রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছে ওআইসির প্রতিনিধি দল
আজ বুধবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সংসদীয় প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে আলজেরিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, মরক্কো, সুদান, তুরস্কের সংসদ সদস্যরা রয়েছেন।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম রোহিঙ্গা সংকটে দৃঢ় ভূমিকা নিতে সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গছে, ওআইসির সংসদীয় ইউনিয়নের ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করেছেন। বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ওআইসি সংসদীয় ইউনিয়নকে আরও দৃঢ় ভূমিকা নেয়ার অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন :
- শাহজালাল বিমানবন্দরে ৩ কোটি টাকার বিদেশি সিগারেট জব্দ
- ‘মাদক সম্রাট’ পৌর কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে ইয়াবা-অস্ত্র উদ্ধার
পি
মন্তব্য করুন
জিম্মি জাহাজের নাবিকদের জন্য ছাগল-দুম্বা আনছে জলদস্যুরা
আঠারো দিন ধরে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র নাবিকদের জন্য তীর থেকে ছাগল ও দুম্বা আনছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ফলে তারা খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না। তবে জাহাজে বিশুদ্ধ পানি কমে যাওয়ায়, সেটি নিয়ে তারা কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
নাবিকদের বরাতে জাহাজটির মালিকপক্ষ চট্টগ্রামের কবির গ্রুপ ও সংশ্লিষ্টরা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, জলদস্যুরা কোনো জাহাজ জিম্মি করলে সাধারণত তারাই খাবার সরবরাহ করে থাকে। তবে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে রেশনিং করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।
জিম্মি জাহাজের নাবিকদের থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে নাবিকদের সংগঠনের একজন নেতা বলেন, খাবার নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা নেই। কারণ, জলদস্যুরা জাহাজে ছাগল ও দুম্বা আনছে। তবে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে। কারণ, জলদস্যুরা জাহাজে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে জাহাজে যা বিশুদ্ধ পানি আছে, তা রেশনিং করে চলতে হচ্ছে। সপ্তাহে দুই দিন এক ঘণ্টা করে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছেন নাবিকেরা।
জাহাজের মালিকপক্ষ চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, আশা করি খাবার নিয়ে সমস্যা হবে না। তবে আমরা যত দ্রুত সম্ভব চেষ্টা করছি জাহাজসহ নাবিকদের মুক্ত করার। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রয়েছে।
ট্রেনের টিকিট : একদিনে গ্রাহকের ৪০ কোটি টাকা লোকসান
আগামী ১০ এপ্রিলকে ঈদের দিন ধরে গত ২৪ মার্চ থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ছয় দিনের মধ্যে শুক্রবার (২৯ মার্চ) রেলের ওয়েবসাইট অথবা অ্যাপে সর্বোচ্চ হিট করেছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। এদিন ঢাকা থেকে ৩৩ হাজার ৫০০টি ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। টিকিট বিক্রির প্রথম ৩০ মিনিটেই অনলাইন অথবা অ্যাপে টিকিট কাটার চেষ্টায় দুই কোটি ৭২ লাখ বার হিট করেছেন গ্রাহকরা। আর সারাদিনে তা চার কোটির বেশি বার। এতে গ্রাহকদের অন্তত ৪০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার প্রতি গ্রাহক টিকিট কাটতে গিয়ে ন্যূনতম ১০ টাকা খরচ করেছেন। তবুও ৯৯ শতাংশ গ্রাহক টিকিট পাননি। সেই হিসেবে এদিন টিকিট কাটতে যেয়ে গ্রাহকদের অন্তত ৪০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। যদিও গ্রাহকদের দাবি প্রতিবার টিকিট কাটার চেষ্টায় ২০ টাকা করে ৮০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
তবে এ সময় গড়ে প্রতি টিকিট ৫০০ টাকা ধরে টিকিট বিক্রি করে রেলওয়ের আয় মাত্র ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে যে ১০ হাজার গ্রাহক সাড়ে ৩৩ হাজার টিকিট নিতে সক্ষম হয়েছেন তাদেরও টিকিটপ্রতি অনলাইন সার্ভিস চার্জ বাবদ অতিরিক্ত ২০ টাকা খরচ হয়েছে।
