• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সন্ধান মিললো সৌরজগতের উজ্জ্বলতম ঝাড়বাতির!

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ০২ মার্চ ২০১৭, ১৮:৫৩

হাজার হাজার আলোর ‘ঝাড়বাতি’র খোঁজ মিললো মহাকাশে! এত উজ্জ্বল ‘ঝাড়বাতি’ সৌরজগতের আর কোথাও এর আগে দেখা যায়নি ।

জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় এই ‘মহাজাগতিক ঝাড়বাতি’কে বলে ‘পালসার’। এত উজ্জ্বল পালসারের হদিস এর আগে মেলেনি মহাবিশ্বে।

রীতিমতো ঝকঝকে আলো ছড়াচ্ছে মহাকাশে। যেন ‘হাজার হাজার আলোর ঝাড়বাতি’! আর তার খোঁজ মিলল প্রথম পালসার আবিষ্কারের (১৯৬৭) ঠিক ৫০ বছরের মাথায়।

কতটা উজ্জ্বল সেই ‘ঝাড়বাতি’?

এক সেকেন্ডে যতটা আলো ছড়ায় এই ‘মহাজাগতিক ঝাড়বাতি’, সেই পরিমাণ আলো আর শক্তি সূর্য ছড়ায় সাড়ে তিন বছর ধরে। পালসারটির নাম- ‘এনজিসি-৫৯০৭-ইউএলএক্স’।

নাসার ‘নিউক্লিয়ার স্পেকট্রোস্কোপিক টেলিস্কোপ অ্যারে (নিউস্টার) টেলিস্কোপের চোখেই ধরা পড়েছে এই হাজার আলোর ঝাড়বাতিটা। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (এসা) ‘এক্সএমএম-নিউটন’ উপগ্রহের চোখেও ধরা পড়েছে এই পালসারটি।

এই হাজার হাজার আলোর ‘ঝাড়বাতি’টি রয়েছে আমাদের থেকে ৫০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে। তার মানে, পৃথিবীতে মানুষ বা তার আদিপুরুষের জন্মের আগেই জন্ম হয়েছিল এই বিরল পালসারটির। যা আদতে একটি নিউট্রন স্টারও বটে।

সম্প্রতি এই সাড়া জাগানো গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স’-এ। ওই আন্তর্জাতিক গবেষকদলে রয়েছেন একজন বাঙালি সহযোগী গবেষকও। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়।

পালসার কী? এই আবিষ্কারের অভিনবত্ব কোথায়?

মূল গবেষক ইতালির ‘আইএনএএফ-অসারভেটরিও অ্যাস্ট্রোনমিক্যা দ্য রোমা’-র জ্যোতির্বিজ্ঞানী গিয়ান লুকা ইজরায়েল কলকাতার বাংলা পত্রিকা আনন্দবাজারের পাঠানো প্রশ্নের ই-মেইল জবাবে লিখেছেন, ‘সূর্যের মতো কোনও নক্ষত্র বা তারা মৃত্যুপথযাত্রী হলে তাদের দু’রকম অবস্থা হতে পারে। হয় তারা ব্ল্যাক হোল হয়ে যায়। আর তা না হলে তারা হয়ে পড়ে নিউট্রন স্টার বা নিউট্রন নক্ষত্র। পালসার তেমনই একটি নিউট্রন নক্ষত্র। যার চার পাশের চৌম্বক ক্ষেত্রটি অসম্ভব রকমের জোরালো। আর সেই নিউট্রন নক্ষত্রটা একেবারে লাট্টুর মতো বনবন করে ঘুরছে। পালসার থেকে আলোর বিকিরণ বেরিয়ে আসে দু’টি তীব্র উজ্জ্বল আলোর স্রোতে। অনেকটা ধূমকেতুর পুচ্ছের মতো তা ছড়িয়ে পড়ে মহাকাশে।

এই আবিষ্কারের গুরুত্ব কতটা?

ভারতের ‘অ্যাস্ট্রোস্যাট’ উপগ্রহের সায়েন্স অপারেশনের প্রধান, পুণের ‘আয়ুকা’র জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলছেন, ‘এটা নিঃসন্দেহে একটা অভিনব আবিষ্কার। কারণ, ১৯৬৭ সালে প্রথম পালসার আবিষ্কারের পর থেকেই তত্বগতভাবে এমন পালসারের অস্তিত্বের মোটামুটি একটা ধারণা ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। কিন্তু এমন পালসারের খোঁজ মিলছিল না কিছুতেই। অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ঘোরে যে ‘ক্র্যাব পালসার’ (এক সেকেন্ডে ৩০ বার), তার সন্ধান পাওয়ার পর মনে হয়েছিল, ‘হোয়াইট ডোয়ার্ফ পালসার’ বোধহয় কল্পনাই। এই আবিষ্কার সেই অর্থে, প্রায় হাল ছেড়ে দেয়া জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বুকে বল-ভরসা জোগালো। কারণ, ‘হোয়াইট ডোয়ার্ফ পালসার’ অত জোরে ঘুরতে পারে না। আমার মনে হয়, অদূর ভবিষ্যতে এমন আরও ‘হোয়াইট ডোয়ার্ফ পালসার’-এর খোঁজ মিলবে ব্রহ্মাণ্ডে।’

সূত্র-আনন্দ বাজার

ওয়াই/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh