প্রেসিডেন্ট হিসেবে আজ শপথ নেবেন ট্রাম্প
আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেল ৫ টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১১ টায়) তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ট্রাম্পের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটির দায়িত্বে রয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জন রবার্টস।
শপথ গ্রহণ করার পর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন ট্রাম্প । তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তার পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বেশ কয়েকজন সাবেক প্রেসিডেন্টের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে শপথ নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
এপি/জেএইচ
মন্তব্য করুন
নিজের ডেকে আনা পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল বাংলাদেশি তরুণের
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিও। সাহায্য চেয়ে কল করেছিলেন পুলিশকে; ফোনে বলেছিলেন যে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু, পুলিশ আসতেই উল্টে যায় পরিস্থিতি। নিজের ডেকে আনা পুলিশের গুলিতেই প্রাণ যায় ১৯ বছর বয়সী তরুণের।
ঘটনাটি ঘটেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ওজোন পার্কে, ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের অবস্থিত ফ্রান্সিস রোজারিওর বাড়িতে; স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরের দিকে ৯১১ নম্বর থেকে ফোন আসে তাদের কাছে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে উইন রোজারিও নামে ওই তরুণ জানান, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।
এরপর ওজোন পার্কের ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের বাড়িটিতে দুপুর দেড়টার দিকে যায় পুলিশ। বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় উঠে ভেতরে উইন রোজারিওকে দেখতে পায় তারা। এ সময় তাকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ সদস্যরা। এ অবস্থায় ওই তরুণ নিজের হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তাদের দিকে তেড়ে এলে সরাসরি গুলি করা হয় তাকে। পরে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলে উইনকে মৃত ঘোষণা করেন সেখানকার চিকিৎসক।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনলেও পুলিশের দাবি, উইন রোজারিও মাদকাসক্ত এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন। আত্মরক্ষার্তেই গুলি করতে বাধ্য হয়েছেন তাদের সদস্যরা।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের চিফ অব পেট্রোল জন চেল জানান, বাংলাদেশি ওই তরুণ নিজের হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তেড়ে আসছিলেন পুলিশ সদস্যদের দিকে। এ কারণে তাকে গুলি করা হয়েছে।
উইনকে কয়টি গুলি করেছে পুলিশ সেটি এখনও জানা যায়নি। তবে জন চেল জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি শরীরে থাকা ক্যামেরায় রেকর্ড আছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে এবং বিশদভাবে তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিকে নিহত তরুণের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিওর প্রশ্ন, ‘আমার ছেলে নিজেই যেহেতু বলেছে সে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন, তাহলে কেন গুলি করে মারতে হলো তাকে?’
এ ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে।
যুক্তরাষ্ট্রে সেতু দুর্ঘটনা : দুই মরদেহ উদ্ধার
যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ফ্রান্সিস স্কট কি সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় দু’জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেরিল্যান্ড স্টেট পুলিশ দু’জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর জানায়।
তারা হলেন- মেক্সিকোর আলেহান্দ্রো হার্নান্দেজ ফুয়েন্তে, ৩৫, এবং গুয়েতেমালার ডর্লিয়ান রনিয়েল ক্যাস্টিলো ক্যাব্রেরা, ২৬। পানিতে নিমজ্জিত একটি ট্রাকের ভেতর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ভোরে একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড রাজ্যের বাল্টিমোর শহরের ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুটি ভেঙে পড়ে। এতে সেতুতে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়ি পানিতে পড়ে যায়। এসময় আটজন নির্মাণ শ্রমিক নদীতে পড়ে যান। পরে দু’জনকে উদ্ধার করা গেলেও ছয়জনকে নিখোঁজ ঘোষণা করা হয়।
