রায় শুনে আদালতে বিষপান

নেদারল্যান্ডসের হেগে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে চলছিল বিচারের কার্যক্রম। রায় ঘোষণার সময় এক অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী বিষপান করেন। নিজ মুখে বিষপানের বিষয়টি বলার পর আপিল কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়া হয়।

১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বসনিয়ায় মুসলিমদের উপর অত্যাচার, অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় দেশটির ছয় রাজনীতিক ও সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে অভিযোগে গঠন করা হয়। এ মামলায় ট্রাইব্যুনাল বুধবার তার শেষ রায় দিচ্ছিলেন।

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আদালতের কাঠগড়ায় সাবেক যে ছয়জনকে তোলা হয়েছে তাদের একজন এই অভিযুক্ত স্লোবোদান প্রালিয়াক।

পূর্ব মোস্তারে অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে তাকে বিশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায়ে তার কারাদণ্ড বহাল রাখার ঘোষণা শোনার পর ৭২ বছর বয়সী প্রালিয়াক বিচারককে বলেন, আমি বিষ পান করেছি।

ইয়ুগোশ্লাভ যুদ্ধাপরাধ মামলায় চূড়ান্ত আপিলের শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হয়েছিল এই ছয়জন অভিযুক্তকে।

প্রালিয়াক উঠে দাঁড়ান এবং মুখের কাছে হাত তোলেন, মাথাটা পেছনদিকে এমনভাবে হেলান যাতে মনে হয় তিনি গ্লাস থেকে তরল কিছু পান করছেন।
বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি সঙ্গে সঙ্গে আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে দেন এবং অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়।

বিচারক বলেন, ঠিক আছে, আমরা স্থগিত...আমরা স্থগিত...দয়া করে পর্দা টেনে দিন। যে গ্লাস থেকে তিনি কিছু একটা পান করলেন সেটা কেউ সরাবেন না।

পর্দা টেনে দেয়ার আগে আদালত কক্ষে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়।

প্রালিয়াকের আইনজীবী নাতাশা ফ্যাভু-ইভানোভিচ জানান, আমার মক্কেল বলেছে আজ সকালে সে বিষপান করেছেন।

আদালতের এক কর্মকর্তার বরাতে ডেইলি মেইল জানায়, প্রালিয়াক হাসপাতালে নেয়ার পর প্রালিয়াকের মৃত্যু হয়েছে।

বসনিয় ক্রোয়াট প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রথম সারির সৈন্যদের সাবেক অধিনায়ক প্রালিয়াককে মানবতাবিরোধী অপরাধে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ে বলা হয়, ১৯৯৩ সালে সৈন্যরা প্রোজোর এলাকায় মুসলমানদের যখন ব্যাপক ধরপাকড় করছিল, তখন খবর পেয়েও তিনি তা বন্ধ করার জন্য কোনো উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হন।

এতে আরো বলা হয়, মুসলিমদের হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে এবং পূর্ব মোস্তারে মসজিদ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যদের ওপর হামলা চালানোর পরিকল্পনার খবর জানার পরেও তিনি কোনো রকম ব্যবস্থা নেননি।

ওয়াই/এসজে