এদিন সকাল ৮টায় পশ্চিমাঞ্চলের মোট ১৫ হাজার ৮৯০টি টিকিট ছাড়া হয়। এর মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যায় ৯৫ শতাংশ টিকিট। এদিকে দুপুর ২টায় ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিটসহ ১৬ হাজার ৬৯৬টি টিকিট ছাড়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে। মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে এসি চেয়ার, কেবিন, নন-এসি চেয়ার ও এসি-চেয়ারের টিকিটও শেষ হয়ে যায়। তার পরও লাখো মানুষ অনলাইনে টিকিটের জন্য অ্যাপে প্রবেশ করেন।
জনগণের টাকা লোকসান এবং সরকারি আয় কমার কারণ হিসেবে টিকিট বিক্রির পুরো বিষয়টি বেসরকারি খাতে দেওয়াকে দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের এত উন্নয়ন ও এত সক্ষমতা থাকার পরও টিকিট বিক্রয়ের বিষয়টি বেসরকারি খাতকে দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজস্ব আয় ব্যক্তি পকেটে চলে যাচ্ছে, গ্রাহকেরও লোকসান হচ্ছে।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, টিকিট বিক্রয়ের স্থান থেকে শুরু করে যাবতীয় সবকিছুই রেলের, সরকার চাইলেই টিকিট বিক্রয়ের পুরো বিষয়টা রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারে।
ডিজেল ও কেরোসিনের নতুন দাম নির্ধারণ
আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা ২৫ পয়সা কমিয়েছে সরকার। নতুন দাম অনুসারে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন বিক্রি হবে ১০৬ টাকায়। আগামীকাল ১ এপ্রিল থেকে এই মূল্য কার্যকর হবে।
তবে অকটেন ও পেট্রোলের দাম আগের মতোই রয়েছে। সে অনুসারে লিটারপ্রতি অকটেন ১২৬ টাকা আর পেট্রোল ১২২ টাকায় বিক্রি হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় রোববার (৩১ মার্চ) এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানায়। জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ নির্দেশিকার আলোকে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ মার্চ প্রথম প্রাইসিং ফর্মুলা অনুসারে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছিল।
ওই সময়ে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১০৯ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা, অকটেন ১৩০ টাকা থেকে ১২৬ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১২২ নির্ধারণ করা হয়। তখন লিটারপ্রতি ডিজেল ও কেরোসিনে ৭৫ পয়সা, অকটেনে ৪ টাকা ও পেট্রোলে ৩ টাকা কমানো হয়েছিল।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, তুলনামূলক চিত্রে দেখা যায় প্রতিবেশি দেশ ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটার প্রতি ৯০ দশমিক ৭৬ রুপি বা ১৩০ টাকা ৬৯ পয়সা (১ রুপি=১.৪৪ টাকা ধরে) এবং পেট্রোল ১০৯ দশমিক ৯৪ রুপি বা ১৫৮ টাকা ৩১ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে, যা বাংলাদেশ থেকে বেশি।
‘প্রয়োজনে ফেসবুক-ইউটিউব বন্ধ করে দেওয়া হবে’
গুজব প্রতিরোধ ও সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে ফেসবুক ও ইউটিউবকে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে প্রয়োজনে এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
রোববার (৩১ মার্চ) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে এ তথ্য জানান কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ফেসবুক, ইউটিউবের অফিস না থাকায় তারা আমাদের সুপারিশ ও কথা শোনে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় আইনের যে বিধানগুলো রয়েছে, কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। অথচ তারা আমাদের অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাদের এই উদাসীনতা আমরা সবার সামনে তুলে ধরবো। প্রয়োজনে এগুলো কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে তার আগে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাকে জানাবো যে, আমাদের অভিযোগ যথাযথভাবে আমলে না নিয়ে তারা (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) সাইবার ক্রাইম, গুজব অব্যাহত রাখছে এবং তাদের পক্ষ থেকে এসব প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ নেই।
মোজাম্মেল হক বলেন, প্রথমে আমাদের অভিযোগগুলো আমলে নিতে তাদের বারবার বলা হবে। দরকার হলে আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়েও বলবো। যেন বিশ্ববাসীর কাছে মনে না হয়, এখানে কোনো মৌলিক অধিকার ব্যাহত হচ্ছে।