সেতু ভেঙে নদীতে প্রচুর কংক্রিট এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকার কারণে বর্তমানে আর নিরাপদে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না। সোনার স্ক্যান ব্যবহার করে বাকি মরদেহগুলো খোঁজা হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি
বাল্টিমোরে জাহাজের ধাক্কায় সেতু ধসে পড়ার ঘটনায় যা জানা গেল
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোরে দুদিন আগেই জাহাজের ধাক্কায় ভেঙে পড়ে ১.৬ মাইল দৈর্ঘ্যের ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতু। প্যাটাপসকো নদীর বুকে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনায় সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখনও নিখোঁজ আছেন চারজন। সেতু ভেঙে ঘটনাস্থলে প্রচুর কংক্রিট এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকার কারণে বর্তমানে আর নিরাপদে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না। খবর রয়টার্সের।
স্থানীয় সময় বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেরিল্যান্ড স্টেট পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো মেক্সিকোর আলেহান্দ্রো হার্নান্দেজ ফুয়েন্তে ও এবং গুয়েতেমালার ডর্লিয়ান রনিয়েল ক্যাস্টিলো ক্যাব্রেরা নামে দুই ব্যক্তির। মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয় ডুবে থাকা একটি ট্রাকের ভেতর থেকে।
এদিকে সেতু ধসের এ ঘটনায় বাকি চার নিখোঁজ ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড। এরই মধ্যে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটিকে ধাক্কা দেয় শ্রীলংকাগামী সিঙ্গাপুরের একটি কার্গো জাহাজ। এতে সেতুটির বড় একটি অংশ ধসে পড়লে তাতে থাকা কয়েকটি যানবাহনও নদীতে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজটির নাম দালি। স্থানীয় সময় রাত ১টায় যুক্তরাষ্ট্রের পাটাপসকো নদী থেকে শ্রীলংকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে সেটি। জাহাজটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ভারতীয় নাবিকরা। ১টা ২৪ মিনিটে জাহাজটির বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দেয়। এর পরপরই সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে জাহাজটি।
এর ঠিক তিন মিনিট পর ১টা ২৭ মিনিটে সেতুর একটি পিলারে আঘাত করে ১৫ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে চলা জাহাজটি। আর সঙ্গে সঙ্গেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে সেতুটি।
এদিকে সেতুটিতে কোনো কাঠামোগত সমস্যা ছিল না বলে জানিয়েছেন মেরিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মুর। এরপরও কীভাবে জাহাজের ধাক্কায় এমন বড় একটা সেতু হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রকৌশলীরা জানান, সেতুটি ধাতু দ্বারা নির্মিত ট্রাস পিলারগুলোকে সংযুক্ত করেছে। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পিলারে আঘাত হানে জাহাজটি। মূলত সেতুটির নির্মাণশৈলীর কারণেই সেতুটি এমনভাবে ভেঙে পড়ে।
দুর্ঘটনা কবলিত ১.৬ মাইল দৈর্ঘ্যের ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। সেতুটির নামকরণের পেছনে আছে একটি ইতিহাস।
১৮১৪ সালের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে যায় যুক্তরাজ্য। সে সময় এই যুদ্ধের সাক্ষী হয়েছিলেন আমেরিকার জাতীয় সংগীত ‘স্টার স্প্যাংগল্ড ব্যানার’ এর রচয়িতা ফ্রান্সিস স্কট কি। এরপর তার নামে ১৯৭৭ সালে প্যাটাপসকো নদীর ওপর নির্মিত হয় সেতুটি।
আমেরিকার বাল্টিমোর হারবার অতিক্রম করার তিনটি রাস্তার মধ্যে ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুটি অন্যতম। বাল্টিমোর বন্দরের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। প্রতিদিন গড়ে ৩১০০০ যানবাহন চলাচল করত সেতুটি দিয়ে।
নাবালকেরা সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যানটিস এই বিলে সই করেছেন। ২০২৫-এর ১ জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হবে। সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিকমাধ্যম নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে আমেরিকায়। সম্প্রতি বাইডেন সরকার সেখানে টিকটক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে।
তারই মধ্যে ফ্লোরিডার গভর্নর সোমবার জানিয়ে দিলেন, নাবালকেরা যাতে সামাজিকমাধ্যম আর ব্যবহার করতে না পারে, তা নিয়ে একটি আইনে তিনি সই করেছেন। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হবে। ১৩ বছর না হলে আর সামাজিকমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না।
আইনে বলা হয়েছে, ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করা যাবে না। ১৪ এবং ১৫ বছরের বালক-বালিকারা অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবে, কিন্তু তার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি নিতে হবে।
