• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

যে অসম প্রেমে সত্যিকারের ভালোবাসা

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৫ এপ্রিল ২০১৭, ১৮:২৫

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। কিশোর বয়সে প্রেমে পড়েছিলেন তারই শিক্ষিকা ব্রিজিত থনিও’র। তখন তিনি মাধ্যমিকে পড়তেন। বেশ সাহস নিয়ে ১৭ বছরের কিশোর ম্যাক্রোঁ সেই তিনটি শব্দ বলেই ফেললেন প্রিয় শিক্ষিকাকে। শুনে হেসেছিলেন ৪২ বছরের শিক্ষিকা ব্রিজিত। ভেবেছিলেন এটি তার ছাত্রের কিশোর বয়সের আবেগ। একটু বড় হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে পরিণত বয়সে এসেও বদলায়নি কিশোর ম্যাক্রোঁ। সত্যিই বড় হয়ে বিয়ে করেছেন তার কৈশোরের ভালো লাগা-ভালোবাসার শিক্ষিকাকে।

বর্তমানে ৩৯ বছরের ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সম্ভবত ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। আর সেক্ষেত্রে ফার্স্ট লেডি হবেন তারই সেই শিক্ষিকা ব্রিজিত থনিও যার বয়স এখন ৬৪। এ দম্পতির এই অসম প্রেমের গল্প তুলে ধরেছে সিএনএন।

গেলো রোববার অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়েছেন ১১ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মধ্যপন্থী ম্যাক্রোঁ। ২১ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে পরের অবস্থানে কট্টর ডানপন্থী নেতা মারি লো পেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দু’জনের কেউই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফার ভোটযুদ্ধে নামতে হচ্ছে তাদের। আসছে ৭ মে দ্বিতীয় দফার ভোট হবে।

তবে সবদিক থেকে ইমানুয়েল ম্যাকরনের প্রেসিডেন্ট হবার সম্ভাবনাই খুব বেশি।

ইমানুয়েল-ব্রিজিতের অসম প্রেমকাহিনি নিয়ে ইমানুয়েলের পরিবারে ওই সময় বেশ অশান্তি হয়েছিল। সেসব কথা উঠে এসেছে অ্যান ফোলদার লেখা ‘ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ: আ পারফেক্ট ইয়ং ম্যান’বইতে। সেখানে বলা হয়েছে, ছেলের এ সম্পর্ক মেনে নেননি ইমানুয়েলের মা-বাবা। কারণ, ব্রিজিত তখন বিবাহিত আর তিন সন্তানের জননী। ছেলের বয়স ১৮ না হওয়া পর্যন্ত তার কাছ থেকে দূরে থাকতে বলেছিলেন বাবা। ব্রিজিত কান্নামিশ্রিত কণ্ঠে তাকে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমি আপনাকে কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না।’

তবে কবে এই একতরফা প্রেম দু’জনের হয়ে ওঠে তা স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে ব্রিজিতের বলেন, ‘কেউ কোনোদিন জানবে না, কখন থেকে আমাদের গল্প একটি প্রেমের গল্পে পরিণত হয়েছে। এটা শুধুই আমাদের- আর এটাই আমাদের গোপন রহস্য।’

২৫ বছরের ব্যবধান না মেনে ২০০৭ সালে বিয়ে করেন ইমানুয়েল ও ব্রিজিত। ইমানুয়েলের বয়স তখন ২৯, আর ব্রিজিতের ৫৪। ব্রিজিতের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। তবে তার তিন সন্তানকে মুগ্ধ করতে হয়েছে ইমানুয়েলকে।

ব্রিজিতের বড় মেয়ে অজি বলেন, ‘বিয়ের সিদ্ধান্ত নেবার পর ম্যাক্রোঁ আমাদের বাড়ি আসেন। বলেন- তোমাদের মাকে আমি বিয়ে করতে চাই। এটা বলা খুবই কঠিন ব্যাপার ছিল। আমরা মেনে নেব কিনা সে ঝুঁকি তো ছিলই। তবে তিনি আমাদের না জানিয়ে কিছু করতে চাননি, বরং আমাদের সমর্থন চেয়েছিলেন।’

বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সে নারীর চেয়ে পুরুষ বড়, সমাজের চোখে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু নারী যখন পুরুষের চেয়ে বয়সে বড় হন, তখন সেটা নিয়ে নানা কথা হয়। এ সমস্যায় পড়তে হয়েছে ইমানুয়েল-ব্রিজিত দম্পতিকেও। ফিলিপ বেঁসন নামে এ দম্পতির এক বন্ধু বলেন, বিয়ের পর অনেক বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের; এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদেরও। তবে তারা দমে যাননি। এখনো ভালোবাসা সতেজ এ দম্পতির সংসারজুড়ে।

এপি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh