস্থা ছিল না। যখন সকাল হলো তখন দেখি পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের দোকানদারার দাম বাড়াতে ওস্তাদ।
জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২৩ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। তবে নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর প্রায় ১৯ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ থাকে। অথচ চাহিদা রয়েছে ৩০ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজের। বাকি ১১ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়, যার বেশিরভাগই আসে ভারত থেকে।
আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমাদের ৫ লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ আছে। আর এক মাস সময় পেলেই আমরা বিকল্প বাজার থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আনতে পারবো।
তবে বাংলাদেশের ক্রেতারা ভয় পাচ্ছেন, পরিস্থিতি সামাল দেয়া না গেলে গত বছরের মতো এবারও পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গেলবার পেঁয়াজের দাম ৩০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
এদিকে এবার সরকারিভাবে কম দামে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। পাশাপাশি ভারত ছাড়াও বিকল্প বাজারের খোঁজ নিতে শুরু করেছে। টিপু মুনশি জানান, গত বছর থেকে আমাদের তো কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেবারের মতো পরিস্থিতি এবার হবে না। কারণ দেশে তো পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে।
তবে যে যতই আশা দিক না কেন সাধারণ মানুষ এখন এক প্রকার পেঁয়াজ নিয়ে ভয়েই আছে। ক্রেতারা আরটিভি নিউজকে জানান, একবারে উচ্চবিত্ত ছাড়া দেশে যেকোনো জিনিষেরেই দাম বাড়লে মানুষকে সেটি ভোগায়। আরও পেঁয়াজের মতো নিত্যপণের জিনিষের দাম বাড়লেতো আর কথাই থাকে না।
এসএস
মন্তব্য করুন