কোলের শিশুকে হত্যা করে মায়ের আত্মহত্যা
রাজধানীর সবুজবাগের আহাম্মদবাগে শিশু ও নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। নিহতরা হলেন সান্ত্বনা(২৬) ও মাহফুজা(২)। শিশুটিকে হত্যা করে মাহফুজা আত্মহত্যা করতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
বিষয়টি আরটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেন সবুজবাগ থানার ওসি আব্দুল কুদ্দুস ফকির।
তিনি জানান, সবুজবাগের আহাম্মদবাগে ৩৬/৩/৩ নম্বর বাসায় তারা ভাড়া থাকতেন। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। শিশুটিকে হত্যা করে মাহফুজা আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পর হত্যার কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
এমসি/জেএইচ
মন্তব্য করুন
মাদক কারবারে সংশ্লিষ্ট বদির দুই ভাই, জানালো সিআইডি
মাদক কারবারের মাধ্যমে সম্পদ গড়ার বিষয় তদন্ত করতে গিয়ে টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়ার কাছ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সিআইডি প্রধান বলেন, মাদক মামলার মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমরা ওই পরিবারের অবৈধভাবে অর্জিত ৬ দশমিক ৯ একর সম্পত্তি শনাক্ত করেছি, আরও সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন।
তিনি বলেন, বদির বিরুদ্ধেও যদি আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ পাই, তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। যার বিরুদ্ধেই তথ্য প্রমাণ পাবো তাকেই ধরা হবে।
শুধু বদিই নয়, পর্যায়ক্রমে মাদকের সব গডফাদারকে আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মাদক ব্যবসার মাধ্যমে যারা অবৈধভাবে সম্পদ ও অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে তাদের অবৈধ সম্পদ আইনি প্রক্রিয়ায় সরকারি কোষাগারে চলে যাবে।
মন্দিরে সিঁদুর পরিয়ে নারীকে ধর্ষণ, অতঃপর....
স্বামী পরিত্যক্তা নারীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সখ্যতা গড়ে তোলেন যুবক অনুপ কুমার চাকীর (৩০)। এরপর ওই নারীকে মন্দিরে নিয়ে সিঁদুর পরিয়ে বিয়ের নাটক সাজিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়েন তিনি। তবে সংসার করতে চাইলে ওই নারীকে স্ত্রী বলে অস্বীকার করেন অনুপ। এরপর আদালতের মামলা হলে পলাতক ছিলেন তিনি। অবশেষে র্যাবের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) র্যাব-৩ এর অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর তেঁজগাও এলাকা থেকে ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি অনুপ কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাগুরা সদর উপজেলার অনুপ লম্পট প্রকৃতির ধুরন্ধর লোক। ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় তার। জানতে পারেন আট বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ওই নারীর বিচ্ছেদ হয়। এ সুযোগে নারীর বাড়িতে আসা যাওয়া করেন অনুপ।
শামীম বলেন, ঝিনাইদহে একটি মন্দিরে নিয়ে সিঁদুর পরিয়ে বিয়ের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেন ওই যুবক। সংসার করতে নারী অনুপের বাড়ি গেলে বিয়ের কথা অস্বীকার করেন তিনি। নারীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন তিনি।
তিনি বলেন, অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেন অনুপ। বিষয়টি জানাজানি হলে মাগুরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করে নারীর পরিবার। আদালতের নির্দেশে ২ ফেব্রুয়ারি মাগুরা সদর থানায় অনুপের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়।
সনদ বাণিজ্য / এবার গ্রেপ্তার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী
সনদ বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে এবার বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি সূত্র।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, কারিগরি বোর্ডের সনদ বাণিজ্য মামলার প্রধান আসামি এ টি এম শামসুজ্জামান এবং সহযোগী আসামি সানজিদা আক্তার ওরফে কলি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এই জবানবন্দির ভিত্তিতে শেহেলা পারভীনকে শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবিতে আনা হয়েছে।
এদিকে প্রাথমিকভাবে শেহেলার বিরুদ্ধে এ টি এম শামসুজ্জামানের সঙ্গে টাকা-পয়সা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে জানিয়েছে ডিবির একটি সূত্র।
এর আগে একই মামলায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান, সাবেক কর্মচারী ও বর্তমানে শামসুজ্জামানের সনদ তৈরির নিজস্ব কারখানায় নিয়োজিত কম্পিউটারম্যান ফয়সাল হোসেন, গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার ওরফে কলি, হিলফুল ফুজুল নামের কারিগরি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সরদার গোলাম মোস্তফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা পলিটেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন বর্তমানে রিমান্ডে আছেন।
গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জানান, গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের একাধিক দল ১ এপ্রিল ভোররাত থেকে নজরদারিতে রেখে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুরের দক্ষিণ ও মধ্য পীরেরবাগ এবং আগারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামান এবং তার সহযোগী ফয়সাল হোসেনকে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারের সময় কাছাকাছি দুটি বাসায় তাদের হেফাজত থেকে একাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে চুরি করে নেওয়া হাজার হাজার অরিজিনাল সার্টিফিকেট এবং মার্কশিটের ব্লাঙ্ক কপি, তৈরি করা শতাধিক সনদ এবং ট্রান্সক্রিপ্ট, বায়োডাটা ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল উদ্ধার করা হয়েছে।
