• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মানহীন লম্বা সেমাই তৈরিতে লাগে না বিএসটিআইয়ের অনুমোদন!

নাজিব ফরায়েজী, আরটিভি

  ০৬ জুন ২০১৭, ১২:০৪

রমজানের ঈদ আসলেই শুরু হয় সেমাই তৈরির হিড়িক। লাচ্ছা সেমাই তৈরিতে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন দরকার হলেও লাগেনা লম্বা সেমাইয়ে। সেই সুযোগ ১৬ আনা কাজে লাগিয়ে মানহীন সেমাই তৈরিতে মেতেছে মুনাফালোভীরা।

তবে বিএসটিআই বলছে দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা সেমাই তৈরির নীতিমালা করা হবে। অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলকও করা হবে। জাতে কেউ মানহীন সেমাই তৈরি করে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে না পারে।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ধুলো-বালিতে ঠাসা ঢাকার কামরাঙ্গিরচরে সোনা মিয়ার লম্বা সেমাই কারখানা। দেখা যায় সেমাই তৈরির পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের জন্য স্তূপ করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে পাশের স্যাঁতস্যাঁতে আরেকটি কক্ষে শুকানো হচ্ছে তৈরি হওয়া এসব সেমাই।

কামরাঙ্গিচরের এই কারখানায় তৈরি হয় শ’ শ’ মন সেমাই। কিন্তু নেই বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমতি। আরটিভির সংবাদ সংগ্রহের খবর পেয়ে ছুটে আসেন কারখানা মালিক। কিছু টাকা দিয়ে চেষ্টা করেন সংবাদ প্রচার বন্ধের।

একই অবস্থা যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল কোনাপাড়ার লাকী সেমাই কারখানার। সেখানে সংবাদ সংগ্রহে গেলে মালিকের ছেলে জানান এটি ভাঙ্গারির কারখানা। ভেতরে কেউ নেই। অথচ একটু অনুসন্ধানের পরই ফুটে ওঠে আসল চিত্র। ভেতরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো হচ্ছে লম্বা সেমাই। ময়লা পানি আর ঘামে ভেজা শরীরে তৈরি খামির দিয়ে সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা।

কারখানার শ্রমিকরা জানান কিভাবে তৈরি করা হয় সেমাই। তারা বলেন, ময়দা পানি দিয়ে খামির বানাই। এরপর সেটা মেশিনে দিয়ে সেমাই তৈরি হয়। এর পর এগুলো শুকিয়ে বাজারজাত করা হয়।

পাশের রুমের নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে তাল মিশ্রি। এসব মিশ্রি বানাতে তালের রসের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে পোকা-মাকড় যুক্ত চিনির রস। এসবের ছবি তুলতে গেলে ক্যামেরা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন কারখানা মালিক। ভেঙ্গে যায় ক্যামেরার একটি অংশ।

ভ্রাম্যমাণ আদালতকে খবর দেয়ার কথা বললে সুর পাল্টে যায়। ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চলে। এমন অনেক কারখানার তৈরি ভেজাল ও মানহীন লম্বা সেমাই মানুষের পেটে গেলেও বিষয়টিকে পাত্তা দেয় না বিএসটিআই।

বিএসটিআই’র পরিচালক প্রকৌশলী এস এম ইসহাক আলী বলেন, লাচ্ছা সেমাইয়ের ক্ষেত্রে আমাদের অনুমোদন নেয়া বাধ্যতা মূলক। কিন্তু দেশিয় লম্বা সেমাই তৈরি হয় কারখানার মালিকের ইচ্ছে মতো। সেই জন্যে এই মুহূর্তে আমরা কোনো পদক্ষেপ নতে পারছি না।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু উৎপাদনই নয়, সরবরাহ-সংরক্ষণ সব ক্ষেত্রে মান ঠিক রাখা জরুরী। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, পণ্য তৈরিতে যে সব উপকরণ ব্যবহার করা হয় সেগুলো সঠিক মানের হতে হবে। যদি তার সঠিক প্রয়োগ না করা হয় তাহলে দূষণ হতে পারে।

শুধু অনুমোদনই নয়, দেশে সব খাদ্য দ্রব্য উৎপাদন ও সংরক্ষণে নিয়ম ঠিক করে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান, এই কর্মকর্তা।

এইচটি/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • এক্সক্লুসিভ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh