• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সন্তানের সঙ্গে গড়ে তুলুন বন্ধুত্ব

আবির আহমেদ

  ২৮ অক্টোবর ২০১৭, ১২:১৯

বাবা-মার কাছে সন্তানের চেয়ে বড় আর কিছুই হতে পারে না। তাদের ঘিরেই তো সমস্ত পরিকল্পনা সব স্বপ্ন। কিন্তু সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলা যে চাট্টিখানি কথা নয়!

শৈশব কিংবা কিশোর বয়সে একটি ছেলে বা মেয়ের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হলো ‘মা’ তারপর ‘বাবা’। সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পাতানোর মূলমন্ত্র হচ্ছে বন্ধুত্ব। সন্তানের সঙ্গে বন্ধু হওয়ার প্রাথমিক উদ্যোগ বা দায়িত্ব নিতে হবে বাবা-মা দুজনকেই।

সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুললে ক্ষতি নেই। বরং সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে ভবিষ্যতে তার কর্মকাণ্ড-নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।

সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে বাবা-মায়ের কী করা উচিত জেনে নিন।

সন্তানকে জানুন : বাবা-মা হিসেবে সবার আগে প্রয়োজন সন্তানকে জানা, তাকে বোঝা। মায়ের সঙ্গে সন্তানের নাড়ির টান থাকে যার কারণে মায়ের চেয়ে সন্তানকে ভালো কেউ জানে না। সন্তানের চাওয়া-পাওয়া, জীবনের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি, ধর্মীয় মূল্যবোধ, মানবতা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, পছন্দ-অপছন্দ জেনে নেয়া গেলে তাকে বোঝা সহজ হয়। তাহলে খুব সহজেই নিজের মতামত সন্তানকে বোঝানো যাবে।

সময় দিন ও সময় নিন : নিজেদের ব্যস্ততার মাঝেও সন্তানকে সময় দিন। একটু সময় দিলেই সন্তান ভুলে যাবে তার সারাদিনের অপ্রাপ্তি। যেভাবেই হোক নিজেকে জড়িত করুন তার জীবনের সঙ্গে কিন্তু কিছুটা ছাড় দিয়ে। এভাবে সে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভেবে নিতে পারবে আপনার জীবনে। জানতে শিখবে আপনার ব্যস্ত জীবনে তার মূল্য।

ঘরেই পিকনিক : চাকরি করে মা হিসেবে হয়তো খুব একটা রান্নাঘরে যাবার সময় হয়ে ওঠে না। অন্যভাবে পরিকল্পনা করতে পারেন। ছুটির দিনগুলোতে সবাই মিলে প্ল্যান করতে পারেন কোনো নতুন রেসিপির। একসঙ্গে রান্না করলেন হাসি ঠাট্টায়। আবার সন্তান ছোট হলে, ওকে বললেন একটু ডিম ভেঙে দিতে বা চামচটা এগিয়ে দিতে। তার অংশগ্রহণই যেন মূল কথা হয়। দেখবেন, খাওয়া যতই খারাপ হোক আনন্দটা কিন্তু নির্মল হবে। আর বোনাস হিসেবে আপনি পাবেন একান্ত পারিবারিক মুহূর্ত, সন্তানের দায়িত্ববোধ জ্ঞান।

রিওয়ার্ড সিস্টেম : খুব বেশি ছোট বাচ্চারা কোনো নিয়ম কানুনের ধার ধারে না। তাদের যখন যা চাই, তা যেন তখনই চাই। এ ক্ষেত্রে চাইলেই পাওয়া যায় এই মনোভাব দিয়ে সন্তানকে বড় করে তোলা ঠিক হবে না। তার সামনে শর্ত রাখতে পারেন এই কাজটুকু শেষ করলে তার চাহিদা পূরণ করা হবে। ‘রিওয়ার্ড সিস্টেম’ এর মাধ্যমে তাকে গড়ে তোলা গেলে সে মূল্য দিতে শিখবে চাহিদার।

বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন : গ্যাজেটের যুগে সন্তানের বইপ্রীতি আসলে একটু কঠিনই বটে। বাস্তবসম্মতভাবে চিন্তা করলে আমাদের ভবিষ্যত থেকে বইয়ের আলমারি ব্যাপারটা হয়তো ওঠেই যাবে। কিন্তু বাবা-মা হিসেবে দায়িত্বপালনে কোনো অবহেলা করা ঠিক হবে না। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়েও আমাদের বইয়ের প্রতি ভালবাসা ধরে রাখতে হবে। যা ছড়িয়ে দিতে হবে সন্তানের মধ্যেও। সংগ্রহে রাখার মত বই জমা করুন। যখনই সময় পান, বই পড়ুন। সন্তানের সঙ্গে নতুন কী পড়লেন তা শেয়ার করুন, তার গল্প শুনুন। এতে করে শিকড়ের সঙ্গে তার সংযোগটা গড়ে উঠতে পারে।

এক্সট্রাকারিকুলার অ্যাক্টিভিটি : উৎসাহিত করুন সন্তানকে। সারাদিন মুখ বুজে গ্যাজেটের মাঝে না থেকে তাকে অন্য কিছুতে নিযুক্ত করুন। তাকে উৎসাহ প্রদানের উদ্দেশে নিজেও যুক্ত হোন। যেমন, নতুন ভাষা শিক্ষায় আগ্রহ থাকলে বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের খবর তাকে দিতে পারেন। রান্নার শখ থাকলে ভর্তি করে দিন কোনো বেকিং বা কুকিং ক্লাসে। সঙ্গে আপনিও ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। ফটোগ্রাফির ভূত মাথায় থাকলে কোনো ফটোগ্রাফি কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। ঘুরে বেড়ানোর পোকা মাথায় চেপে থাকলে সঠিক সময়ে তাকে মেম্বার করে দিতে পারেন কোনো ট্রাভেল গ্রুপের সঙ্গে। এসব কাজে নিযুক্ত থাকলে হয়তো জীবনটা এত প্রযুক্তি নির্ভর হবে না। বেড়ে ওঠার প্রকৃত আনন্দ উপভোগ করতে শিখবে।

আরকে/জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্ব শক্তিশালী হয়েছে : শি জিনপিং
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের শর্তহীন বন্ধুত্ব এখনও বিদ্যমান : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ব্যবসা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে বাংলাদেশ-কানাডা : স্পিকার
X
Fresh