এসব কম্পিউটার, প্রিন্টার ও ল্যাপটপ দিয়ে গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের বেশি আসল সনদ, মার্কশিট বানিয়ে ভুয়া লোকদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান ডিসি মশিউর রহমান।
এছাড়া সরকারি ওয়েবসাইট, সরকারি পাসওয়ার্ড ও অথরাইজেশন ব্যবহার করে ভুয়া লোকদের কাছে বিক্রি করা সনদগুলোকে বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যেকোনো দেশে বসে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বরগুলোকে সার্চ করলে সার্টিফিকেটগুলো সঠিক বলে প্রমাণিত হবে।
ডিসি মশিউর রহমান জানান, একে এম শামসুজ্জামানের বাড়ি দিনাজপুরে। তিনি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট হিসেবে যোগদান করেছেন ২০০৯ সালে। বর্তমানে তার পদ সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার বিভিন্ন থানার আনাচে-কানাচে অবস্থিত কারিগরি বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়গুলোতে পড়ালেখা করা হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন, রোল নম্বর, সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি, সেগুলোকে নির্দিষ্ট সার্ভারে আপলোড দেওয়া, ভেরিফিকেশন নিশ্চিত করা, কম্পিউটার সিস্টেম কোড সংরক্ষণ গোপনীয়তা বজায় রাখাসহ বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সকল প্রকার ডিজিটালাইজেশন এবং কম্পিউটারাইজেশন মূল দায়িত্ব তার কাঁধে।
সিস্টেম অ্যানালিস্ট হওয়ার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতি বছর কত হাজার পরীক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে, কতজন ফরম ফিলআপ করে রোল নম্বর পেয়েছে, কতজন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি আবার কতজন কৃতকার্য ও অকৃতকার্য হয়েছে তার সব তথ্যই শামসুজ্জামানের কাছে থাকতো। এ বিশাল তথ্যভাণ্ডার, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কর্তৃপক্ষ, সিস্টেম কোড ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকার সনদ ও মার্কশিট বাণিজ্য করেছেন শামসুজ্জামান এবং তার সহযোগীরা।
ডিবির এ কর্মকর্তা আরও জানান, ২০১৭ সালেও মার্কশিট ও সনদ বিক্রির অভিযোগে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী একে এম শামসুজ্জামানকে সাময়িকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতের মাধ্যমে আবার চাকরিতে পুনর্বহাল হয়ে তিনি এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার সনদ-মার্কশিট বিক্রি করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
বেনজীরের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান চান ব্যারিস্টার সুমন
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান দাবি করেছেন। এ সময় তিনি হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন।
রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে এ নিয়ে এক আবেদন জমা দেন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে আবেদন করেছি। সবাইকে আল্লাহ বাঁচাইছে, ‘বেনজীর সাহেব বেশিদিন সময় পাননি। আর কিছুদিন সময় পেলে গোপালগঞ্জ কিনে নিতেন। পুলিশে যারা অসৎ হবেন বেনজীর সাহেবকে আদর্শ ধরে নেবেন।’
দুদক চেয়ারম্যান বরাবর করা আবেদনে বলা হয়, ৩৪ বছর পর ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর বেনজীর আহমেদ অবসরে যান। অবসরের পর বেনজীর আহমেদ চাকরিকালীন স্ত্রী ও মেয়ের নামে অনেক সম্পদ গড়েছেন। যা তার জ্ঞাত-আয়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
আবেদনে আরও বলা হয়, বেনজীর ও তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ এবং কন্যাসন্তান তাদের বৈধ আয়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে বেনজীর তার পদের অপব্যবহার করে উল্লিখিত সম্পত্তি অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে অর্জন করেছেন। আবেদনে তিনি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, কন্যা ফারহিন রিশতা বিন্তে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের অবৈধ সম্পদ বিষয়ে তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করছি।
পরে সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার সুমন বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আসেছে। এটার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো ইনকোয়ারির ব্যবস্থা না দেখে আমি দুদকের দ্বারস্থ হয়েছি।
দুদক আমলে না নিলে হাইকোর্ট আছে মন্তব্য করে সুমন বলেন, সাবেক আইজিপির এতো সম্পদ দেখে সৎ পুলিশ অফিসার খুব বেশি ফ্রাস্ট্রেটেড হবেন। সৎ নাগরিকদের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এটা যদি সত্য হয়, যারা অসৎ আছে তারা প্রতিযোগিতায় নামবে, আমরা সবাই বেনজির হতে চাই। এর জন্য মনে হয়েছে এটা দেশের জন্য ভয়ানক বিষয়। এটা ইনকোয়ারি হওয়া দরকার।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোড করেন ২০ এপ্রিল। ভিডিওতে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করে বলেন, এসবের দালিলিক প্রমাণ দিতে পারলে প্রমাণদাতাকে সেই সম্পদ বিনামূল্যে দিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
‘আব্বা বাহিনী’র আফতাবকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম ওরফে রাসেল হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ‘আব্বা বাহিনী’র অন্যতম নিয়ন্ত্রক আফতাব উদ্দিন ওরফে রাব্বির জামিন স্থগিত করে তাকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
