ইয়াহুর ৩০০ কোটি আ্যকাউন্টই হ্যাক হয়েছিল

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ওয়েব সার্ভিস প্রোভাইডার ইয়াহুর প্রত্যেকটি অ্যাকউন্টই হ্যাক হয়েছিল। যা বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হ্যাকিংয়ের ঘটনা।

বিজনেস ইনসাইডার জানায়, ১০০ কোটি নয়, গেলো বছর হ্যাকাররা প্রায় ৩০০ কোটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল। এমন চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি খোদ ইয়াহুর পক্ষ থেকেই স্বীকার করা হয়েছে।

সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানি সাইবারিজনের চিফ সিকিউরিটি অফিসার স্যাম কারি জানান, যে সংখ্যা প্রকাশ্যে এসেছে তা প্রায় বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যাকে প্রতিনিধিত্ব করে। তিনি বলেন, সংখ্যাটা ১০০ কোটি না ৩০০ কোটি তা বড় বিষয় নয়। মোদ্দাকথা হলো এখানে গোপনীয়তা সবচেয়ে বড় শিকার হয়েছে।

গেলো ডিসেম্বর মাসে প্রথম তথ্য হাতানোর কথা ঘোষণা করে ইয়াহু। চুরি হওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে নাম ইমেল আইডি, ফোন নম্বর, জন্মদিন এবং নিরাপত্তা-সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর।

সে সময় ইয়াহুর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে এক অননুমোদিত ‘থার্ড পার্টি’ প্রায় ১০০ কোটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করেছে। সংস্থাটি আরো জানায় তাদের গোপন কোডও হয়তো হ্যাকারদের হাতে চলে গিয়ে থাকতে পারে। এই চুরিকে সংস্থার ইতিহাসে বৃহত্তম বলেও অভিহিত করেছিল ইয়াহু।

এ ঘটনার তিন মাস আগে, গেলো বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই সংস্থাটি জানিয়েছিল তাদের সার্ভার থেকে প্রায় ৫০ কোটি গ্রাহকের তথ্য ফাঁস হয়েছে। এবার নতুন ঘোষণায় আরো একটি কেলেঙ্কারি ওঠে এলো। এবার লুঠ হওয়া তথ্যের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ।

এক সময়ে বিশ্বের অন্যতম ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে নামডাক ছিল এই আমেরিকা ভিত্তিক এ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটির। কিন্তু পরবর্তীকালে, সংস্থার গুণগতমান পড়ে যাওয়ায়, গুগল এবং ফেসবুকের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে পিছিয়ে যায় ইয়াহু।

এসবের মধ্যেই ৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ইয়াহুকে কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল আরেক মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ভেরিজন। কথাবার্তাও অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গেলো বছর তথ্য ফাঁসের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় তা থমকে যায়।

চলতি বছরের জুন মাসে ভেরিজন কিনে নেয় ইয়াহুকে। এরপরই তথ্য-চুরিকাণ্ডে বাইরের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়। তদন্তকারীদের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে ইয়াহু জানায়, চুরি যাওয়া পাসওয়ার্ডগুলো টেক্সট ফরম্যাটে ছিল না। এছাড়া, হ্যাকাররা পেমেন্ট কার্ডের তথ্য বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তথ্য হাতিয়ে নিতে পারেনি।

চুরির পরই, ইয়াহু তাদের গ্রাহকদের অবিলম্বে পাসওয়ার্ড এবং সিকিউরিটি প্রশ্ন বদল করার নির্দেশ দিয়েছিল। যাতে হ্যাকাররা কোনোভাবে ওই অ্যাকাউন্টে ঢুকতে না পারে।

যদিও নতুন স্বীকারোক্তির পরও ভেরিজন জানিয়ে দিয়েছে, ইয়াহু কেনার তাদের ন্যূনতম ইচ্ছাও নেই।

ওয়াই/জেবি