• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

শিশুদের মৃগী রোগের কারণ ও প্রতিকার

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ০৬ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:২৮

আরটিভির স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘সেভলন সুস্থ থাকুন। এবারের পর্বে শিশুদের মৃগী রোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ রোগটি নিয়ে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশের বরেণ্য শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান, চেয়ারম্যান, শিশু নিউরোলজি বিভাগ, বিএসএমএমইউ।

প্রশ্ন: এপিলেপ্সি বা মৃগী রোগ আসলে কী?

উত্তর: মৃগী রোগ মস্তিষ্কের একটা রোগ। মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ থেকে বিদ্যুতের মতো হঠাৎ হঠাৎ চমকাতে থাকে। তখন শরীরে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন- ঝাঁকুনি উঠা, শরীর শক্ত হয়ে যাওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, আচরণে বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যাওয়া। মস্তিষ্ক থেকে বিদ্যুৎ চমকানোর কারণ হচ্ছে দুটি কেমিকেল- একটা হলো গ্লুটামেট, আরেকটা হলো গামা অ্যামিনোবাটিরিক অ্যাসিড। মস্তিষ্কে গ্লুটামেটের কাজ হচ্ছে স্নায়ুকোষ অর্থাৎ নিউরনগুলোকে উত্তেজিত করা আর গামা অ্যামিনোবাটিরিক অ্যাসিডের কাজ হলো উত্তেজনা দমিয়ে রাখা। যখন গ্লুটামেটের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন এই উত্তেজনাটা বেড়ে যায়। তখনি বিদ্যুতের মত চমকে উঠতে থাকে।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : প্রসবে সিজারিয়ান জরুরি ছিল কিনা যাচাই করা হবে: প্রতিমন্ত্রী
--------------------------------------------------------

প্রশ্ন: মৃগী রোগীরা খিঁচুনি দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে কী করা উচিত? আর গ্রামেগঞ্জে মৃগী রোগীরা অজ্ঞান হয়ে গেলে জুতার গন্ধ শুকানো হয়, এটা কতটা সঠিক?

উত্তর: মস্তিষ্কের সবগুলো নিউরন অর্থাৎ শব্দকোষ যখন উত্তেজিত হয় তখন মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা লোপ পায়। এর ফলেই জ্ঞান হারায়। আর জ্ঞান হারালে খুবই অল্প সময়ের জন্য থাকে। এসময় রোগীকে কাত করে অথবা উপুড় করে দিতে হবে যাতে করে মুখ থেকে লালা বের হয়ে যেতে পারে। পাঁচমিনিট হয়ে গেলেও যদি রোগীর জ্ঞান ফিরে না আসে তাহলে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। আর এইরকম পরিস্থিতিতে জুতা নাকের কাছে দেয়া আসলে কুসংস্কার। এর কোনো প্রভাব নাই আসলে।

প্রশ্ন: মৃগী রোগের স্থায়ী কোনো চিকিৎসা আছে কী?

উত্তর: মৃগী রোগের চিকিৎসা শুরু হতে যত দেরি হয়, রোগ সারতে তত বেশি সময় লাগবে। আরেকটা হলো অভিজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা না করানো। আরেকটা বিষয় হলো অনেক সময় রোগীকে ডাক্তারের নির্দেশনা মতো ওষুধ খাওয়ানো হয় না।

প্রশ্ন: বাচ্চার বয়স তিন বছর কিংবা এর বেশি হলে যদি মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে কি ব্রেইন ড্যামেজ হতে পারে?

উত্তর: হ্যাঁ, তিন বছর পরে হলেও ব্রেইন ড্যামেজ হতে পারে। ব্রেইন ড্যামেজটা হয় সাধারণত অনেকক্ষণ খিঁচুনি হতে থাকলে। তা না হলে ব্রেইন ড্যামেজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

প্রশ্ন: মৃগী রোগ কীভাবে পরীক্ষা করা হয়?

উত্তর: সবচেয়ে জরুরি পরীক্ষাটি হলো ইইজি(ইলেকট্রো এনসেফালো গ্রাম)। এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের কম্পন, খিচুনির মাত্রা ও ধরন বোঝা সম্ভব হয়। এছাড়াও সিটিস্ক্যান, এমআরআইসহ বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা করতে দেয়া হতে পারে। রোগীর ধরন দেখে আসলে কী পরীক্ষা করা হবে সেটা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মৃগী রোগ সম্পর্কে কিছু হেলথ টিপস

মৃগী বা খিঁচুনি রোগটি মস্তিষ্কের অতি সংবেদনশীলতার জন্য হয়ে থাকে। তবে সকল ধরনের খিঁচুনি মানেই মৃগী রোগ নয়। ব্রেইন টিউমার, মাথায় আঘাত, মানসিক প্রতিবন্ধিত্ব, নেশাজাতীয় ওষুধ সেবনসহ আরও নানা কারণে খিঁচুনি হতে পারে। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের রক্তে সুগার বেড়ে গেলে বা কমে গেলেও খিঁচুনির সমস্যা হতে পারে। খিঁচুনি আক্রান্ত রোগী যখন তখন জ্ঞান হারাতে পারে এবং জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পরও কিছু সময়ের জন্য তার মানসিক বিভ্রম হতে পারে। তাই পুরোপুরি স্বাভাবিক ও সক্ষম অবস্থায় আসার আগ পর্যন্ত রোগীর পাশে থাকতে হবে। খিঁচুনি রোগীদের সাবধানে চলাফেরা এবং নিয়ম মেনে চলতে হয়। সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি ভেষজ ওষুধ ও চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমেও খিচুনি রোগ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এ ধরনের রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

আরও পড়ুন :

কেএইচ/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • স্বাস্থ্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গরমে শিশুর যত্নে যা করবেন
শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা, সৎ মায়ের যাবজ্জীবন
ডাকাতিয়া নদীতে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার 
তাপপ্রবাহে ‘অতি উচ্চঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
X
Fresh