কী হচ্ছে ইলিশ ঘিরে?
পহেলা বৈশাখের সঙ্গে পান্তা-ইলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হতেই ব্যবসায়ীরা শহুরে নাগরিকদের কাছে পান্তা-ইলিশকে বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হিসেবে তুলে ধরছেন। বৈশাখে পান্তা-ইলিশের জন্য ‘শহরের কিছু শিক্ষিত নাগরিককে’ দায়ী করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
ভারত সফরের পর গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পহেলা বৈশাখে কেউ ইলিশ খাবেন না। ইলিশ ধরবেন না। খিচুড়ি খাবেন, সব্জি খাবেন, মরিচ পোড়া খাবেন, ডিমভাজি খাবেন।
এখন ইলিশের বড় হবার মৌসুম। তাই জাটকা সংরক্ষণের জন্য ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব নদীতে ইলিশ ধরা, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তা সত্ত্বেও দেশের যেসব নদীতে ইলিশ পাওয়া যায় তা নির্বিচারে ধরা হচ্ছে। উপলক্ষ্য একটাই পহেলা বৈশাখ। এতে যে আধুনিক বাঙালির পান্তার সঙ্গে ইলিশ চাই-ই-চাই।
তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ইলিশ ধরা হচ্ছে না। ইলিশ তার স্বাভাবিক গতিতে বেড়ে চলছে। কঠোর নিরাপত্তায় তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
আবার দেশের কোথাও কোথাও সামুদ্রিক কয়েকটি মাছকে ইলিশ বলে চালিয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা বলেও অভিযোগ উঠেছে। মাছগুলো ইলিশের মতো দেখতে হওয়ায় তা কিনেও নিচ্ছেন ক্রেতারা। দামে কম হওয়ায় স্বাদ ইলিশের মতো না হলেও এগুলো দেদারসে কিনছেন ক্রেতারা। মাঝে মধ্যে ইলিশ ভেবে কিনে প্রতারণারও শিকার হচ্ছেন সাধারণ জনগণ।
সার্বিক দিক বিবেচনায় বাজারে এখন ইলিশ না পাবার-ই কথা। আর যা পাওয়া যাবে তা হবে হিমায়িত বা আমদানি ইলিশ। অথচ তা বিক্রি হচ্ছে কাঁচা ইলিশ বলে। বাজারে সরবরাহকৃত ইলিশের দামও চড়া। বাজারের বেশিরভাগজুড়েই রয়েছে আমদানি করা ইলিশ। যা এসেছে মূলত মিয়ানমার থেকে।
রাজধানীর বাজারে খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায়, ইলিশের দাম আকাশচুম্বী। পাইকারি বাজারে ৪শ’ গ্রাম কম ওজনের ইলিশের দাম নিষেধাজ্ঞার আগে কেজি প্রতি ছিল ৩শ’ টাকা, এখন তা সাড়ে ৪শ’ টাকা। ৮ থেকে ৫শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম কেজি প্রতি ছিল সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, এখন তা ৭৫০ টাকা। ১ কেজি আকারের ইলিশ আগে বিক্রি হয়েছে ১৫শ’ টাকায়, এখন তা হচ্ছে ২৫শ’ টাকায়। আর ২৫শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ এখন বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়।
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগতে পারে ইলিশ ঘিরে কি হচ্ছে ?
ডিএইচ
মন্তব্য করুন