সুপার ফোরের শেষ দল রংপুর
বাঁচা মরার লড়াই। হারলে অপেক্ষা করতে হতো শেষ ম্যাচের জন্য। কিন্তু আর অপেক্ষা করতে হলো না রংপুরের সমর্থকদের। ধুঁকতে থাকা রংপুর শেষ পর্যন্ত ওঠে গেলো প্লে-অফে। আগের ম্যাচে সিলেটের বিশাল জয় কেবল নিজের ফেরার আত্মবিশ্বাসই জোগালো কিন্তু কোন কাজে আসলো না।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই কাগজে কলমে শক্তিশালী হিসেবে ধরা হয়েছিল রংপুরকে। কিন্তু শুরু থেকেই তারা খেই হারিয়ে ফেলেছিল। কেনো যেন জয় বঞ্চিত হচ্ছিল তারা। যে দলে গেইল, ম্যাককালামরা রয়েছেন সে দলই একসময় বাদ পড়ার শঙ্কায় ছিল। অথচ টুর্নামেন্টের শুরু থেকে চমক দেয়া সিলেট সিক্সার্স প্রথম তিন ম্যাচ জিতে তারপরই খেই হারিয়ে ফেলে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) রোববার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৯ রানে জয় পেল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। ১১ ম্যাচ খেলে এটি তাদের ষষ্ঠ জয়। ১২ পয়েন্ট তারা এখন পয়েন্ট টেবিলে চতুর্থ অবস্থানে আছে।
অন্যদিকে, খুলনা টাইটানসের আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত হয়েছিলো। প্লে-অফ নিশ্চিত হওয়া অন্য দুইটি দল হচ্ছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও ঢাকা ডায়নামাইটস। অর্থাৎ এবারের বিপিএল থেকে বিদায় নিল চিটাগাং ভাইকিংস, সিলেট সিক্সার্স ও রাজশাহী কিংস।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের দেয়া ১৪৮ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৮ রান করে খুলনা টাইটানস। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন মাইকেল কলিঙ্গার।
খুলনা টাইটানস ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৬০ রানে প্রথম উইকেট হারায়। নাজমুল ইসলামের বলে এলবি হন নাজমুল হোসেন শান্ত(২০)। দলীয় ৭১ রানে সোহাগ গাজীর বলে মাশরাফির হাতে ক্যাচ হন আফিফ হোসেন(৮)।
এরপর দলীয় ৮৩ রানে রবি বোপারার বলে মাশরাফির হাতে ধরা পড়েন মাইকেল কলিঙ্গার(৪৪)। দলীয় ৮৭ রানে মাহমুদুল্লাহকে(৬) বোল্ড করেন নাহিদুল ইসলাম। দলীয় ৯৫ রানে রান আউট হন নিকোলাস পুরান(১)। দলের রান যখন ৯৭ তখন উদানার বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট(৬)। ১৮তম ওভারের শেষ বলে রান আউট হন জফরা আর্চার(১৯)। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ম্যাককলামের হাতে ক্যাচ হন আরিফুল হক(৬)।
রংপুরের পক্ষে সোহাগ গাজী, ইসুরু উদানা, নাহিদুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম ও রবি বোপারা ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি রংপুরের। ওপেনিং করতে নেমে জিয়াউর রহমান ৯ বলে ৮ রান করে আবু জায়েদ রাহির শিকার হন। আরও একবার ব্যর্থ ব্রেন্ডন ম্যাককালামও। নিউজিল্যান্ডের মারকুটে এ ব্যাটসম্যান ১১ বলে ১৫ রান করে শফিউল ইসলামের বলে ক্যাচ আউট হন।
ক্রিস গেইলের মহামূল্যবান উইকেটটি বগলদাবা করেন মোহাম্মদ ইরফান। তার বলে আবু জায়েদের তালুবন্দি হন ২৭ বলে ৪ বাউন্ডারি ২ ওভার বাউন্ডারিতে ৩৮ রান করা ক্যারিবীয় দানব। চলতি আসরে ধারাবাহিক রান করে যাওয়া রবি বোপারাকে (১১) বোল্ড করে দেন আর্চার।
একপ্রান্ত আগলে দারুণ ব্যাট করছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন। অপর প্রান্ত থেকে পরপর বিদায় নেন কাপুদেগেরা (২) এবং নাহিদুল ইসলাম (৬)। শিকারী যথাক্রমে ব্র্যাথওয়েট এবং আর্চার। উইকেটে আসেন অধিনায়ক মাশরাফি। শুরু হয়ে মিথুন-ম্যাশের তাণ্ডব। সেই তাণ্ডবেই নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৪৭ রান তুলতে সক্ষম হয় রংপুর। শেষ বলে ছক্কা মেরে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন মিথুন। তিনি ৩৫ বলে ২ বাউন্ডারি আর ৪ ওভার বাউন্ডারিতে অপরাজিত ৫০ রান করে মাঠ ছাড়েন। অপর প্রান্তে ১১ বলে ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন মাশরাফি।
খুলনা টাইটানসের পক্ষে জফরা আর্চার ২টি, আবু জায়েদ রাহি, শফিউল ইসলাম, মোহাম্মদ ইরফান ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েট ১টি করে উইকেট নেন।
দলের কঠিন মুহূর্তে অনবদ্য অর্ধশত করে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন রংপুরের মোহাম্মদ মিথুন।
এএ/এসএস
মন্তব্য করুন