এ সময় উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে পর্যাপ্ত সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে বলা হয়েছে বলেও জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী।
সভায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা বুধবার
এপ্রিল মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বাড়ছে না কমছে, তা জানা যাবে আগামী বুধবার (৩ এপ্রিল)। এক মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হবে এদিন।
সোমবার (১ এপ্রিল) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সচিব ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি আরামকো ঘোষিত এপ্রিল মাসের সৌদি সিপি অনুযায়ী চলতি মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপিজির মূল্য সমন্বয় সম্পর্কে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের নির্দেশনা বুধবার দুপুর ২টায় ঘোষণা করা হবে।
সবশেষ গত ৩ মার্চ টানা অষ্টম মাসের মতো ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজির দাম বাড়ানো হয়। গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৮ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ১২ কেজির সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় ৪১ টাকা। আর গত ২ জানুয়ারি ২৯ টাকা বাড়িয়ে এলপিজির ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার ৪৩৩ টাকা ।
সদ্য বিদায়ী মার্চে অটোগ্যাসের দামও বাড়ানো হয়। ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬৮ টাকা ৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র / দুটি হাতুড়ির দাম ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা
কক্সবাজারের মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি করা জার্মানির তৈরি দুটি হাতুড়ির দাম দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা। পাশাপাশি দুটি পাইপ কাটারের দাম দেখানো হয়েছে ৯২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
এমন অস্বাভাবিক দাম দেখে বিভ্রান্ত হয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চালানটি আটকে দেয়। পরে সিপিজিসিবিএল ও পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের কাছে ব্যাখ্যা চায়। কাস্টমস সূত্র জানায়, শুধু এই দুটি পণ্য নয়, এই চালানের ১৯টি পণ্যই অযৌক্তিক উচ্চমূল্যে আমদানি করা হয়েছে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গত ৯ জানুয়ারি ৩৪৪ দশমিক ৫ কেজি ওজনের একটি ছোট চালান আমদানি করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)।
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আনা এ চালানটির আমদানি মূল্য দেখানো হয় ২ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা বা ২ লাখ ৫০ হাজার ৮৬৩ মার্কিন ডলার।
চালানটিতে থাকা অন্যান্য টুলসের মধ্যে রয়েছে টুলবক্স, মাঙ্কি প্লায়ার, সেট মেকানিক্যাল প্লায়ার, চিসেল অ্যান্ড স্পান্সার, স্প্যানার এবং কার ফিটার সেট। জাপানের সুমিটোমো করপোরেশনের পক্ষ থেকে কেএস টুলস ওয়ার্কজেউজ এসব পণ্য সরবরাহ করে।
এ চালানে যেসব পণ্য আমদানি করা পণ্য পাওয়ার প্ল্যান্টে সরাসরি ব্যবহার করার জন্য নয়। এসব হ্যান্ড টুলস অবাধে আমদানিযোগ্য ও সব ধরনের নির্মাণ ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ব্যবহার হয়।
একই ধরনের পণ্য আমদানি তথ্যের সঙ্গে তুলনা করলে সিপিজিসিবিএলের আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক। চট্টগ্রাম কাস্টমসের আমদানির ডেটাবেইজ অনুসারে, গড় শুল্কায়ন মূল্যের তুলনায় এসব পণ্যের আমদানি ব্যয় অন্তত ৫ গুণ থেকে ১৮ হাজার ৫৪৫ গুণ বেশি।
এনবিআরের নথিতে এসব পণ্যের আমদানি ব্যয় এনবিআরের সার্ভারের (আমদানি-রপ্তানি ডেটাবেস) রেকর্ড মূল্যের চেয়ে ৫ থেকে ১৮ হাজার ৫৪৫ গুণ বেশি দেখানো হয়েছে।
জার্মান কোম্পানি কেএস টুলসের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, একই মানের একটি পাইপ কাটারের দাম ৬০ দশমিক ২৭ ইউরো বা প্রায় ৭ হাজার ২৩২ টাকা। সে হিসাবে মূল্য ৬৪২ গুণ বা ৬৪২০০ শতাংশ বেশি দেখানো হয়েছে।
