রমজান শেষ, যেভাবে আদায় করতে হবে কাজা কাফফারা
আমরা অনেকেই রমজান মাসে অসুস্থ ছিলাম বা সফরে থাকায় রোজা রাখতে পারিনি অথচ মহান আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের উপর রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। রমজান মাসে যারা অসুস্থ হয়েছেন রোজা রাখতে কঠিন হয়েছিল বা শরীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল কিংবা শরিয়ত সম্মত সফরে ছিলেন, তারা এখন বাদ যাওয়া সেসব রোজার কাজা কাফফারা এখন আদায় করতে হবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, নির্ধারিত কয়েকটি দিনের জন্য অতপর তোমাদের মধ্যে থেকে যে অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে অন্য সময়ে তার সে সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক হয়। তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করবে যে ব্যক্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন সৎকর্ম করে তবে তা তার জন্য কল্যাণকর। বস্তুত যদি তোমরা রোজা রাখ তাহলে তোমাদের জন্য তা বিশেষ কল্যাণকর যদি তোমরা তা বুঝ’।(সূরা বাকার-১৮৪)
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : এই মাসে ৬টি রোজা রাখলেই পাওয়া যাবে এক বছর রোজার সওয়াব
--------------------------------------------------------
কাজা হল একটি রোজার পরিবর্তে একটি আদায় করা আর কাফফারা হল একাধারে ষাটটি রোজা রাখা। ওজর ব্যতিত যে কয়টা রোজা ভেঙ্গে ফেলবে তার জন্য সে কয়টি রোজা কাজা ও রমজানের মাসের জন্য কাফফারা একটি যেমন কেউ যদি রমজান মাসে তিনটি রোজা ভেঙ্গে ফেলে সে কাজা হিসেবে তিনটি আর রমজান মাসের কাফফারা ষাটটি সর্বমোট তেষট্টি রোজা আদায় করতে হবে। (ফাতওয়ায়ে আলমগীরী)
কাফফারা শব্দের অর্থ ক্ষতিপূরণ। রমজানের ফরজ রোজা রাখার পর কোন কারণ ছাড়াই ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভেঙ্গে ফেললে কাজা ও কাফফারা উভয়টা ওয়াজিব হয়।
কাফফারা তিনভাবে আদায় করা যায় ১. দাস মুক্তি করে,২. বিরীতহীন ভাবে ষাটদিন রোজা রাখা ৩. মিসকিনকে খাদ্য দিয়ে। বর্তমানে দাস মুক্তির প্রথা নেই তাই ষাটদিন রোজা রেখে আদায় করতে হবে। যাদের রোজা রাখার সাধ্য নেই তাদের কাফফারা আদায় করতে হবে আর যাদের শরীরিক সক্ষমতা নেই এবং পরবর্তীতে রোজা রাখার সক্ষমতা ফিরে পাওয়ার আশা নেই শুধু তাদের জন্য পূর্ণ খাবার খেতে পারে এমন ষাট জন মিসকিনকে অথবা সদকায়ে ফিতরয়ে যে পরিমান গম বা তার মূল্য দেয়া হয় প্রত্যেককে সে পরিমাণ দিতে হবে। এই গম ইত্যাদি বা মুল্য দেয়ার ক্ষেত্রে একজনকে ষাটদিনেরটা একদিন দিয়ে দিলে কাফফারা আদায় হবে না। শুধুমাত্র একদিনের কাফফারা ধরা হবে। (রদ্দুল মুহতার)
রোজা রাখতে না পারলে বা কাজা আদায় করতে না পারলে যে ক্ষতি পূরণ দিতে হয় আর সে ক্ষতি পূরণকে ফিদইয়া বলা হয়। এক রোজা পরিবর্তে এক ফিদাইয়া দিতে হয়। এক ফিদইয়া হল সদকায়ে ফিতরের সমপরিমাণ কোন দ্রব্য কোন মিসকিনকে দান করা বা মিসকিনকে দুই বেলা পেট ভরে আপ্যায়ন করা। (ফাতহুল কাদীর)
ফিদাইয়া দিতে হবে যাদের জাকাত ফিতরা দেওয়া হয়। যারা ফরজ ও ওয়াজিব সদকা গ্রহণ করতে পারবে তাদের কে ফিদইয়া দিতে হবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, সদকা (জাকাত) কেবল ফকির, মিসকিন, জাকাত আদায়ের কর্মচারী যাদের চিত্তাকর্ষণ করা প্রয়োজন তাদের জন্য এবং দাসমুক্তি, ঋণগ্রস্থ, আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী ও মুশাফিরদের জন্য। এটা মহান আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত বিধান। আর আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়”।(সূরা তাওবা-৬০)
আরও পড়ুন :
এমকে
মন্তব্য করুন