• ঢাকা শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
logo

ছাত্রলীগের হাতে ব্যবসায়ী লাঞ্ছিত, গাইবান্ধায় ওষুধের দোকানে ধর্মঘট

ফেরদৌস জুয়েল

  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৯:৪৩

গাইবান্ধা সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ওষুধ ব্যবসায়ী ও নেতাদের সঙ্গে মারপিট করায় জেলায় সকল ওষুধের দোকান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি গাইবান্ধা জেলা শাখার ডাকে এ ধর্মঘট চলছে।

এতে ওষুধ কিনতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে গাইবান্ধা কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তানজিল আহমেদ মোনার বোন শারমিন আক্তারকে বহনকারী ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা বালাসিঘাট থেকে শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের সামনে ওষুধের দোকান আরকে ট্রেডিংয়ের সামনে এসে থামে।

শারমিন আক্তার অটোরিকশাটি থানাপাড়া পর্যন্ত নিয়ে যেতে বললে অটোচালক আর যেতে না চাওয়ায় তাদের মধ্যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু হয়।

এসময় জোহরের নামাজ পড়ার জন্য দোকান থেকে বের হয়ে আরকে ট্রেডিংয়ের মালিক রুহুল আমিন এগিয়ে গিয়ে তাদের ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করেন।

এতে শারমিন আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে রুহুল আমিনকে ধাক্কা দেন এবং দালাল বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

এতে আশপাশের দোকানদার ও জনগণ এগিয়ে এসে শারমিন আক্তারকে থামানোর চেষ্টা করেন। পরে রুহুল আমিন নামাজ পড়ার জন্য বড় মসজিদে চলে যান।

আর.কে ট্রেডিংয়ের মালিক রুহুল আমিন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তানজিল আহমেদ মোনাসহ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন মামুন ও অন্যান্য নেতাকর্মীরা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে চড়াও হন।

তারা শারমিন আক্তারের ব্যাগে থাকা একলাখ টাকা খোয়া গেছে এমন অভিযোগ এনে টাকা দাবি করে। এতে আশপাশের লোকজন প্রতিবাদ করলে তারা ৮০ হাজার টাকা এবং একপর্যায়ে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে আমাকে লাঞ্ছিত করে।

এসময় বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ আশপাশের ওষুধ ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এই ঘটনার (টাকা দাবি) প্রতিবাদ জানালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ছাত্রলীগ নেতারা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে এলাকা ত্যাগ করে।

বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, বিষয়টি সমাধানের উদ্দেশে গাইবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমাদের থানায় ডেকে পাঠায়।

বিকেলের দিকে সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পিয়ারুল ইসলাম ও সদর থানার এক পুলিশ সদস্য এবং বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ী থানায় যান।

পথিমধ্যে জেলা পরিষদের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবারও আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ীসহ বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম গুরুতর আহত হন। পরে সাইফুল ইসলামকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা থানায় মামলা দায়ের করেছি। বৃহস্পতিবার সমিতির সাধারণ জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবসায়ীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত জেলার সমস্ত ওষুধের দোকান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।

জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক রাহাত মাহমুদ রনি বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তানজিল আহমেদ মোনার বোন শারমিনকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতেই ওষুধ ব্যবসায়ীদের এ ধর্মঘট।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বলেন, এ ঘটনায় ওষুধ ব্যবসায়ী রুহুল আমিন ও শারমিন আক্তার পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:

জেবি/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গাইবান্ধায় চাচার ছুরিকাঘাতে ভাতিজি খুন
গাইবান্ধায় আগুনে পুড়েছে ১০ দোকান 
ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ২ কৃষকের
১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থীর সবাই ফেল, প্রধান শিক্ষককে শোকজ
X
Fresh