• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জায়নামাজে কাবা শরিফের ছবি আদবের খেলাপ

হাফেজ মাওলানা মো. নাসির উদ্দিন

  ২৪ জানুয়ারি ২০১৮, ১৭:৩৯

বর্তমানে বাহারি জায়নামাজ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব জায়নামাজের ওপর যেভাবে পবিত্র কাবা-রওজা শরিফের ছবি অঙ্কিত হচ্ছে তা অত্যন্ত আপত্তিকর। কাবা ও রওজা শরিফ মুসলমানদের সবচাইতে প্রিয় স্থান। সেটা আমাদের পায়ের নিচে থাকতে পারে না। এটা ইহুদি খ্রিষ্টানদের ষড়যন্ত্র বলেই মনে করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে দেওবন্দ মাদরাসার প্রধান মুফতি হজরত তৈয়ব (রঃ) বলেছেন, যেখানে সম্মান দিয়ে কাবা ও রওজা শরিফের ছবি ঘরের দেয়ালে রেখা হচ্ছে। সেখানে এ দুটি পবিত্র স্থানের ছবি পায়ের নিচে রাখা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এটি সরাসরি আদবের খেলাপ (শিষ্টাচার বিরোধী)।

জায়নামাজের ওপর পবিত্র মক্কা ও মদিনার ছবি দেয়ার ইতিহাস সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা থাকা দরকার।

মক্কা-মদিনার ছবিসহ সর্বপ্রথম জায়নামাজ তৈরি হয় স্পেনে। স্পেনের মুসলিম সভ্যতা ধ্বংসের পর বিধর্মীদের মাধ্যমে এটি তৈরি হয়। মক্কা-মদিনার ছবি যিনি প্রথম ছেপে জায়নামাজ তৈরি করেন তার নাম হ্যারিস অ্যাকলয়েড এবং সেটি হয়েছিল স্পেনেই।

মক্কা-মদিনার ছবি আমরা শ্রদ্ধাভরে দেয়ালের উঁচু স্থানে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে স্থাপন করি। অথচ জায়নামাজের ব্যাপারটি অনেকেই বুঝেও বুঝতে চান না। কারণ সৌদি আরবে প্রচুর পরিমাণে মক্কা-মদিনার ছবিসহ জায়নামাজ বিক্রি হয়। ছবি ছাড়া জায়নামাজ দোকানে চাইতে গেলে, দোকানদাররা বিরক্তি প্রকাশ করে জানান মক্কা মদিনায় ছবিওয়ালা জায়নামাজের ক্রেতা বেশি। সবাই তো এটাই চায়। বিধর্মীদের কারসাজিতে আজ ইবাদতও লক্ষ্যভ্রষ্ট হচ্ছে।

পবিত্র কাবার পবিত্রতা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, নিশ্চয় মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে গৃহ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা মক্কায় অবস্থিত, তা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারী। তাতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে। যেমন মাকামে ইব্রাহিম। আর যে সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ। সেখানে যার যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই গৃহে হজ করা তার অবশ্যই কর্তব্য। এবং কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক, নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বজগতের মুক্ষাপেক্ষী নন।

(সুরা আল্ ইমরান, আয়াত: ৯৬-৯৭)

এ সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, আমরা নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে নামাজ পড়তাম। মাটি উত্তপ্ত হওয়ার দরুন আমাদের অনেকে সেজদার স্থানে (পরিহিত) কাপড়ের অংশবিশেষ রেখে তার উপর সেজদা করতেন। (বুখারী শরীফ)

নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমিনের ওপর কিছু না বিছিয়ে নামাজ আদায় করতে পছন্দ করতেন।

হজরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে মাটি ছাড়া অন্য কিছুর ওপর আল্লাহর রাসুল সেজদা করতেন না।

তাই আসুন আমরা কোনোভাবে যেন ইহুদি-খ্রিষ্টানদের ধোকায় না পরি এবং আমাদেরকে যেন কেউ ভুল বুঝাতে না পারে। মুসলমানেদেরকে যুগে যুগে বিধর্মীরা নেক ছুরাতে ধোকা দেওয়ার চেষ্টায় লেগে থাকে এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সকলকে মক্কা মদিনার সম্মান করার তাউফিক দান করেন। (আমিন)

কেএইচ/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ধর্ম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মক্কা-মদিনায় ঈদের নামাজ পড়াবেন যারা
কাবা শরিফে মুসল্লির আত্মহত্যার চেষ্টা
কাবা শরিফ ও মসজিদে নববীতে বিয়ের অনুমতি দিল সৌদি
X
Fresh