• ঢাকা শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাংলাদেশ সীমান্তে গম চাষ নিষিদ্ধ ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১২:৫৬

আগামী দুই বছর বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় গম চাষ করা যাবে না বলে জানিয়েছে ভারতের কৃষি দপ্তর। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে বাংলাদেশে গমের ফসলে হুইট ব্লাস্ট নামের একটি ছত্রাক রোগ ছড়িয়ে পড়াকে। দেশটির কৃষি বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে ওই রোগ ভারতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। খবর বিবিসি বাংলার।

তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত অঞ্চলের যেসব এলাকায় গম চাষ করা হয়েছিল তা ইতোমধ্যেই জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। আর এজন্য মোট চার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দেয়া হয়েছে কৃষকদের।

পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলা নদীয়া ও মুর্শিদাবাদের ওপর কৃষি দপ্তর বিশেষ নজর রাখছে। কারণ সেখান থেকেই ভারতে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।

মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ও সীমান্তবর্তী এলাকা হরিহরপাড়ার জন প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন বলেন, আগের মৌসুমে শুধু মুর্শিদাবাদ জেলাতেই প্রায় চারশ ৮০ হেক্টর জমিতে বোনা গম এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার পাঁচটি ব্লকে এই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ওই ফসল নষ্ট করে দিতে হয়েছে। প্রথমে কৃষকরা মানতে চাননি। কিন্তু পরে সরকারী ব্যবস্থায় সেই সব গম নষ্ট করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণও দিয়েছি আমরা, বলেন মোশারফ।

গেলো বছর বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেও এই রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে গমের ফসল নষ্ট করা হয়েছে । আর পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় আগামী দুই বছর যাতে কেউ গম চাষ না করেন, সেজন্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রচার।

কৃষিবিজ্ঞানীরা মনে করছেন ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে আক্রান্ত গমের বীজ ভারতে প্রবেশ করে থাকতে পারে।

হরিয়ানার কারনালে কেন্দ্রীয় গম ও বার্লি গবেষণা ইন্সটিটিউটের কৃষিরোগ বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক দেবেন্দর পাল সিং বলেন, হুইট ব্লাস্ট রোগটি এ অঞ্চলের নয়। এটি সাধারণত দক্ষিণ আমেরিকায় দেখা যায়।

তিনি বলেন, প্রথম ব্রাজিলে গমের ফলনে এই ছত্রাক রোগ দেখা যায়। তারপরে সেটি দক্ষিণ আমেরিকার নানা দেশেও ছড়ায়। তবে বাংলাদেশ সম্প্রতি ওইসব দেশ থেকে সস্তার গম আমদানি করেছে। কিছু চাষি হয়তো সেই গমকে বীজ হিসেবে ব্যবহার করেছেন আর সেটি থেকেই বাংলাদেশে ওই রোগ ছড়িয়েছে।

সেজন্যই সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেই রোগটাকে আটকে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানী দেবেন্দর।

মোশারফ হোসেনও বলেছেন, এক শ্রেণীর অসাধু বীজ ব্যবসায়ী বাংলাদেশ থেকে চোরাই পথে ছত্রাক রোগগ্রস্ত বীজ নিয়ে এসে থাকতে পারেন। আর একবার হুইট ব্লাস্ট রোগ ছড়ালে তা শুধু ওই জমি নয়, ধীরে ধীরে অন্যান্য জমিতে গমের ফলনকেও ক্ষতি করবে। আর নষ্ট হবে মাটিও।

অন্যদিকে কৃষিরোগ বিশেষজ্ঞ দেবেন্দর পাল সিং বলেন শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের প্রতিটি রাজ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্য অঞ্চলে গম চাষ খুব একটা হয় না। তাই মূল নজরটা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের এই দুই জেলাতেই।

সীমান্ত অঞ্চলে হুইট ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়েনি, এমনটা নিশ্চিত হবার পরই ভারতের কর্তৃপক্ষ ওই জেলায় এই রোগ প্রতিরোধকারী উচ্চ ফলনশীল গম বীজ পাঠাবে বলে জানানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ভারতের কাঁটাতারে ঝুলছে : গয়েশ্বর
দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে দিল্লি, ৮ম ঢাকা
সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতের কাছে বাংলাদেশের উদ্বেগ
অস্ট্রেলিয়ার পর ভারতের কাছেও হোয়াইটওয়াশ টাইগ্রেসরা
X
Fresh