রোববার (২১ এপ্রিল) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
গত ২১ মার্চ হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন আফতাব। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
আফতাব উদ্দিন ওরফে রাব্বি । ছবি : সংগৃহীত
গত ১৭ জানুয়ারি দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আফতাবসহ ১২ জনের গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন।
গ্রেপ্তার বাকি ১১ জন হলেন- আলমগীর হোসেন ওরফে ঠান্ডু (৩৯), মো. আমির হোসেন (৩৮), মো. রনি (৩৫), মো. শিপন (৩১), মো. রতন শেখ (২৮), অনিক হাসান হিরা (৩০), রাজিব আহমেদ (৩৫), মো. সজিব (৩৬), ফিরোজ (৩১), মো. মাহফুজুর রহমান (৩৬) ও দেলোয়ার হোসেন দেলু (৩৭)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত ১০ জানুয়ারি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেলঘাট পারভিন টাওয়ারের নিচে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আফতাব উদ্দিন রাব্বির অফিসে রাসেল নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। পরে আফতাব ও তার লোকজন আত্মগোপন করেন। পরে নিহত রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নামে থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ছয় সহযোগীসহ মামলার প্রধান আসামি আব্বা বাহিনীর প্রধান আফতাবকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে আরও ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, রাসেল ও আব্বা বাহিনীর প্রধান আফতাব উদ্দিন রাব্বি ঘনিষ্ঠ বন্ধু। চাঁদার টাকা ভাগাভাগি ও লেনদেনকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে আফতাবের অফিসে ডেকে নিয়ে আফতাব ও তার সহযোগীরা রাসেলের ওপর রাতভর নির্যাতন চালান। পরদিন সকালে স্বজনরা রাসেলকে সেখান থেকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর আফতাবের অফিসে রাসেলকে নির্যাতনের একাধিক ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
শাহজাদপুরে নিরাপত্তাকর্মী খুন / ইউটিউব দেখে ব্যাংক ডাকাতি শেখেন আরিফুল
রাজধানীর গুলশানের শাহজাদপুরে মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী হাসান মাহমুদকে হত্যার ঘটনায় আরিফুল ইসলাম (২৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাকে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে জিজ্ঞাসাবাদে।
এ নিয়ে সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিবৃতি দেন ডিবিপ্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এটিএম বুথ থেকে টাকা লুট করার পরিকল্পনা করার আগে ইউটিউব দেখে ব্যাংক ডাকাতি শেখেন আরিফুল। এরপর সেই কাজে নামতে হাতুড়ি ও শাবল কেনেন গুলিস্তানের স্বাধীন বাংলা মার্কেট থেকে। পরে গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি কেনেন তিনি। আরিফুলের চিন্তা ছিল, লোকজনের আনাগোনা কম এমন কোনো এলাকার ব্যাংকের বুথকে তিনি টাকা লুটের স্থান হিসেবে বেছে নেবেন। সেই মোতাবেক শাহজাদপুরের মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথকে টার্গেট করেন তিনি। ঘটনার আগে রেকিও করে আসেন সেখানে। এরপর ঘটনার আগে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সেই এলাকায় অবস্থান করেন। এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে ঢুকে পড়েন বুথে। কিন্তু ওই সময় নিরাপত্তাকর্মী হাসান মাহমুদ বাধা দিতে গেলে আরিফুল তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেন এবং পালিয়ে যান।
এদিকে গ্রেপ্তার আরিফুলের দাবি, তিনি আসবাবপত্র বিক্রির ব্যবসা করতেন। পরে পাথর বিক্রির ব্যবসা শুরু করলে লোকসানের সম্মুখীন হন ও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ওই ঋণ শোধ করতে তিনি নিজের কিডনি বিক্রিরও চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে ঠিক করেন ব্যাংক ডাকাতি করে ঋণের টাকা শোধ করবেন। সেই কারণে সেদিন তিনি শাহজাদপুরে ব্যাংকের এটিএম বুথ লুট করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি নিরাপত্তাকর্মী দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করেন।
বেনজীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাবেক আইজিপির দুর্নীতি অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে সংস্থাটির উপপরিচালক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দুদকের একটি সূত্র।
এর আগে বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাউদ্দিন রিগ্যান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিটটি দায়ের করেন। দুদক চেয়ারম্যান, সচিবসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে তাতে। রিটে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে।
এর আগে রোববার (২১ এপ্রিল) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদ তার স্ত্রী ও কন্যাদের নামে অঢেল সম্পত্তি অর্জন করেছেন, যা তার আয়ের বিচারে অভাবনীয়।
চিঠিতে সাবেক আইজিপির দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত দাবি করেন ব্যারিস্টার সুমন। পাশাপাশি দুদক কোনো ব্যবস্থা না নিলে, উচ্চ আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ঢাকায় বেনজীরের জন্ম আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে নতুন করে আলোচনায় উঠে আসেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদে। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীরের অঢেল সম্পদের মধ্যে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে তার বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।
অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।