কোম্পানিটির ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী একটি হাতুড়ির দাম ১৩ দশমিক ৯ ইউরো বা ১ হাজার ৬৬৮ টাকা। আমদানি মূল্যে যার দাম ৫৫ গুণ বা ৫৫০০ শতাংশ বেশি দেখানো হয়েছে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাইপ কাটার টুলের দাম ডেটাবেস মূল্যের চেয়ে ১৮ হাজার ৫৪৫ গুণ, পাইপ রেঞ্চ ১ হাজার ৫৩ গুণ, মাঙ্কি প্লায়ারের দাম ৯১২ গুণ, স্ক্রু ড্রাইভারের দাম ৮৩৩ গুণ এবং হাতুড়ির দাম ১১২ গুণ বেশি দেখানো হয়েছে।
এ বিষয় মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কাস্টমস অস্বাভাবিক দাম বললেও স্বাভাবিক দামই ধরা হয়েছে। বিশেষভাবে অর্ডার দিয়ে বানানোর কারণে দাম বেশি মনে হতে পারে।
একটি পাইপ কাটার যন্ত্রের দাম ৪৬ লাখ ৫ হাজার টাকা। এটা অস্বাভাবিক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুটি পাইপ কাটার বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য ‘বিশেষ ধাতু’ ব্যবহার করে তৈরি। ফলে দাম বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক।
সিপিজিসিবিএল তাদের এমন কোনো বিশেষ আদেশ দেখাতে পারেনি যা দেখে মনে হবে এগুলো বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনবিআর ও কাস্টমস কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান বলেন, আমদানিকৃত পণ্যের দাম বিক্রেতার সঙ্গে চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন পিডিবি এবং সিপিজিসিবিএল কর্তৃপক্ষ।
এনবিআরের নথি অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বরে মাতারবাড়ী প্রকল্পের জন্য একটি চালান খালাস করে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানটি। ইথারনেট সুইচ বা নেটওয়ার্ক সুইচ নামেও পরিচিত। যা জার্মান ব্র্যান্ড হিরশম্যানের। কোম্পানির ওয়েবসাইটে ইথারনেট সুইচের দাম ছিল ৪৮৮১ দশমিক ৮৩ ডলার। যদিও পণ্য চালানটি আমদানি করা হয়েছিল ২ লাখ ৫ হাজার ২১৮ ডলার বা ২ কোটি ৩ লাখ টাকায়। যা আমদানি মূল্যের তুলনায় ৪২ গুণ বা ৪২০০ শতাংশ বেশি।
এদিকে কাস্টমস কেন চালানটি ক্লিয়ার সম্পর্কে কাস্টমসের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, পিডিবি, সিপিজিসিবিএল এবং প্রকল্প পরিচালককে ব্যাখ্যার জন্য চিঠি দিয়েছি। উভয় কর্তৃপক্ষই লিখিতভাবে জানিয়েছে যে পণ্যগুলো বিশেষভাবে প্রকল্পের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, যদি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ (সিপিজিসিবিএল এবং পিডিবি) অতিরিক্ত ব্যয়কে ঠিক বলে, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।
সারাহর কিডনি নেওয়া শামীমাও মারা গেলেন
সারাহ ইসলামের মরণোত্তর কিডনি নেওয়া শামীমা আক্তার মারা গেছেন। এর ফলে ‘ব্রেন ডেড’ ওই তরুণীর কিডনি নেওয়া দুই নারীরই মৃত্যু হলো।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) আইসিইউতে শামীমার মৃত্যু হয়। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায়।
শামীমার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল।
তিনি বলেন, শামীমা শেষ ছয় মাস আমাদের আওতার বাইরে ছিলেন। কিছুদিন আগে তার ভাই আমাদের জানান, শামীমার ক্রিয়েটিনিন বেড়েছে, একেবারে শুকিয়ে গেছে। পরে তিন সপ্তাহ আগে তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। শুরুর দিকে কিছুটা উন্নতি হলেও পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কোনো উপায় না দেখে চার দিন আগে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। এরমধ্যে তার সি ভাইরাস ও বিরল নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। আমরা তার ডায়ালাইসিসও শুরু করেছিলাম, কিন্তু উন্নতি হয়নি। সবশেষ আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
গত বছরের ১৯ জানুয়ারি সারাহ ইসলাম নামে ২০ বছরের এক তরুণীকে ব্রেন ডেড ঘোষণা করেন বিএসএমএমইউ চিকিৎসকরা। ওই রাতেই তার কিডনি শামীমা আক্তার এবং হাসিনা নামে দুই নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। সেসময় দেশে প্রথমবারের মতো এই ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্টকে সফল বলে দাবি করেছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এর মাত্র ৯ মাস পর অক্টোবরে হাসিনা মারা যান। তবে শামীমা আক্তার বেঁচে ছিলেন। এখন তিনিও না ফেরার দেশে চলে গেলেন।
অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, প্রথমজন ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গেছেন। এবার দ্বিতীয়জনও চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের।