১৯ বছরেই কোটিপতি!

স্কুলের টিফিনের ফাঁকে জমির ব্যবসা করে ব্রিটেনে কোটিপতি বনে গেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিশোর অক্ষর রুপারেলিয়া। এর মাধ্যমে ব্রিটেনের কমবয়সী কোটিপতিদের তালিকায় নাম উঠে এসেছে অক্ষয়ের।খবর এনডিটিভির।

উত্তর লন্ডনের বাসিন্দা স্কুল পড়ুয়া ১৬ মাস আগে ‘ডোরস্টেপস’ নামে একটি ওয়েবসাইট খুলে ব্যবসা শুরু করে। নামমাত্র মূল্যের বিনিময়ে সম্পত্তি কেনাবেচায় মানুষজনকে সাহায্য করে তাঁর সংস্থা ‘ডোরস্টেপস ডট কো ডট ইউকে’। এই মুহূর্তে যা এখন ব্রিটেনের বৃহত্তম সংস্থাগুলির মধ্যে ১৮ নম্বরে রয়েছে। আর বছরখানেকের মধ্যেই অক্ষয়ের সম্পত্তির পরিমাণ ১০৩ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা।

স্কুলে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকেই নিজের অনলাইন ব্যবসা সামলেছেন অক্ষয়।

শুরুর দিনগুলির কথা বলতে গিয়ে অক্ষয় বলেন, “সংস্থার ওয়েবসাইট চালুর সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই সাসেক্সের এক জনের কাছ থেকে ফোন কল আসে। সেখানে তার একটি বাড়ি রয়েছে। সঙ্গে একফালি জমি। দুটোই বেচতে চান তিনি।” সে সুযোগ হাতছাড়া করেননি অক্ষয়। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়েছিলেন সাসেক্সে। নিজের গাড়ি ছিল না। ড্রাইভিং লাইসেন্স তো দূরের কথা। ফলে ভগ্নীপতিকে ৪০ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা) দিয়েছিলেন তাকে সাসেক্সে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। সাসেক্সে পৌঁছে সেই জমি-বাড়ির ছবি তুলে আনেন অক্ষয়। এরপর তা বিক্রি করেছিলেন তিনি। সেই শুরু। কৌশিক এবং রেনুকা রুপারেলিয়ার ছেলেকে এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। কেয়ার ওয়ার্কার কৌশিক এবং স্কুলশিক্ষিকা রেনুকা— দু’জনেই বধির। ছেলের সাফল্যে স্বাভাবিক ভাবেই গর্বিত তারা।

অক্ষয়ের সাফল্যের মতো তার ব্যবসার পদ্ধতিও খানিকটা আলাদা। স্যুট-বুট পরা এস্টেট এজেন্টের বদলে তার ব্যবসায় কর্মী হিসেবে রয়েছেন মধ্যবয়সী গৃহিনীরা। তারাই ক্রেতাদের ঘর-বাড়ি দেখাতে নিয়ে যান। এই মুহূর্তে তার সংস্থায় কাজ করেন জনা বারো কর্মী।

কর্মী হিসেবে মধ্যবয়সী গৃহিনীদের কেন বেছে নিলেন জানতে চাইলে অক্ষয় বলেন, “মায়েদের উপরে ক্রেতাদের আস্থা আছে। আর মায়েরা সত্যি কথা বলেন! এই ব্যবসায় সেটা খুবই জরুরি। কারণ, যারা নিজেদের ঘর-বাড়ি বিক্রি করছেন, বেশির ভাগের ক্ষেত্রেই তা তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় লেনদেন।”

মা-বাবার থেকে আর পকেটমানি নেন না অক্ষয়। বরং তাদেরকেই আর্থিক ভাবে ভরসা দেন। আর ব্যবসায় মন দিতেই ছেড়ে দিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ। তবে একটা সাধ এখনও মেটেনি তার। ব্যবসার মুনাফা থেকে প্রতি মাসে টাকা জমানো শুরু করেছেন। এখন কিনতে চান একটি গাড়ি।

এ/এপি