• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
রোজার পণ্যে অগ্নিমূল্য, নাজেহাল ক্রেতারা 
প্রতিবছর রমজান মাস আসার পূর্বেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। আর রমজানে এই নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো প্রতিবছর নানারকম অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। দাম কমানোর জন্য সরকার নানা উদ্যোগের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পণ্যের শুল্ক কমালেও এর কোনো প্রভাব নেই বাজারে। রোজায় পণ্যের অগ্নিমূল্যে নাজেহাল ক্রেতারা। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর বাজার, মগবাজার ও রামপুরা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, ময়দা, ছোলা, বেসন, মাছ-মাংসসহ প্রায় সব ধরনের পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। লেবু-শসার দামও অসহনীয়।  ক্রেতারা বলছেন, যারা ব্যবস্থা নেওয়ার, তারা নিচ্ছে না। সিন্ডিকেট এতই প্রভাবশালী, তাদের বিরুদ্ধে কেউ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। বাজারঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকায়, যা আগে ছিল ৬০-৭০ টাকা। মাঝারি মানের প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, যা সাত দিন আগে ৪০-৫০ টাকা ছিল। পাশাপাশি এক সপ্তাহ আগে প্রতি হালি যে লেবু ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা মঙ্গলবার খুচরা বাজারে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৩০ এবং গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য দেশে রোজা এলে পণ্যের দাম কমানো হয়। বাংলাদেশে বাড়ে। এদিকে নতুন করে ছোলার দাম কেজিতে বেড়েছে ৭ টাকা। ভারতীয় মসুর ডাল কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। বাড়তি দরের তালিকায় আছে চিনিও। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে দেড় শ টাকার ওপরে। পবিত্র রমজানে ভোক্তা পর্যায়ে খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। অতি সাধারণ বা নিম্নমানের খেজুর কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা এবং বহুল ব্যবহৃত জাইদি খেজুর কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আবার ইফতারে অনেকেই খেজুরের পাশাপাশি মাল্টা, আপেল, পেয়ারা, আনারস, তরমুজ ইত্যাদি রাখার চেষ্টা করেন। ফলের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। যেমন এক কেজি মাল্টা ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। এদিকে রমজান ঘিরে বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম স্থিতিশীল রাখতে বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে তিনটি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একসঙ্গে কাজ করছে। এর আওতায় রোজায় পণ্যের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পণ্যের আমদানি বাড়াতে ডলারের জোগান দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমেছে। এছাড়া ৮ পণ্য আমদানির এলসি মার্জিন এবং ৪ পণ্যের শুল্ক কমানো হয়েছে। এরপরও পণ্যের দাম কমছে না। এ প্রসঙ্গে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা করার প্রবণতায় পণ্যের দামে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এসব দেখার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগও নিয়েছে। তবে সুফল নেই। 
১৩ মার্চ ২০২৪, ০৯:২৯

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে অস্বস্তিতে ক্রেতারা
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চালসহ বেশ কিছু ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। ভরা মৌসুমে আরও চড়া হয়েছে সবজির দাম। বেড়েছে গরুর মাংস, ব্রয়লার মুরগি, আটা, ময়দা, ডাল, ছোলা, আদা ও রসুনসহ আরও বেশ কিছুর দাম। ভোটের আগে যে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজিতে নেমেছিল, তা এখন ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আটা-ময়দা ও ডালের দামও কেজিতে ১০ টাকা ও তেলের দাম লিটারপ্রতি ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। আরও পড়ুন : আরটিভিতে আজ যা দেখবেন   বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এখন সরু (মিনিকেট) চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা দরে। যা ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা ছিল। মাঝারি (বিআর-২৮, পায়জাম) চালের কেজিতে সর্বোচ্চ তিন টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। দুই টাকা বেড়ে মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা। চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে এক ব্যবসায়ী বলেন, ভোটের কারণে গাড়ি এসেছে কম। তাই সরবরাহ ঘাটতির কারণে চালের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মানভেদে প্রতি বস্তা চালের দামে দেড় শ’ থেকে আড়াই শ’ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। পেঁপে, মুলা ও শালগম ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজি কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৪০ থেকে আকারভেদে ৬০ টাকা পর্যন্ত। ভরপুর শীতে বাজারে শিমের দামও চড়া; প্রতি কেজি ৮০ টাকা। আর মাঝারি আকারের একটি লাউয়ের দাম ৮০ টাকা, বড় হলে ১০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেন, ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম কমার কথা। কিন্তু বাজারে এসে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। এখন এতো দামে সবজি বিক্রি হওয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। বাজারে সাংঘাতিকভাবে সিন্ডিকেট কাজ করছে। যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যে কারণে এ পরিস্থিতি। আরও পড়ুন : নিয়ম মানলেই রোজা রাখা সম্ভব ডায়াবেটিস রোগীদের   বিক্রেতা সবজির দাম বাড়ার পেছনে কুয়াশাকে দায়ী করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বেশি কুয়াশা পড়ছে। এতে নির্ধারিত সময়ে পণ্যবাহী ট্রাক আসছে না। সে কারণে ঢাকায় তুলনামূলক পণ্য কম আসছে। এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষকের অনেক সবজি নষ্ট হচ্ছে। এর প্রভাবও পড়েছে বাজারে।    ভোটের আগে গরুর মাংসের বেঁধে দেওয়া দাম ছিল ৬৫০ টাকা কেজি। ভোটের পরে তা এক দফা বেড়ে ৭০০ টাকা হয়। এখন ঢাকা শহরের অধিকাংশ বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। সেগুনবাগিচা বাজারে দুটি মাংসের দোকান। সেখানে ৭৫০ টাকায় মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে খোকন ইন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী খোকন বলেন, আমরাও ভোটের আগে ৬৫০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করেছি। পরে ৭০০ করেছি। এখন গরুর দাম বেশি। ওই দামে বিক্রি করে লাভ হয় না। গত দুদিন থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। মাংসের পাশাপাশি মাছের বাজারও বেশ চড়া। বিভিন্ন পদের মাছের দাম কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ টাকায়, শিং মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫৫০ টাকায়, রুই মাছে প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, পাঙাশ প্রতি কেজি ২২০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, শোল মাছ ছোট সাইজের প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, আর মাঝারি সাইজের শোল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজিতে। গুলসা প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা গলদা প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেঙরা মাছ ছোট প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং রূপচাঁদা প্রতি কেজি আকার ভেদে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও প্রতি ডজনে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। আরও পড়ুন : দেশের ৪৯ শতাংশ পানিতে ক্যান্সারের ঝুঁকি    গত সপ্তাহে হুট করেই ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা। যা গত মাসে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে ছিল। সোনালি জাতের মুরগির দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়। অন্যদিকে মুদি বাজারে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। বেড়েছে মসুর ডালের দামও। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগের থেকে ১০ টাকা বেশি। এরআগে বিভিন্ন সময় ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো বা কমানোর কাজ ঘোষণা দিয়ে করলেও এবারে চুপিসারেই দাম বাড়িয়েছে। বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৭৩ টাকা করা হয়েছে, যা ভোটের আগে বিক্রি হয়েছে ১৬৯ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটা ও ময়দার দাম ১০ টাকা এবং চিনির দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি কেজি প্যাকেটের আটার দাম এখন ৬৫ টাকা। ময়দার দাম বেড়েছে হয়েছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। চিনির দামেও একই ধরনের অস্থিরতা। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি বাজারে ১৪৮ টাকা মূল্য থাকলেও বিক্রেতারা সেটা খুলে বিক্রি করছেন ১৫০-১৬০ টাকায়।
১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়