হিমঘরে রাখা মৃত শিশুর গাল ছিড়ে খেল ইঁদুর
মারা যাওয়ার পরই সোহানের মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের হিমঘরে রাখা হয়। শিশুর গলা থেকে পা পর্যন্ত ব্যান্ডেজ ছিল। মুখমণ্ডলে কোনো আঁচড় পর্যন্ত ছিল না। কিন্তু শিশুটির মরদেহ মর্গের হিমঘরে রাখার চার ঘণ্টা পর দেখা যায় বাম গালের অনেক অংশে ক্ষত। সেখান থেকে ঝরছে রক্ত। দেখে মনে হয় বেজি বা ইঁদুর ওই অংশটি কামড়ে খেয়েছে।
গেল শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে।
সোহানের পরিবার জানায়, গরম ডাল গায়ে পরে দগ্ধ হয়ে ২৫ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয় ১৮ মাস বয়সী শিশু সোহান হাওলাদার। শিশুটির শরীরের ১৬ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে ৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ৩ মে সকাল সাড়ে ৯টায় বার্ন ইউনিটের আইসিইউর পাঁচ নম্বর বেডে মারা যায় সোহান। এরপর তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যেতে চাইলে চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত ছাড়া ছাড়পত্র দেয়নি। কিন্তু তারা ময়নাতদন্ত করবেন না বলে জানান চিকিৎসকদের। এ জন্য তাদেরকে স্থানীয় গুলশান থানা থেকে ময়নাতদন্ত না করার অনুমতিপত্র আনার জন্য পাঠান। দুপুর ১২টার দিকে তাদের শিশুর মরদেহ সুরক্ষিত রাখতে ঢামেক কর্তৃপক্ষ জরুরি বিভাগের মর্গের হিমঘরে রাখা হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে গুলশান থানা উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আলমসহ নিহতের স্বজনরা যখন হিমঘরের ফ্রিজ খোলেন, তখন দেখতে পান শিশুর মুখের বাম পাশের মাংস নেই। সেই স্থানে তাজা রক্ত ঝরছে। এটা দেখে তারা হতভম্ব হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে মর্গের সংশ্লিষ্টদের কাছে বিষয়টি তারা জানতে চাইলে তাদেরকে জানানো হয়, ইঁদুর অথবা বেজি শিশুটির মাংস খেয়ে ফেলেছে। হিমঘরের ফ্রিজের ভেতর এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় তাদেরকে।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট
--------------------------------------------------------
শিশু সোহানের বাবার নাম সোহাগ হাওলাদার। গুলশানের নর্দায় একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। সোহাগের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া এলাকায়। তিনি পেশায় পাঠাওয়ে রাইড শেয়ারিংয়ের কাজ করেন। স্ত্রীর নাম মীম আক্তার। শিশু সোহান তাদের প্রথম ও একমাত্র সন্তান।
ঘটনা শুনার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন ছুটে আসেন, তিনি শিশুটির স্বজনদের সান্ত্বনা দেন।
হাসপাতালের পরিচালক বলেন, এ ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। এর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।
আরও পড়ুন :
এমসি/জেএইচ
মন্তব্য করুন