ফ্লোরিডার স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, সামাজিকমাধ্যমের এই যুগে এই আইন বাবা-মাকে বাচ্চা বড় করতে সাহায্য করবে। বস্তুত, অনেকদিন ধরেই ফ্লোরিডায় এই বিলটি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। রাজ্যের স্পিকার পল রেনার চেয়েছিলেন, ১৬ বছরের নিচে কোনো নাবালক সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না। সেই প্রস্তাব খারিজ হলেও তার কাছাকাছি একটি প্রস্তাব শেষপর্যন্ত আইনের চেহারা পেয়েছে।
এদিন রেনার বলেছেন, সামাজিকমাধ্যম ভরে আছে পেডোফিল এবং পাচারকারীতে। তারা সামাজিকমাধ্যমকে ব্যবহার করে নাবালকদের উত্তেজিত করে এবং অন্ধকার জগতের দিকে টেনে নিয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, তার মতে, সামাজিকমাধ্যম বাড়ন্ত শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এটা এক ধরনের নেশা তৈরি করে, যা বাচ্চাদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। এই বিলটি নিয়ে বিতর্কের সময় দুইটি বিষয় সামনে এসেছিল। একদিকে শিশু-সুরক্ষা, অন্যদিকে বাকস্বাধীনতা। সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারের অধিকার এভাবে ছিনিয়ে নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত বলা হয়েছে, শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাকেই সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে।
৯০ বছর ধরে সংরক্ষিত বইয়ের মানব চামড়ার মলাট সরিয়ে নিলো হার্ভার্ড
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত ছিল মানব চামড়ায় বাঁধানো একটি বই। ৯০ বছর ধরে বইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষণে থাকলেও তার মলাট যে মানুষের চামড়ায় তৈরি, তা নিশ্চিত হওয়া যায় ২০১৪ সালে। তারপরও এক দশক এ অবস্থাতেই বইটি নিজেদের সংরক্ষণে রাখলেও এবার সেই মলাট সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ‘ডেস্টিনিজ অব দ্য সোল’ নামে বইটি থেকে মানব চামড়ায় তৈরি মলাটটি অপসারণ করা হয়েছে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
হার্ভার্ড জানিয়েছে, চামড়াটি অপসারণ করা হয়েছে এবং ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তার শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে।
জানা গেছে, ১৮৮০ সালে লেখা হয় এই বইটি। ‘দেস দেসতিনেস দে লামে’ শিরোনামে আত্মা ও মৃত্যুপরবর্তী জীবন নিয়ে লেখা এই বইটির লেখক আর্সেন হোসায়ের। পরে বইটি নিজের চিকিৎসক বন্ধু ডা. লুডোভিচ বোল্যান্ডকে দেন লেখক। বইপ্রেমী ওই চিকিৎসক পরবর্তীতে এক অপরিচিত মানসিক বিকারগ্রস্ত নারীর চামড়া দিয়ে বাঁধাই করেন বইটি। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছিল ওই নারীর।
১৯৩৪ সাল থেকে বইটি স্থান পায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হাফটন লাইব্রেরিতে। এরপর একটা পর্যায়ে বইটির মলাট নিয়ে সন্দেহ হওয়ার পর ব্যাপক অনুসন্ধান চালান বিজ্ঞানী ও পর্যবেক্ষকরা। অবশেষে ২০১৪ সালে এসে সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সক্ষম হন গবেষকরা। বইটির মলাটে মানুষেরই চামড়া ব্যবহার করা হয়েছে বলে শতভাগ নিশ্চিত হন তারা।
এরপর এক দশক ধরে বইটি মানব চামড়ার মলাটেই সংরক্ষিত থাকলেও দুদিন আগে সেই মলাট সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। অনেক বিবেচনা ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
অজ্ঞাত ওই নারীর এই দেহাবশেষের সম্মানজনক সৎকারের পাশাপাশি এখন ওই নারীর জীবন নিয়েও গবেষণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাফটন লাইব্রেরি।
অবশ্য কেন মানুষের চামড়া দিয়ে বই বাঁধাইয়ের মতো ‘উদ্ভট’ কাজটি করেছিলেন ওই ব্যাখ্যাও বইয়ের ভেতর একটি চিরকুটে দিয়ে গিয়েছিলেন ডা. বোল্যান্ড। চিরকুটে ওই চিকিৎসক লিখেছিলেন, “মানব আত্মা নিয়ে লেখা একটি বই অবশ্যই মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধাই হওয়ার দাবি রাখে।”
আজকাল মানুষের চামড়া দিয়ে বই মলাট করাকে উদ্ভট বা ঘৃণ্য কাজ হিসেবে গণ্য করা হলেও এক সময় অবশ্য এর প্রচলন ছিল।
বোল্যান্ড লিখেছিলেন, ষোড়শ শতাব্দি থেকে ‘এনথ্রোপোডার্মিক’ শব্দটি বেশ প্রচলিত, যার অর্থ হচ্ছে মানুষের চামড়া দিয়ে বইয়ের মলাট করা। ওই শতকে এর প্রচলন ছিল।
তখন কেউ অপরাধ করলে তার চামড়ায় তা লিখে দেওয়া হতো। অনেক সময় কেউ কেউ মরে যাওয়ার পর তার চামড়া দিয়ে বইয়ের মলাট বানিয়ে তাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের অনুরোধও করে যেতেন।
একই নোটে তার সংগ্রহে থাকা আরেকটি বই ‘সাভিয়েরিন পাইনাস’ও মানুষের চামড়ায় বাঁধাই করা বলে নিজের লেখা চিরকুটে উল্লেখ করে যান বোল্যান্ড। বইটি বর্তমানে লন্ডনের ‘ওয়েলকাম’ লাইব্রেরিতে আছে বলে জানা গেছে।
