• ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আসছে বৈশাখ, মানিকগঞ্জে প্রস্তুত হাতি-ঘোড়া

জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, মানিকগঞ্জ

  ১২ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:১৫

বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নানা আয়োজন নিয়ে এখন ব্যস্ত বাংলাদেশের মানুষ। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা-উপজেলায় আয়োজন করা হবে বৈশাখের বিভিন্ন অনুষ্ঠান।

পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাবে মেলা।

এ মেলা অত্যন্ত আনন্দঘন হয়ে থাকে। স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারুপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব প্রকার হস্তশিল্পজাত ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী এই মেলায় পাওয়া যায়। এছাড়া শিশু-কিশোরদের খেলনা, মহিলাদের সাজ-সজ্জার সামগ্রী এবং বিভিন্ন লোকজ খাদ্যদ্রব্য যেমন: চিড়া, মুড়ি, খৈ, বাতাসা, এবং চিনির তৈরি হাতি, ঘোড়া, মুকুট, মাছ, নৌকা, পাখিসহ বিভিন্ন ধরনের সাঁজ। ইতোমধ্যে এসব প্রস্তুত করা হয়ে গেছে।

মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলার প্রায় সব গ্রামেই বিভিন্ন ধরনের মেলা হয়ে থাকে। এসব মেলায় আকর্ষণীয় খাদ্য সামগ্রীর তালিকার শীর্ষে থাকে বিন্নি, খই আর গুড়ের তৈরি বাতাসা আর চিনির তৈরি বিভিন্ন ধরণের সাঁজ।

গ্রাম-বাংলার এইসব মেলায় গুড় ও চিনি দিয়ে বাতাসা এবং সাঁজ তৈরি করে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাচ্ছেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের ভাটারা গ্রামের কারিগররা। তাদের তৈরি এসব খাদ্যসামগ্রী জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ও খুচরাও বিক্রি করা হয়।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসিয়ে শুরু হলো বৈসাবি
--------------------------------------------------------

সম্প্রতি ওই গ্রামে যেয়ে দেখা যায়, কারিগররা চুলায় আখের গুড় জাল দিচ্ছেন। কেউ কেউ বিন্নি ধানের খই ভাজছেন। আবার অনেকেই ব্যস্ত চিনি দিয়ে হাতি, ঘোড়া, বাতাসাসহ অন্যান্য সাঁজ তৈরিতে।

সেখানকার কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা বছরই বিভিন্ন মেলায় গুড় ও চিনির তৈরি এই সাঁজের চাহিদা থাকে। তারা বংশ-পরম্পরায় এই সাঁজ তৈরি করে আসছেন।

কারিগররা বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ও পরে এই গ্রামের প্রায় ৮০০ কারিগর চিনি তৈরি হাতি, ঘোড়া, মুকুট, মাছ, নৌকা, পাখিসহ বিভিন্ন ধরণের সাঁজ তৈরি করতেন। নানা কারণে অনেকেই দেশ ছেড়ে ভারতে চলে গেছে। বর্তমানে ওই গ্রামের ৯টি পরিবারের ৫০ জন কারিগর এই পেশা ধরে রেখেছেন।

কারিগর ননী বনিক জানান, প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি এই পেশায় জড়িত রয়েছেন। খাটি আখের গুড় ছাড়া এ সাঁজ বানানো যায় না। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আখের গুড় কিনে আনতে হয়। ১ মন খাটি গুড় কিনতে ২ হাজার ৭০০ টাকা লাগে। ১ মণ গুড় দিয়ে ৩৫ থেকে ৩৬ কেজি বাতাসা তৈরি হয়। প্রতি মনে লাভ হয় মাত্র ১শ’ টাকা।

বাসুদেব বনিক জানান, বাপ-দাদার আমল থেকেই তিনি এ কাজের সঙ্গে জড়িত। তার পরিবারের ৭ সদস্যই এই সাঁজ তৈরির কাজ করেন। বিভিন্ন বড় উৎসব এলে মানিকগঞ্জ, টাংগাইল, মধুপুর, সখিপুর, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় চিনির তৈরি মকুট, হাতি, ঘোড়া, মাছ, নৌকা ও পাখির চাহিদা বেড়ে যায়। প্রতিদিন গড়ে এক মণ সাঁজ তৈরি করা সম্ভব।

নীলকান্তি বনিক, দেবেশ বনিকসহ একাধিক বনিক বলেন, সরকার যদি তাদের একটু সাহায্য সহযোগিতা করতেন তাহলে তাদের তৈরি এসব সাঁজ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হতো।

স্থানীয় বালিয়াটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রহুল আমিন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামের কারিগররা বিভিন্ন ধরনের সাঁজর তৈরি করে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। তাদেরকে সহযোগিতা করা গেলে তারা এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারবেন।

আরও পড়ুন :

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
২০০ বছরের পুরোনো জামাই মেলা
৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম কালবৈশাখীর রেকর্ড
কাভার্ডভ্যানচাপায় প্রাণ গেল ২ সবজি বিক্রেতার 
মেলায় জাদু খেলার নামে অশ্লীল নৃত্য, আটক ৫  
X
Fresh