মাদকের টাকা দিতে না পেরে বাড়ি ছাড়া হচ্ছেন বাবা-মা!
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা শহরজুড়ে মাদকের ভয়ঙ্কর বিস্তার গড়ে উঠেছে। জায়গায় জায়গায় বসেছে ছোট-বড় মাদকের হাট। এমনকি মাদকের টাকা জোগান দিতে না পারার কারণে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে বাবা-মাকে।
অন্যদিকে গাঁজা, ফেনসিডিল ও ইয়াবায় আসক্ত শতকরা ৮০ ভাগ ছেলেদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রতিদিন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র, বেকার যুবকরা নেশায় উন্মাদ হয়ে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে মাদকের দোকানগুলোতে।
চিকিৎসা করেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছে না মাদকাসক্তরা। ফলে তারা যৌন অপরাধসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে ছেলেদের বাঁচানোর আকুতি জানিয়েছেন বাবা-মায়েরা।
তারা জানান, কেউ আসক্ত হচ্ছে পাড়ার বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে, আবার কেউ বা আসক্ত হচ্ছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীর পাল্লায় পড়ে।
এভাবেই মরণব্যাধি নেশায় আসক্ত হচ্ছে তরুণরা। এক পর্যায়ে তরুণরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে ইয়াবা খাওয়া ও বেচাকেনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
পরিবার থেকে ইয়াবা কেনার টাকা না দিলে বাবা-মাকে মারধর করে মাদকাসক্ত ছেলেরা। অনেক সময় ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পরিবার ছাড়া হতে হচ্ছে বাবা-মাকে।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর কিছু অসৎ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী সিন্ডিকেট মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে।
যে কারণে কোনোভাবেই মাদক আগ্রাসন রোধ করা যাচ্ছে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংস করে মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
কালীগঞ্জ শহরের নতুনবাজার, বাসটার্মিনাল, বালিহাটা, নদীপাড়া, মাছপট্টি, দর্গাপাড়ায় গড়ে উঠেছে মাদকের দোকান।
পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে দিন-রাত বিক্রি হচ্ছে গাঁজা, বাংলা মদ, ফেনসিডিল ও ইয়াবা।
বাজারগুলো থেকে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের আটক করা হলেও মোটা অংকের টাকায় ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন তারা।
জেলায় মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক প্রতিরোধে কড়া নির্দেশ দেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয় না।
মাদকাসক্ত এক ছেলের বাবা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরটিভি অনলাইনকে বলেন, চিকিৎসা করেও ছেলেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, মাদকের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার আরটিভি অনলাইনকে বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন:
জেবি/জেএইচ
মন্তব্য করুন