গাজা ও রাশিয়ায় পারমাণবিক বোমা ফেলার আহ্বান মার্কিন কংগ্রেসম্যানের
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ও রাশিয়ায় পারমাণবিক বোমা ফেলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিরোশিমা ও নাগাসাকির মতো অবস্থা তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন টিম ওয়ালবার্গ নামে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির এক কংগ্রেসম্যান। সম্প্রতি নিজের নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা সভায় এ ধরনের আহ্বান জানান তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিশিগানের রিপ্রেজেন্টেটিভ টিম ওয়ালবার্গ যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েল ও ইউক্রেনের মিত্র রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গাজার অবস্থা নাগাসাকি ও হিরোশিমার মতো হওয়া উচিত। এই সমস্যা দ্রুত শেষ করুন। একই অবস্থা হওয়া উচিত রাশিয়ারও।
এ সময় গাজায় ত্রাণসহায়তা পাঠানোর কঠোর বিরোধিতা করেন ওয়ালবার্গ। তিনি বলেন, ‘গাজায় ত্রাণসহায়তার জন্য আমাদের আর একটি পয়সাও ব্যয় করা উচিত নয়। এই পয়সা উল্টো ইসরায়েলের জন্য ব্যয় করা উচিত। কেননা, পৃথিবীর যেকোনো স্থানে, যেকোনো ইস্যুতে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র।’
উল্লেখ্য, টিম ওয়ালবার্গ নামে রিপাবলিকান পার্টির এই কংগ্রেসম্যান একজন ধর্মযাজক ছিলেন রাজনীতিতে আসার আগে। গণসংযোগকালে তার মুখে উচ্চারিত এই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ছড়িয়ে পড়েছে ইতোমধ্যে।
ওয়ালবার্গের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে প্রগতিশীল রাজনৈতিক মহলও। একজন সাবেক খ্রিষ্টান যাজক হয়ে তিনি কীভাবে এমন মন্তব্য করতে পারেন এই নিয়ে জোর সমালোচনা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র। বিবৃতি দিয়ে কংগ্রেসম্যানের এ বক্তব্যকে ‘গণহত্যার স্পষ্ট আহ্বান’ আখ্যা দিয়েছে কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস (কাইর)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক দাউদ ওয়ালিদ ওই বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সব আমেরিকানের উচিত ওয়ালবার্গের বক্তব্যের নিন্দা করা, যারা মানুষের জীবন এবং আন্তর্জাতিক আইনকে মূল্য দেয়।’
এদিকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসার চেষ্টা করছেন টিম ওয়ালবার্গ। রোববার (৩১ মার্চ) এক বিবৃতিতে মার্কিন এ কংগ্রেসম্যান জানান, তার মন্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে মিডিয়া। তার দাবি, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পক্ষে কথা বলেননি তিনি। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি শুধু ইসরায়েল এবং ইউক্রেনের যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে একটি রূপক ব্যবহার করেছেন।
ওয়ালবার্গ এরপর বলেন, ‘যত দ্রুত ইসরায়েল ও ইউক্রেন হামাস ও রাশিয়াকে পরাজিত করবে, তত বেশি নিরপরাধ মানুষের প্রাণ বাঁচবে।’
নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে জিনপিংকে নিষেধ করলেন বাইডেন
তাইওয়ানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে নিষেধ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) এ খবর জানিয়েছে বিবিসি। সান ফ্রান্সিসকোতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বাইডেন একথা বলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট শি-এর উদ্দেশে বলেন, আমি আশা করছি তাইওয়ানের নির্বাচনে চীন হস্তক্ষেপ করবে না। খুব দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সামরিক যোগাযোগ আবারও শুরু হবে।
বাইডেন বলেন, ভুল-বোঝাবুঝির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই আমরা আবারও সরাসরি যোগাযোগ শুরু করতে যাচ্ছি।
তাইওয়ান ইস্যুতে শি-এর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বাইডেন বলেন, শিয়ের সঙ্গে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তাইওয়ানের সঙ্গে বর্তমানে যে সম্পর্ক রয়েছে তা পরিবর্তনের ইচ্ছা নেই যুক্তরাষ্ট্রের।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজা সংঘাত নিয়েও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা হয়েছে। যেসব অঞ্চলে চীনের কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে চীনের প্রেসিডেন্টকে আবারও স্বৈরশাসক হিসেবে আখ্যায়িত করেন বাইডেন বলেন, দেখুন, তিনি এমন একটি দেশ পরিচালনা করেন যা একটি কমিউনিস্ট দেশ। ওই দেশের সরকারের গঠন আমাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এই অর্থে তিনি একজন স্বৈরশাসক।